সবকিছুর সমাধান হতে যাচ্ছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক)। বুধবারের (০৯ আগস্ট) একনেক সভায় সিডিএকে বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিয়ে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণকল্পে খাল পুন:খনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে।
প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের ৩৬টি খাল খনন করে জলাবদ্ধতার নিরসন করবে সিডিএ। সরকারি অর্থায়নে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে চলতি সময় থেকে ২০২০ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে প্রকল্পটি।
এর আগে একই ধরনের প্রকল্পের প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছিলো চসিকও। তাদের প্রস্তাবনায় বলা হয়, পাঁচ হাজার কোটি টাকায় ‘বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও জলাবদ্ধতা ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জলাবদ্ধতামুক্ত হবে চট্টগ্রাম নগরী। ‘পাওয়ার চায়না’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নেরও প্রস্তাব দেন চসিকের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।
তবে সিটি মেয়রের প্রস্তাবটি স্থগিত করে সরকারের অনুমোদন পাচ্ছে সিডিএ’র চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের প্রস্তাবিত প্রকল্প।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, একনেক সভার কার্যতালিকায় এক নম্বরে রয়েছে প্রকল্পটি।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের এক ঊর্ধতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ‘একই ধরনের প্রকল্প সিডিএ ও চসিক পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব করেছিলো। তবে সবার সিদ্ধান্তে সিডিএ’র প্রকল্প একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ৩৬টি খাল খনন করা হবে। তবে চসিকের প্রস্তাবও বিবেচনায় রাখা হয়েছে। চীনা অর্থায়ন পাওয়া গেলে বাকি খালগুলোর খনন ও সংস্কার করবে চসিক’।
মেগা প্রকল্পটির আওতায় চট্টগ্রামকে ঘিরে মহাপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ খালগুলোর পাড়ে রাস্তা নির্মাণের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও খালগুলো পরিষ্কার করা হবে। খালের সঙ্গে সংযোগকারী পাকা ড্রেনগুলোর সংষ্কার ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে বৃষ্টির পানি দ্রুত সময়ে নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও থাকছে প্রকল্পে।
এ লক্ষ্যে ৩৬টি খালের ৫ লাখ ২৮ হাজার ২১৪ ঘনমিটার মাটি খনন করা হবে। নির্মিত হবে তিনটি জলাধার, দুই হাজার বৈদ্যুতিক পুল, ৮৮টি স্ট্রিট লাইট, ছয়টি কালভার্ট, ৮৬ কিলোমিটার সড়ক ও ৪৮টি পিসি গার্ডার সেতু। ১১ কিলোমিটার সাইড ড্রেনসহ ওয়াকওয়েও নির্মিত হবে চট্টগ্রাম নগরীজুড়ে। পুরো প্রকল্পের আওতায় ৬ হাজার ৫১৬ কাঠা জমি অধিগ্রহণ করা হবে।
সিডিএ’র চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘চট্টগ্রামের উন্নয়নে আমাকে অনেক কাজ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে ‘চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ’ প্রকল্প দিয়েছেন। সাড়ে ১৬ কিলোমিটার চারলেনের এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণে মোট ব্যয় হবে ৩ হাজার ২৫১ কোটি টাকা। আশা করছি, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রকল্পটিও অনুমোদন পাবে’।
অন্যদিকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও জলাবদ্ধতা নিরসনে চসিকের পরিকল্পনাটি করা হয়েছিল আগামী একশ’ বছরের বিবেচনায়। ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ মাস ধরে নগরীতে সমীক্ষা চালিয়ে প্রকল্প প্রস্তাবটি তৈরি করে চসিক। খাল প্রশস্তকরণ, খালের পাড়ে প্রশস্ত রাস্তা ও স্লুইচ গেট-পাম্প হাউস নির্মাণ, নতুন নতুন খাল খননসহ জলাবদ্ধতা নিরসন এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণে নানামুখী পরিকল্পনা ছিল এতে। প্রকল্পের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দিতে আগ্রহও প্রকাশ করেছে পাওয়ার চায়না ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ লিমিটেড।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর