ঢাকা: তিউনিশিয়া, কানাডা, মরক্কো, কাতার এবং বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ৬৮৮ কোটি ৩৫ লাখ ৭৩ হাজার ৪৯৯ টাকার এক লাখ ৬৫ হাজার টন সার কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
এরমধ্যে ২৫ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি, ৪০ হাজার মেট্রিক টন মিউরেট-অব পটাশ এবং ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার এবং ৬০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার রয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় তিউনিশিয়া থেকে ২৫ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এই সার আনবে। এতে মোট ব্যয় হবে ১১৬ কোটি ৫৪ লাখ ৯৩ হাজার ৪৩৭ টাকা। প্রতি মেট্রেক টন টিএসপি সারের মূল্য ৩৯৫.২৫ মার্কিন ডলার।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অপর এক প্রস্তাবে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় কানাডার কানাডিয়ান কমার্শিয়াল কর্পোরেশন থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন মিউরেট-অব পটাশ আমদানির অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি। প্রতি মেট্রিক টন এমওপি সারের দাম ২৭৫.৫০ মার্কিন ডলার হিসাবে এই সার আমদানিতে মোট খরচ হবে ১২৯ কোটি ৯৮ লাখ ৯ হাজার টাকা।
সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কোর ওসিপি থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানির আর একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়। এই প্রস্তাবটিও অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ২২৫ কোটি ৫২ লাখ ৪ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন ডিএপি সারের দাম পড়বে ৪৭৮ মার্কিন ডলার।
সভায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সার কেনার বিষয়ে দুটি প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ দুটি প্রস্তাবও অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এর মধ্যে কাতারের মুনতাজাত থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির একটি প্রস্তাব রয়েছে। এই সার আমদানি করতে খরচ হবে ১১০ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।
এছাড়া কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনা হবে। এই সার কিনতে মোট খরচ হবে ১০৬ কোটি ২ লাখ ২৩ হাজার ৬২ টাকা।
এদিকে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ইউরিয়া সার আমদানি সংক্রান্ত চুক্তি সই করার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দুটি প্রস্তাবই শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে আনা হয়।
জানা গেছে, প্রান্তিক চাষিদের মাঝে ইউরিয়া সারের সাপ্লাইচেইনে নিরবচ্ছিন্নভাবে সারের জোগান বজায় রাখতে জি-টু-জি ভিত্তিতে মুনতাজাত-কাতার থেকে চুক্তির মাধ্যমে ইউরিয়া সার আমদানি করা হচ্ছে। মুনতাজাতের সঙ্গে বিদ্যমান চুক্তির মেয়াদ আগামী ৩০ জুন শেষ হবে। এই চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি।
এজন্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মিনি পিক সিজন, পিক সিজন এবং অফ পিক সিজনে কৃষকের মাঝে নিরবচ্ছিন্ন ইউরিয়া সার সরবরাহের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে মুনতাজাত থেকে ৫ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানি চুক্তি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেটিকেই নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি।
এছাড়া প্রান্তিক চাষিদের মাঝে ইউরিয়া সারের সাপ্লাইচেইনে নিরবচ্ছিন্নভাবে সারের জোগান বজায় রাখতে এবং যেকোনো বিপর্যয়কর পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য জনস্বার্থে জরুরি প্রয়োজনে ২০০৭-০৮ অর্থবছর থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে সৌদি আরবের সাবিক থেকে চুক্তির মাধ্যমে ইউরিয়া সার আমদানি করা হচ্ছে। সাবিকের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ গত ৩১ মে শেষ হয়েছে। আর সাবিকের সঙ্গে আরও এক বছর চুক্তি করার বিষয়েও অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২৪
জিসিজি/এসআইএস