ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বগুড়ায় মোকামে মধুপুরের আনারসের রাজত্ব!

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৭
বগুড়ায় মোকামে মধুপুরের আনারসের রাজত্ব! বগুড়ায় মোকামে মধুপুরের আনারসের রাজত্ব/ছবি: আরিফ জাহান

বগুড়া: বছরের বারো মাসই বগুড়া শহরের রেলস্টেশন ও সাতমাথা ঘিরে থাকে বাহারি ফলের সমাহার। যখন যে মৌসুম আসে সেই মৌসুমের ফল নিয়ে চরম ব্যস্ত সময় পার করেন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।

এই বর্ষাকালেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। হরেক পদের ফলের পাশাপাশি এ সময়টাই আনারস নিয়ে ব্যস্ত ফল ব্যবসায়ীরা।

যদিও বৈরী আবহাওয়া তবুও আনারস নিয়ে প্রতিদিন সকাল থেকেই ব্যবসায়ীদের কর্মযজ্ঞ যথারীতি শ‍ুরু হচ্ছে।

সবুজ পাতায় মাথাটা ভরা। হলুদের আবারণ চারপাশটায়। অবশ্যই তার মাছে সবুজের ছোপ ছোপ। দেহটা রসে ভরা। জাতভেদে কোনো কোনটা ভীষণ মিষ্টি। আবার কতগুলো তুলনামূলক কম মিষ্টি। সবমিলে বর্তমানে মধুপুরের মধুখ্যাত আনারসের রাজত্ব চলছে বাহারি ফলের রাজ্যে।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সকালের দিকে বগুড়া শহরের রেলস্টেশন এলাকার ফলপট্টি ঘুরে আনারস নিয়ে ফল ব্যবসায়ীদের কর্মযজ্ঞতার নানা দৃশ্য নজরে পড়ে।

প্রতিদিন ভোর রাতে ট্রাকে ভরে মধুপুরের মধুখ্যাত আনারস চলে আসছে বগুড়ার এই মোকামে। ভোরের আলো ফুটে উঠতেই শুরু হয়ে যায় ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের কর্মচাঞ্চল্য। বিশেষ কায়দায় খড় দিয়ে মোড়ানো ট্রাকভর্তি আনারসগুলো আনলোডের পালা শুরু হয়।
বগুড়ায় মোকামে মধুপুরের আনারসের রাজত্ব/ছবি: আরিফ জাহানএর আগে ত্রিফল ও ত্রিফলের নিচে রাখা খড় সরিয়ে ফেলা হয়। সেই খড়ের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখা আনারস। আনারসের মাথায় থাকা ঝুঁটি ধরে শ্রমিকরা সেগুলো নিচে নামাতে থাকেন। আবার অনেকে ঝুড়ি ভর্তি করে আনারসগুলো নিচে ন‍ামিয়ে আনেন। বিভিন্ন আড়তের সামনে বা ফাঁকা স্থানে নামানো আনারসগুলো সাজিয়ে রাখা হয় স্তূপাকারে।

স্তূপের পাশেই খাতা-কলম হাতে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকেন মহাজন। আর দূর-দূরান্ত থেকে আসা পাইকারি ও খুচরা ক্রেতা সাধারণ সেখানে দরদাম করছেন। পছন্দ করে সেই আনারস কিনছেন। এরপর রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা, মিনি ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে ভরে ছুটছেন নিজ নিজ গন্তব্যে।

তবে পাইকারি ও খুচরা ক্রেতা সাধারণের দৃষ্টি থাকে ভালো আনারসের দিকে। আবার অনেক ব্যবসায়ী স্থানীয় বাজারের চাহিদা বুঝে সেই মানের আনারস খরিদের দিকে প্রাধান্য দেন।

একইভাবে বেচাবিক্রির সুবিধার্থে স্থানীয় বাজারের ক্রেতা সাধারণের ক্রয়সীমার মধ্যে আনারস বিক্রির দিকটাও বিবেচনায় রাখেন এসব ব্যবসায়ীরা।   
 
সুলতান মাহমুদ সজীব, আইয়ুব হোসেন, রেজাউল করিম, সাদ্দাম হোসেনসহ একাধিক ফল ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে জানান, এই মোকামে সারা বছরই বিভিন্ন ধরনের ফল আসে। এখনো আসছে। তবে বর্তমানে এখানে প্রত্যেক দিন বিপুল পরিমাণ আনারস আসছে।

প্রতিদিন ৪/৫ ট্রাক আনারস আসছে এ মোকামে। তাই বগুড়ার মোকামে আনারসের রাজত্ব চলছে এ কথা বললে ভুল হবে না। সাইজ অনুযায়ী প্রতি পিস আনারস পাইকারি হিসেবে ১৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বেচাকেনা হচ্ছে বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।

তারা আরও জানান, জেলার ১২টি উপজেলা ছাড়াও আশেপাশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শহরের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা এ মোকাম থেকে আনারস কিনে নিয়ে যান।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৭
এমবিএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।