ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বড় নদী ড্রেজিংয়ের নির্দেশ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১৭
 ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বড় নদী ড্রেজিংয়ের নির্দেশ মঙ্গলবারের একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, কর্ণফুলি, শীতলক্ষ্যা, গোমতীর মতো বড় বড় নদীগুলো ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ড্রেইজিংয়ের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই উপলক্ষে একটা মাস্টার প্লান প্রণয়ন করতেও সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দেন তিনি।

মঙ্গলবার (আগস্ট ০১) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেন।

প্ল্যান বাস্তবায়নে ৭০ শতাংশ খরচ ভারত বহন করবে অন্যদিকে বাংলাদেশ বহন করবে ৩০ শতাংশ।  এই বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আমাদের কথাও হয়েছে।  ভারত এই বিষয়ে রাজি হয়েছে।  ভারতকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের ড্রেজিং করতে হবে।  উজান থেকে শুরু করে ভাটি পর্যন্ত খনন না করলে নদী ভাঙ্গন থামবে না। আর আমাদের বড় বড় নদীগুলো তো ভারত থেকেই এসেছে। ’

একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, দেশের বড় বড় নদীগুলো খননে প্রধানমন্ত্রী মাস্টার প্ল্যান তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছে।  এই প্ল্যান বাস্তাবয়নে ৭০ শতাংশ খরচ ভারত দেবে বাকি ৩০ শতাংশ দেবে বাংলাদেশ।  দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা মাস্টার প্ল্যান তৈরি করবো।  ’

পরিকল্পনা মন্ত্রী আরও বলেন, উন্নত দেশের আদলে বড় নদীগুলো ড্রেজিংয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করবো।   নদীর খননকৃত পলি মাটি থেকে বছরে ৬ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলার আয় করা যাবে।  খননকৃত পলি শিল্প কারখানা ও ইকোনোমিক জোনে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহার করা হবে।  বড় নদী খনন করে পিলার দিয়ে পাড় মজবুত করে বাঁধারও একটা উদ্যোগে থাকবে। যেন ভবিষ্যতে নদীর এক পাড় দিয়ে ট্রেন ও অপর পাড় দিয়ে যানবাহন চলতে পারে।   বাংলাদেশের নদীগুলো দিয়ে প্রতিবছর বন্যায় ৫ মিলিয়ন কিউসেক পানি এবং ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন টন পলি পরিবাহিত হয়, যা সমগ্র বিশ্বে পরিবাহিত পলির ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ। ‘ কিন্তু এই পলির ফলে নদীগুলো নাব্যতা হারাচ্ছে এবং নদীভাঙ্গনে ৫০ হাজার ঘরবাড়ি নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে।  নৌ-পথ সচল রাখার জন্যও পর্যাপ্ত পরিমাণে ড্রেজিং করা হবে। ’

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবারের একনেক বৈঠকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভারী মালামাল পরিবহন নিরাপদ ও সহজতর করার লক্ষ্যে মংলা বন্দর থেকে চাঁদপুর-মাওয়া-গোয়ালন্দ হয়ে পাকশী পর্যন্ত নৌরুটের নাব্যতা উন্নয়নে ৯৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প অনুমোদন করা হয়।  প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বড় নদী ড্রেজিংয়ের এ নির্দেশ দেন।

এটিসহ একনেক সভায় মোট ৮ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।  প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ১৭১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।  এর মধ্যে প্রকল্প সাহায্য  ৫৯২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বাকি অর্থ সরকারি খাত থেকে মেটানো হবে।

এসব প্রকল্পের আওতায় ৬৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেক্টিভিটি প্রজেক্ট, শেওলা,ভোমরা, রামগড় স্থল বন্দর উন্নয়ন এবং বেনাপোল স্থলবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।

এছাড়া নবীনগর-শিবপুর-রাধিকা আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪৪ কোটি টাকা।   পাশাপাশি জামালপুর-ধানুয়া কামালপুর-কদমতলা (রৌমারী) জেলা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতকরণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

অন্যদিকে ৩৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘রাজবাড়ী শহর রক্ষা প্রকল্প’ এবং ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর ও ভুঞাপুর উপজেলাধীন যমুনা নদীর বাম তীরবর্তী কাউলীবাড়ী ব্রিজ হতে শাখারিয়া পর্যন্ত তীর সংরক্ষণ প্রকল্পেরও অনুমোদন দেয়া হয়।  মেঘনা নদীর ভাঙ্গন হতে চাঁদপুর জেলার হরিণা ফেরিঘাট এবং চরভৈরবী এলাকার কাটাখাল বাজার রক্ষা প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯১ কোটি  টাকা।  ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সিলেট টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন প্রকল্পও অনুমোদন পায় একনেক সভায়। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৭
এমআইএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।