রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে তিন দিনব্যাপী মেলার পর্দা নামে শনিবার (২৯ জুন)।
মেলায় অংশগ্রহণকারী ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিবারই দেশি-বিদেশি ক্রেতা বাড়ছে।
মেলায় অংশ নেওয়া এন এম ইমপেক্স অ্যান্ড মেশিনারি লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক আল আমিন আল মামুন বাংলানউজকে বলেন, প্রতিবছরই আমরা এই মেলায় অংশগ্রহণ করি। দিনে দিনে ভালো হচ্ছে মেলা। তবে প্রচারণাটা আরও একটু ভালো হতে পারতো। বিদেশিরা এই মেলায় অংশ নিচ্ছে, তাই এটির প্রচারণা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে করলে বিদেশিদের অংশ গ্রহণ আরও বাড়তো।
রিম লেদার লিমিটেডের ফ্যাক্টরি ম্যানেজার নিগার পারভিন নিপু বলেন, আমরা দ্বিতীয়বারের মতো মেলায় অংশ নিয়েছি। গতবারও আমরা বায়ার পেয়েছিলাম। এবারও পেয়েছি। সর্বোপরি ভালো হয়েছে মেলা।
তিনি বলেন, মেলা ঘিরে আমরা যে টাগের্ট নিয়ে এসেছিলাম, সেটা ফিলাপ হয়েছে। তবে মেলার প্রচার-প্রচারণা কম। প্রচারণা আরেকটু ভালো হলে মেলা আরও ভালো হতো।
মেলার প্রচার কম থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন দর্শনার্থী ও অ্যালিগ্যান্স স্টাইল ফুটওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রচারণা কম থাকায় আমাদের প্রতিষ্ঠান এই মেলায় নিতে পারেনি। আগামীতে এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ দৃষ্টি দেবে বলে আশা করি।
প্রথমবারের মতো মেলায় অংশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে চীন থেকে আসা ফুজিয়ান সার ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কোম্পানি লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির সেলস এক্সিকিউটিভ ইমা বাংলানিউজকে বলেন, এবারই আমরা প্রথম অংশ নিয়েছি এবং বায়ারের সন্তোষজনক সাড়া পেয়েছি। বায়াররা আমাদের প্রডাক্ট পছন্দ করেছেন। আশা করছি ভালো কিছু হবে। আগামীতেও আমরা এই মেলায় অংশ নেবো।
লিমরা ট্রেড ফেয়ারস অ্যান্ড এক্সিবিশনস প্রাইভেট লিমিটেড অ্যাসিটেন্ট ম্যানেজার মো. তানভির আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছরই আমাদের ভিজিটর বাড়ছে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এবারের মেলায় ৭-৮টি দেশের দেশের বায়ার মেলা ভিজিট করেছে। এর মধ্যে ইউরোপ ও আফ্রিকার বায়াররা রয়েছে।
সমাপনীর দিন দুপুরে এক সেমিনারে আয়োজকরা বলেন, বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্যের শীর্ষে থাকা পোশাক শিল্পের প্রধান প্রধান কাঁচামাল (ফেব্রিক্স, মেশিনারিজ, অ্যাকসেসোরিজ) আসে বিদেশ থেকে। কাটিং, মেকিং, সুইং হয় বাংলাদেশে। কেবল শ্রমের স্বল্পমজুরির ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে এই শিল্প। অন্যদিকে বাংলাদেশের লেদার শিল্পের প্রধান কাঁচামাল চামড়া বাংলাদেশেরই। অথচ এই চামড়ার বাই-প্রোডাক্ট যেমন সুজ, ব্যাগ, গার্মেন্ট এবং অন্যান্য লেদার প্রোডাক্ট বাংলাদেশে তৈরি করা গেলে এবং তা বিদেশে রফতানি করা হলে চামড়া খাতের কলেবর বাড়বে বহুগুণে এবং এটি বাংলাদেশের স্থায়ী একটি শিল্প হিসেবে জাতীয় অর্থনীতিতে বিশাল ভূমিকা রাখবে।
পঞ্চমবারের মতো আয়োজিত এ মেলায় বিশ্বের ১৩টি দেশের দুইশ’র বেশি পণ্য নিয়ে ৩৩৪টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
বাংলাদেশ লেদার অ্যান্ড ফুটওয়ার এক্সপো, প্রিন্ট টেক বাংলাদেশ এবং গার্টেক্স-গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল মেশিনারি এক্সিবিশন শিরোনামে এই আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর আয়োজন করে লিমরা ট্রেড ফেয়ারস অ্যান্ড এক্সিবিশনস প্রাইভেট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন।
মেলায় টেক্সটাইল মেশিনারি, গার্মেন্টস টেকনোলজি, টেক্সটাইল টেকনোলজি, নন-উইভেন টেকনোলজি, অ্যাকসেসরিস মেকিং মেশিনারি, ফায়ার সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি ইক্যুইপমেন্ট, লেদার অ্যান্ড ফুটওয়্যার, লেদার অ্যান্ড লেদার গুডস, কেমিক্যালস অ্যান্ড অ্যাকসেসরিস এবং প্রিন্ট টেক বাংলাদেশে প্রিন্টিংয়ের নানান দিক প্রদর্শিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২২১৫ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৯
এসএমএকে/এইচএ/