চট্টগ্রাম থেকে: আমেরিকাকে গত ৫ বছরে রফতানি বাবদ বাংলাদেশ ৫ বিলিয়ন ডলার শুল্ক দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রামের র্যাডিসন হোটেলে বাংলাদেশ অ্যাপারেল অ্যান্ড সেফটি এক্সপোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়।
তোফায়েল বলেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমেরিকা বেশি শুল্ক নিয়ে থাকে। ভারত যেখানে ২ শতাংশ বা তার থেকে কিছু বেশি শুল্ক দেয়, সেখানে আমাদের ব্যবসায়ীদের আমেরিকায় পণ্য রফতানি করতে ১৬ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। ভিয়েতনামসহ অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রেও আমাদের শুল্ক বেশি দিতে হয়। গত ৫ বছরে আমেরিকাকে পণ্য রফতানিবাবদ ৫ বিলিয়ন ডলার রফতানি শুল্ক দিয়েছে বাংলাদেশ।
অন্যদিকে আমেরিকার সব শর্ত মানার পরও দেশটির ক্রেতারা পণ্যের সিএম (দাম) বাড়াচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বানিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, শ্রমিক ও ভবন নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে উন্নতি করার পরও আমাদের পন্যের সিএম বাড়াচ্ছে না আমেরিকা। আমি ক্রেতাদের বলতে চাই, পন্যের দাম বাড়ান।
তিনি বলেন, দেশের রাজনীতি আর অর্থনীতিকে আলাদা করলে চলবে না। এ বছর আমাদের রফতানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ দিনের রাজনৈতিক অস্থিরতা। রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকতেই পারে। তাই বলে দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করা ঠিক হবে না।

আগামীতে চট্টগ্রামের গার্মেন্টশিল্প পার্ক করা হবে বলেও জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলেও আমদের দেশে তার প্রভাব পড়ে না। আমি সরকারকে অনুরোধ করবো, যাতে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়।
৫০ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় করতে হলে দেশের গার্মেন্ট শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি করেন আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, যে শিল্প থেকে দেশের রফতানির ৮০ শতাংশ আসে, সেই শিল্পে দেশের মোট উৎপাদনের মাত্র ৫ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ করা হয়। অনেক নতুন কারখানা অবকাঠামো নির্মাণসহ মেশিন এনে রাখলেও গ্যাসের অভাবে উৎপাদনের যেতে পারছে না। তাই আমার সরকারের কাছে অনুরোধ করছি, যাতে পোশাকশিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। তাহলে পোশাক রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ৫০ বিলিয়ন ডলার অর্জনের পাশাপাশি ৩০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট মেম্বার ও ট্রেড মনিটরিং গ্রুপ ফর সাউথ এশিয়ার চেয়ারম্যান সাজ্জাদ করীম, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া বার্নিকেট, চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দিন, বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি (অর্থ) রিয়াগ-বিন-মাহমুদ, মো. শহীদুল্লাহ আজীম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপত্বি করেন বিজিএমইএ’র সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১৫
ইউএম/আরএম
** ২০২০ সালের মধ্যে জিএসপি প্লাস দিতে চায় ইইউ
** পোশাক কারখানা আরও শ্রমিকবান্ধব করতে হবে
** এবার চট্টগ্রামে পোশাকশিল্প পার্ক