রাজধানীর বাজারে পেঁয়াজের দাম খানিকটা বেড়েছে। ডিমের দামও কিছুটা উর্ধ্বমুখী।
শুক্রবার (৯ মে) সকালে রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও ফার্মগেট এলাকার বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারগুলোতে দেখা যায়, চিকন চাল ৮০ থেকে ধরনভেদে ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বিআর-২৮ বাজার ও ধরনভেদে ৬২ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা কেজিতে। এর মধ্যে স্বর্ণার কেজি ৫৫ টাকা আর গুটিসহ অন্যান্য মোটা চাল সর্বোচ্চ ৫৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বেশ কিছুদিন ধরেই চাল এ দামে বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর বাজারে পেঁয়াজের কেজি ৬০ থেকে ধরনভেদে ৬৫ টাকা। তবে তুলনামূলক কিছুটা কম মানের পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে। দেশি ছোট্ট রসুনের কেজি ১৪০ টাকা, আমদানি করা বড় রসুনের কেজি ২৪০ টাকা টাকা, আদার কেজি বাজার ও ধরনভেদে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত মিলছে। চিকন মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১২০ টাকা, আমদানি করা মুগডাল ১৪০ টাকা এবং দেশি মুগডাল ১৬০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে।
সবজির মধ্যে বড় বেগুনের কেজি ১০০ টাকা, মাঝারি ধরনের বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বরবটি ৮০ টাকা কেজি, ধুন্ধল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, ঢেড়স ৬০ টাকা কেজি দরে মিলছে। করল্লা বাজারভেদে কেজি ৬০ থকে ৭০ টাকায় কেনা যাচ্ছে। লাউ প্রতি পিস ৭০ থেকে ৮০ টাকা, চাল কুমড়া পিস ৭০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
পটলের কেজি ৫০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ২৫০ গ্রামের ফুলকপি ৬০ টাকা, আলুর কেজি ২০ টাকা, পেঁপে ৮০ টাকা এবং কলার হালি ৪০ থেকে ধরনভেদে ৫০ টাকায় মিলছে বাজারে। লাল শাকের মুঠি ১৫ টাকা, মুলা শাক ৩০ টাকা, লাউ শাক ৩০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা, কলমি লতা ১৫ টাকা, পাট শাক ১৫ টাকা এবং কাঁচা মরিচের কেজি ৮০ টাকায় মিলছে।
বাজারে ডিমের দাম কিছুটা বেড়েছে। প্রতি হালি ডিমের দাম ৪৫ টাকা, ডজন ১৩৫ টাকা। মিরপুর-২ বাজারের ডিম বিক্রেতা আমিরুল বলেন, আজ ডিমের দাম কিছুটা বেশি; কেন বেশি জানি না! মোকামে বাড়তি দাম নিয়েছে, আমিও বেশি দামে বিক্রি করছি।
বাজারগুলোতে মলা ও কাচকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা। পাবদা ৬০০ টাকা, ছোট্ট বেলে ৬০০ টাকা, বড় বেলে ৬০০ টাকা, ট্যাংরা মাছ ৬০০ টাকা, ছোট পাঙ্গাসের কেজি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, এক কেজির চেয়ে বেশি ওজনের পাঙ্গাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশের কেজি ২৫০০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা, ৮০০ গ্রামের বেশি ওজনের ইলিশ ১৫০০ থকে ১৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বড় শোল কেজি ৮৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, টাকি ৬০০ থেকে ধরনভেদে ৮০০ টাকায় মিলছে। তেলাপিয়ার কেজি ২০০ টাকা, দেশি কই ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, ছোট রুই ২৮০, এক কেজির বেশি ওজনের রুই ৩৪০-৩৬০ টাকা, ছোট্ট কাতল ২৬০ টাকা, এক কেজির বেশি ওজনের কাতল ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাগদা চিংড়ি ৮০০ টাকা, গলদা ১০০০ টাকা, রূপচাঁদা ১০০০ টাকা, বড় বোয়াল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বড় আইড় ১০০০ টাকা, এক কেজির চেয়ে বেশি ওজনের চিতল ৭০০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে বাজারে।
শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন। বাজারে শ্রমজীবী মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। কম আয়ের মানুষকে পাঙ্গাস, সিলভার কার্প, তেলাপিয়া, রুই ও কাতলের মাছের দোকান ভিড় করতে দেখা যায়। বড় পাঙ্গাস কেটে ভাগ করে নিচ্ছিলেন অনেকে।
আছিমন আরা এমন একজন। স্বামীর সঙ্গে মিরপুর-১৪ নম্বরে ব্যাটালিয়ান বাজারে এসেছেন। দুজনেরই আজ সাপ্তাহিক ছুটি। স্বামী একটি বড় পাঙ্গাস কেটে নেওয়ার জন্য দরদাম করছেন, আছিমন পাশে দাঁড়িয়ে দেখছেন।
দাম নিয়ে খুশি না হলেও করার কিছু নেই। তাই সাধ্যের মধ্যে মাছ কেনার চেষ্টা আছিয়া দম্পতির। আছিয়া বলেন, ‘আমরা কি বেশি দামের মাছ কিনতে পারি? বেতনের পরপর হলে দামি মাছ বা মাংস কেনা হয়। এখন কম দামেরই মাছ কিনি। ’
এদিকে বাজারে ভোজ্যতেলের লিটার ১৯০ টাকা। বাজারে এখন সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে যথেষ্ট।
আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে মুরগি। কক মুরগির কেজি ২৮০ টাকা, তুলনামূলক ছোট কক ২৬০ টাকা, ব্রয়লার ১৮০ টাকা এবং লেয়ার মুরগির কেজি ৩২০ টাকায় মিলছে।
গরুর মাংস ৭৫০ থেকে বাজারভেদে ৭৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস ১২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ছাগলের মাংস বাজারভেদে ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীতে মধু মাসের ফল
মধুমাস জ্যৈষ্ঠ সমাগত। তার আগেই রাজধানীর বাজারে আম ও লিচু আসা শুরু করেছে। দুয়েকটি কাঁঠালও চোখে পড়লো। আগে বাজারে আসে সাতক্ষীরার গোবিন্দভোগ আম। প্রতি কেজি গোবিন্দভোগ ১২০ থেকে ধরনভেদে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দুয়েকটি বাজারে গোপালভোগও আসা শুরু করেছে। গোপালভোগের কেজি ১২০ টাকা এবং হিম সাগরের কেজি ১৫০ টাকায় মিলছে।
প্রতি একশ’ লিচুর দাম ৪০০ থেকে ধরনভেদে ৬০০ টাকা, তিন কেজি ওজনের পাকা কাঁঠাল ২৫০ টাকা এবং তরমুজ ৫০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে বাজারে।
জেডএ/এইচএ/