সোমবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) হোটেল লা মেরিডিয়ানে ইউরোপীয়ান কমিশন আয়োজিত জিএসপির মধ্যবর্তী মূল্যায়ন বিষয়ক স্টেকহোল্ডার আউটরিচ ওয়ার্কসপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি তথ্য জানান।
তবে বাংলাদেশের শ্রমিকরা আন্তর্জাতিক বাজারে নায্যমূল্য পাচ্ছে না বলে অভিযোগও করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
রানা প্লাজা ধসের পরে পোশাক শিল্পের কর্মপরিবেশসহ নানাক্ষেত্রে উন্নতির কথা স্মরণ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, পরিশ্রম অনুযায়ী ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকরা।
তবে পোশাক শিল্পে জিএসপি সুবিধা অব্যাহত রাখায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, গত অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল ২৮ বিলিয়ন ডলার। যার মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে এসেছে প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবছরে তা আরো বাড়বে। এর পেছনে জিএসপি সুবিধা অসাধারণ ভূমিকা রেখেছে।
মন্ত্রী বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে যাচ্ছে। তখন বাংলাদেশ ইইউ বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধার আওতায় যাবে। সে সুবিধা পেতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদুন বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে সবচেয়ে সুবিধা পাওয়া দেশ বাংলাদেশ। জিএসপি ও ইবিএন সুবিধা শুধু রপ্তানি বাড়ায়নি, এর ফলে দেশে কর্মসংস্থানসহ আর্থসামাজিক উন্নয়ন বেড়েছে।
পোশাক খাতে ৪০ লাখ নারী শ্রমিক কাজ করছে জানিয়ে মায়াদুন বলেন, ইবিএ সুবিধা এদের দারিদ্র্য দূরীকরণে সাহায্য করেছে।
মায়াদুন বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বাজারসুবিধা নীতির আলোকে বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলো (এলডিসি) ইইউতে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারমূলক বাজার (জিএসপি) সুবিধা পায়। তবে এই জিএসপি হলো অস্ত্র বাদে সব (ইবিএ) পণ্যে শুল্কমুক্ত বাজারসুবিধা। বর্তমানে শুধু এলডিসিগুলো এ সুবিধা পায়।
তবে এলডিসির কাতার থেকে বেরিয়ে গেলে বাংলাদেশ আর এ সুবিধা পাবে না। সে ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জিএসপি প্লাস হিসেবে পরিচিত যে বাজার সুবিধা রয়েছে, বাংলাদেশ এর আওতায় পড়বে। টেকসই উন্নয়ন ও সুশাসনের জন্য সহায়তা হিসেবে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রদান করা হয়, যা ইবিএর মতো সব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয় না। বর্তমানে পাকিস্তানসহ ২৫টি উন্নয়নশীল দেশ এ সুবিধা পায়।
মায়াদুন বলেন, তৈরি পোশাক কারখানায় কর্মপরিবেশের উন্নয়নে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে পোশাকশিল্পের পাশাপাশি বাংলাদেশকে অন্যান্য শিল্প খাত বৈচিত্র্যকরণ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- ইউরোপীয়ান কমিশনের বাণিজ্য বিষয়ক মহাপরিচালক ডেনিয়েল ক্রেমার, এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো, বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারম্যান মাফরুহা সুলতানা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৭
জেপি/বিএস