ঢাকা:টিপাইমুখ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের যাবতীয় তথ্য সংবলিত নথি বাংলাদেশকে সরবরাহ করেছে ভারত। ঢাকাকে আশ্বস্ত করতেই নয়াদিল্লি এ উদ্যোগ নিয়েছে বলে মঙ্গলবার আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
``বাংলাদেশকে নিশ্চিন্ত করতে নথি তুলে দিল ভারত`` শিরোনামের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার দু’দেশের মধ্যে যৌথ নদী কমিশনের অধীনে টিপাইমুখ সংক্রান্ত বৈঠকে প্রকল্পের ৬ খণ্ডের বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট বা ডিপিআর ঢাকার হাতে তুলে দেওয়া হয়।
পাশাপাশি নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চাইলে বাংলাদেশও এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারে। সে ক্ষেত্রে যৌথ অংশীদারিত্বে প্রকল্পটি তৈরি করা হবে।
টিপাইমুখ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানা বিতর্ক চলছে। ভারতের এই প্রকল্পের ফলে বাংলাদেশে পানি সঙ্কট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই প্রকল্পের জন্য একটি যৌথ উদ্যোগ সংস্থা তৈরির উদ্দেশ্য নিয়ে মণিপুর সরকার, জাতীয় জলবিদ্যুৎ শক্তি সংস্থা বা এনএইচপিসি এবং শতদ্রু জলবিদ্যুৎ নিগম একটি ‘প্রোমোটারস এগ্রিমেন্ট’ সই করে।
ভারত অবশ্য দাবি করে যাচ্ছে, বাংলাদেশের স্বার্থ বিপন্ন হয় এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না। গত বছর এ প্রসঙ্গে ভারত জানায়, টিপাইমুখ প্রকল্প নিয়ে ঢাকার সঙ্গে সব রকম আলোচনা করতে তারা প্রস্তুত।
মঙ্গলবারের বৈঠকেও ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মনমোহন সরকার এমন কিছু করতে চাচ্ছে না যাতে হাসিনা সরকার বিপদে পড়ে। ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের যে অগ্রগতি হাসিনা আসার পর হয়েছে, তা কোনো কারণে বাধাগ্রস্ত হোক, দিল্লি তা চায় না।
টিপাইমুখ সম্পর্কে যে তথ্য বাংলাদেশকে দেওয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, প্রতিবছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ভারত এবং বাংলাদেশ উভয়পক্ষই। টিপাইমুখ প্রকল্পের জন্য প্রস্তাবিত বাঁধ নির্মাণ হলে সেই বন্যার পানি আটকানো সম্ভব হবে।
পাশাপাশি এই প্রকল্পের ফলে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে, তা উভয় দেশই পাবে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সমস্যার একটা সুরাহার পথ দেখাবে টিপাইমুখ। উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিদ্যুৎ প্রকল্পে লগ্নি করতে এর আগেই উৎসাহ দেখিয়েছেন হাসিনা। টিপাইমুখ প্রকল্পে হাসিনা সরকারও যোগ দিতে পারে।
ভারতীয় এক সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ‘২০০৯ সালে বাংলাদেশের একটি সংসদীয় প্রতিনিধি দলকে টিপাইমুখের প্রস্তাবিত প্রকল্প দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। প্রয়োজনে আবারও সরকারি প্রতিনিধিদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে’।
এই প্রকল্পের প্রতিটি পর্যায়েই বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এগোনো হচ্ছে দাবি করে ওই কর্মকর্তা বলেন, “মণিপুরের বাড়তি পানির প্রয়োজন নেই। ফলে বাঁধ দেওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়া, পানির গতিপথ ঘুরিয়ে নিজেদের কাজে লাগানো নয়। তাছাড়া এই নদীর ভৌগোলিক অবস্থান এমনই যে, ভারত চাইলেই পানির গতিপথ বদলাতে পারবে না। ”
বাংলোদেশ সময়: ১৫২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১২
সম্পাদনা: রোকনুল ইসলাম কাফী, নিউজরুম এডিটর; জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর jewel_mazhar@yahoo.com