ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কেমিক্যাল সংকটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জুতা উৎপাদন বন্ধ

ডিস্ট্রিক্টট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৪
কেমিক্যাল সংকটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জুতা উৎপাদন বন্ধ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ঈদ মৌসুমে যেখানে কোটি টাকার বাণিজ্য করার কথা, সেখানে কেমিক্যাল সংকটে বন্ধ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অটোমেশিন নির্ভর পাদুকা কারখানার উৎপাদন। বছরের আট থেকে নয় মাস কারখানাগুলোতে কাজের তেমন চাপ না থাকলেও দুই ঈদের আগে কাজের চাপ বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে পাদুকা কারিগরদের কর্মযজ্ঞ।

ঈদ মৌসুমে অটোমেশিন দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার জোড়া জুতা উৎপাদন হওয়ার কথা। অথচ এমন সময়েও অলস পড়ে আছে কারখানাগুলোর কার্যক্রম। মূলত কেমিক্যাল সংকটের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অটোমেশিন নির্ভর পাদুকা কারখানাগুলোতে এখন এমন হতাশার চিত্র।

ব্যবসায়ীরা জানান, জেলায় ২৬টি অটোমেশিন নির্ভর জুতার কারখানা রয়েছে। যেখানে প্রতিদিন প্রত্যেকটি কারখানায় অন্তত ১০ লাখ টাকার বিভিন্ন ধরনের জুতা তৈরি হয়ে থাকে। বিশেষ করে রমজান এলে বাড়ে তাদের কাজের চাপ। কিন্তু গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কেমিক্যাল সংকটে ধুঁকছে কারখানাগুলো। ইতোমধ্যে অধিকাংশ কারখানার উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। হাতেগোনা যে এক-দুটি কারখানা চলছে সেসবেরও রসদ ফুরিয়ে আসায় ২/৩ দিনের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে উৎপাদন।



এ ব্যাপারে কথা হয় অ্যাক্টটিভ ফুটওয়্যার কারখানার মালিক রাকিব আহমেদের সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমদানিকারকদের কাছ থেকে জুতার সোল তৈরিতে বিশেষ জাতের পিউ কেমিক্যালের সরবরাহ মিলছে না। আমদানি করা কেমিক্যাল চট্টগ্রাম বন্দরে আটকে আছে। বার বার আমদানিকারকদের সঙ্গে যোগযোগ করা হলেও দেব-দিচ্ছিতে আটকে আছে সব। সঠিক সসয়ে কেমিক্যাল না পাওয়াতে আমাদের প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে।

সেভেন স্টার কারখানার মালিক হানিফ মিয়া বলেন, বছরে আট মাস কাজের চাপ না থাকলেও রমজান আসার ঠিক ১৫ দিন আগে থেকে কাজের চাপ বেড়ে যায়। জুতার সব উপকরণ থাকলেও কেমিক্যালের অভাবে জুতা তৈরি করা যাচ্ছে না। এতে আমাদের ব্যবসায়ীদের যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমনি শ্রমিকদেরও দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।

সরেজমিন অটোমেশিন পাদুকা কারখানাগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, কারখানাগুলোতে কর্মচঞ্চলতা নেই। শ্রমিকরা অলস সময় পার করছেন। জুতার সব উপকরণ তৈরি করে রাখলেও কেমিক্যালের বাকি কাজ আটকে আছে।

একাধিক শ্রমিক বলেন, সারা বছর কাজ করে আমরা যা আয় করি, এই তিন মাস কাজ করে তার দ্বিগুণ টাকা পাই। এবারের মৌসুমে আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ। টানা ১৫ দিন কাজ নেই। এখন কারখানার মালিকই চলবে কীভাবে আর আমরাই বা বেতন পাব কোত্থেকে? জুতার পিউ কেমিক্যালের কারণে আমাদের কাজ বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পিউ ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমানউল্লাহ বলেন, ২৬টি অটোমেশিন কারখানায় দুই সপ্তাহ ধরে কেমিক্যালের অভাবে কাজ বন্ধ রয়েছে। এসব কারখানায় প্রায় সাত হাজার শ্রমিক কাজ করেন। তারাও বেকার রয়েছেন। তাদের কোনো কাজ দিতে পারছি না। কবে নাগাদ কেমিক্যালের সরবরাহ মিলবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছি। সংকট সমাধানে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি। দ্রুত কেমিক্যালের ব্যবস্থা করে দিলে সব ব্যবসায়ীরা লোকসানের হাত থেকে বাঁচতে পারবেন।

বাংলাদেশ সসয়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৪
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।