ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ চৈত্র ১৪৩১, ২০ মার্চ ২০২৫, ১৯ রমজান ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

নির্মাণ খাতে শুল্ক-কর কমানোর দাবি

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪২ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২৫
নির্মাণ খাতে শুল্ক-কর কমানোর দাবি

ঢাকা: দেশের ভৌত অবকাঠামোর পাশাপাশি গতি কমেছে বেসরকারি পর্যায়ের নির্মাণকাজে। ফলে ভীষণভাবে ক্ষতির সম্মুখীন এই শিল্প।

নির্মাণশিল্পের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হাউজিং, সিমেন্ট, স্টিল, বালু, সিরামিক, হার্ডওয়্যারসহ শতাধিক ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আহ্বান জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের আগে অংশীজনদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসব বিষয় উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ) ও বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসএমএ) নির্মাণ খাতে এগিয়ে আসতে শুল্ক-কর কমানোর আহ্বান জানায়।

সিমেন্টের মূল উপকরণ ক্লিংকারের কাস্টমস ডিউটি (সিডি) প্রতি মেট্রিক টনে ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে গত বাজেটে ৭০০ টাকা করা হয়েছিল। এতে প্রধান কাঁচামাল আমদানিতে সিডির পরিমাণ দাঁড়ায় আমদানি মূল্যের প্রায় ১৫ শতাংশ। বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ) মনে করে, এর ফলে সিমেন্টের বাজারে ভোক্তাদের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছে এবং নির্মাণ কার্যক্রম গতি হারাচ্ছে।
তাই ক্লিংকারের সিডি ২০০ টাকা করার দাবি সংগঠনটির।

নির্মাণশিল্পের অন্যতম প্রয়োজনীয় উপকরণ স্টিল। দেশে লোহার খনি না থাকায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয় পণ্যটি। বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএমএ) তথ্য অনুযায়ী, সরকারকে রাজস্ব দিয়ে শিল্পকারখানার ৯৫ শতাংশ এবং অবকাঠামো শিল্পের শতভাগ কাঁচামাল আমদানি করে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে খাতটি।

তাই এই খাতের বিকাশে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএসএমএ। এ ছাড়া আমদানি শুল্কহার কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব সংগঠনটির।

বাংলাদেশের প্রযুক্তিনির্ভর ও সম্ভাবনাময় ওষুধশিল্প নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছে। দেশে উৎপাদনের ফলে ওষুধ আমদানির প্রয়োজন না হওয়ায় বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে। কিন্তু জরুরি জীবন রক্ষাকারী পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১২৭.৭২ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপিত আছে।

এই হার কমানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতি। এ ছাড়া অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ২০০ থেকে ৪০০ শতাংশ জরিমানার বিধান সংশোধন, বিএনটিআইয়ের বাধ্যতামূলক পণ্যের তালিকা থেকে অব্যাহতি ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক থেকে অব্যাহতির দাবি জানিয়েছে তারা।

সিগারেট কোম্পানিগুলোর দাবি, দাম বেড়ে যাওয়ায় কমেছে উৎপাদন, বেড়েছে চোরাচালান। লোকসান গুনছে কোম্পানি। এ অবস্থায় নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম ৫ টাকা কমানোর দাবি জানান তাঁরা।

অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (এমটব) তাদের প্রস্তাবে দ্বৈত কর এড়ানো, করপোরেট করহার যৌক্তিক করা, ন্যূনতম কর সমন্বয়, টেলিকম মেশিনারি, ইকুইপমেন্ট ও সফটওয়্যারের জন্য পৃথক এইচএস কোডের দাবি জানায়।

বর্তমানে কার্বনেটেড বেভারেজের ওপর ৩ শতাংশ ন্যূনতম কর আরোপিত আছে, যা কমিয়ে ০.৬ শতাংশ করার আহ্বান খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।

বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীদের দাবি শোনেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। এ সময় তিনি বলেন, ‘ব্যবসার বাধা তৈরি করে এবং খরচ বাড়ায় এমন বিধান সংশোধন করা হবে। কমিয়ে আনা হবে উৎস করের চাপ। আমরা ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে চাই। ’

প্রাক-বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান ছাড়াও আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের নীতি শাখার সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২৫
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।