উচ্চ সুদের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, বিনিয়োগ ব্যাহত হচ্ছে। আগামী মুদ্রানীতিতে সুদহার কমিয়ে এক অংকে (৯ শতাংশে) নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি (এফবিসিসিআই), বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) ১৪ সদস্যের প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর, সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্বাহী পরিচালকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে এফবিসিসিআই মহাসচিব মো. আলমগীর বলেন, পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে যেখানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা মুনাফাই করে ১০ থেকে ১১ শতাংশ, সেখানে ১৪ শতাংশ সুদহারে কোনোভাবেই টিকে থাকা সম্ভব নয়। বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখা, বিনিয়োগের স্বার্থে এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার ক্রমান্বয়ে কমিয়ে সিঙ্গেল (৯ শতাংশ) ডিজিটে আনার অনুরোধ জানিয়েছি। এ সময় গভর্নর জানিয়েছেন, নীতি সুদহার এক অংকে নেমে আসবে। সেটা আগামী মুদ্রানীতিতেই।
আলমগীর হোসেন আরও বলেন, রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো সময় সময় বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকিং সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে, যা তাৎক্ষণিক সমাধান হওয়া জরুরি। এসব সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে উচ্চ পর্যায়ের একটি বিশেষ কমিটি গঠন করার দাবি জানিয়েছি। এ কমিটিতে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএসহ রপ্তানি সংক্রান্ত অন্যান্য বাণিজ্য সংগঠনের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এ বিষয়ে গভর্নর রাজি হয়েছেন। একজন ডেপুটি গভর্নরকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তার সঙ্গে এখন আমরা এসব বিষয়ে আলাপ করতে পারব।
কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা ও আর্থিক ব্যবস্থার পুনর্গঠনের লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে এফবিসিসিআই মহাসচিব বলেন, সেই কমিটির মেয়াদ সেপ্টেম্বরে শেষ হয়ে গেছে। সেটা আরও ছয় মাস বৃদ্ধির কথা বলেছি। একই সঙ্গে ৫০ কোটি টাকার নিচের ঋণ পর্যালোচনাপূর্বক নীতি সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে পৃথক আরেকটি কমিটি গঠনের জন্য প্রস্তাব করছি। এক্ষেত্রে গভর্নর জানিয়েছেন সমস্যা হবে না। তা চলমান থাকবে।
বৈঠকে এফবিসিসিআই-এর সাবেক প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান, এফবিসিসিআই-এর সাবেক পরিচালক আবুল কাশেম হায়দার, নিজাম উদ্দিন রাজেস, বিকেএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফজলুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জেডএ/এমজেএফ