ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আইসিডি’র লাইসেন্স বাতিল করতে বললেন অর্থমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৭
আইসিডি’র লাইসেন্স বাতিল করতে বললেন অর্থমন্ত্রী অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমন্বয় সভা

ঢাকা: বন্দর কর্তৃপক্ষকে অসহযোগিতার জন্য সমুদ্র বন্দরে বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোর (আইসিডি) লাইসেন্স বাতিল করতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

সোমবার (৩১ জুলাই) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চট্রগ্রাম সমুদ্র বন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দর সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার বিষয়ে স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে সমন্বয় সভায় একথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

বেসরকারি আইসিডি ডিপোগুলো পণ্য আমদানি-রফতানিতে সহযোগিতা করে না বলে সভার আলোচনায় উঠে আসে।

 

‘প্রাইভেট আইসিডি; আমার মনে হয় এগুলো সব ক্যান্সেল করা দরকার’, বলেন অর্থমন্ত্রী।

সভায় জানানো হয় ১৮টি আইসিডি পড়ে আছে। তখন অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অল অফ দেম। দ্যাট অ্যাকশন। ’

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম খালেদ ইকবালকে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনি চেয়ারম্যান সাব, আপনারই বোধ হয় করার, না?
 
চেয়ারম্যান বলেন, ‘জি স্যার, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নীতিমালাতেই আছে। ’
 
তখন অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আই শুড ক্যান্সেল অল দ্য লাইসেন্স। দে আর ইউজলেস। কিচ্ছু করছে না। কোনো রকম আপনাকে সাহায্য করছে না। এটা ক্যান্সেল করার একটা চিন্তা-ভাবনা করেন অ্যাট লিস্ট। ’
 
বন্দরে কনটেইনার জটের সমালোচনা করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এটা খুবই লজ্জার বিষয়। আরও দু’একবার আমি অ্যাসেসমেন্ট করেছি। জাহাজকে অপেক্ষা করতে হয়। এটা তো একটা ন্যাশনাল লস এবং খরচও বাড়ে। জাহাজের ভাড়া-টাড়া দিতে হয়। আর এখান থেকে যে রফতানি দ্রব্য যায় সেই যানবাহনও গিয়ে সেখানে তিন দিন চার দিন বসে থাকে। অপলোড করার জায়গাও পায় না। ’
 
সমন্বয় সভায় প্রেজেন্টেশনে কিছু ছবি দেখে কয়েক বছর আগে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যে ছবি দেখলাম তাতে খুব ইমপ্রুভ না। লজিস্টিক প্ল্যাটফর্মের উন্নয়নের অত্যন্ত প্রয়োজন। রফতানির জন্য মালপত্র নিয়ে যাচ্ছে তার জায়গাটা আরও বর্ধিত হওয়া উচিত যাতে সেখানে তাড়াতাড়ি নামিয়ে চলে আসতে পারে। আমদানির জিনিসপত্র আসছে, সেটাও তাড়াতাড়ি হয়। ’

বন্দরে কনটেইনার জটলা নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এতে সময় নষ্ট হচ্ছে। সময় নষ্ট মানেই হলো কষ্ট বাড়ছে। দুই-তিন দিনের বেশি থাকলে তাকে চার্জ দেওয়া উচিত। ফাস্ট অ্যাকশন হলেই সময় নষ্ট হবে না, ব্যয় বাড়বে না। ’

কনটেইনারের জন্য বন্দরে ইলেকট্রিক চার্জ লাগে- এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ ব্যয় বন্দরকে ব্যয় করতে হবে। এটা বিজনেসম্যানের দেওয়া উচিত নয়। ’   
 
বেনাপোল বন্দরের জন্য বিকল্প রাস্তা করা হচ্ছে জানিয়ে সভায় নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য রেলের জায়গা পেয়েছি। কাজ শুরু হয়ে গেছে।  
 
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির জন্য বেনাপোল ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি অ্যালোকেশন দেওয়ার চেষ্টা করবো।  
 
নৌমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে ৬টি গেইনটি ক্রেন চলে এসেছে। বেনাপোলে প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট কেনার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি। হ্যান্ডেলিং ব্যবস্থাকে অত্যাধুনিক করা দরকার। এজন্য সমীক্ষা চলছে।  
 
৯৯ শতাংশ ব্যবসায়ী সততার সাথে ব্যবসা করলেও তারা বিভিন্নভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন জানিয়ে বিজিএমএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ব্যবসায় গ্রোথ নেই, আমাদের দেয়ালে পিঠ থেকে গেছে, ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়েছে, অর্ডারও কমে যাচ্ছে।
 
ব্যবসায়ীদের জন্য গ্রিন চ্যানেলের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, বাজেট প্রোপোজালে ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটি তাড়াতাড়ি বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন মন্ত্রী।  
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২ জুলাই সচিব সভায় আমদানি-রফতানি কাজে ২৪ ঘণ্টা কাস্টমস স্টেশন খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

চট্রগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান চট্রগ্রাম বন্দরকে থ্রাস্ট সেক্টর ঘোষণা দেওয়াসহ বন্দর ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখতে ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা কামনা করেন।
 
ওই নির্দেশনায় ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম ও বেনাপোল বন্দর কার্যক্রম শুরু করেছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, অন্যগুলো চালু রাখতে একটু সময় লাগতে পারে।
 
অর্থসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান তপন কুমার চক্রবর্তীসহ দুই মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৭
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।