ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দুধের পুষ্টিগুণ নিয়ে যা বললেন বিশেষজ্ঞরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১২ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৯
দুধের পুষ্টিগুণ নিয়ে যা বললেন বিশেষজ্ঞরা

ঢাকা: সম্প্রতি বাজারের পাস্তুরিত তরল দুধ নিয়ে জনগণের মনে ব্যাপক ভ্রান্ত ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। সেসব ধারণার অবসান ঘটাতে বাংলানিউজ আয়োজন করে জনসচেতনতামূলক আলোচনার। সেখানে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত পরাপর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

শনিবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল হেডকোয়ার্টার-১ এ আলোচনা সভা হয়। বাংলানিউজ আয়োজিত অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলো আড়ং ডেইরি।

 

‘পুষ্টি চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন একগ্লাস দুধের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় হোটেল ওয়েস্টিনের মার্কেটিং কমিউনিকেশন্সের সহকারী পরিচালক সাদমান সালাহউদ্দিন বলেন, দুধ একটি এনার্জিবর্ধক হিসেবে কাজ করে। অনেক সময় ক্লান্ত হলে অল্প পরিমাণ দুধ খেলেই তা কেটে যায়।    
  
রাজধানীর আওন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইসিডিডিআর’বি) চাইল্ড ম্যালনিউট্রিশন বিভাগের প্রধান সিনিয়র সাইন্টিস্ট ডা. মো. ইকবাল হোসাইন বলেন, আমাদের দেশে ৫৫ শতাংশ শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো হয়। আমাদের লক্ষ্য কমপক্ষে ৯০ শতাংশ করা। আসলে শতভাগ শিশু যদি মায়ের বুকের দুধ খাওয়ার অভ্যাসে থাকতো তাহলে আমাদের ২ বছর বয়সের পর পশুর দুধ খাওয়ার সারজীবন দুধ খাওয়ার একটা অভ্যাস থাকতো।  

‘এক্ষেত্রে গরু ছাড়া ছাগলের দুধও অনেক পুষ্টিগুণ বহন করে। একটা গবেষণায় দেখেছি- ভালো হাই প্রোটিন খাবার খাওয়ানোর চেয়ে অ্যানিমেল ফুডে শিশু বেড়ে ওঠার ধারা বেশি। এক্ষেত্রে দুধের নামটাই প্রথম আসে। আবার কোলেস্টেরল এত ভয়ের কিছু না। যেটাকে আমরা বেশি ভয় পাই এমনকি এটার জন্য আমরা দুধ না খাওয়ার অভ্যাসও গড়ে তুলছি। ’

বাজারে পাওয়া দুধকে আরো উন্নত করার চেষ্টার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, দুধকে সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আমাদের প্যাকেটটাকে আরো উন্নত করতে হবে। এক্ষেত্রে পাস্তুরাইজেশনের পর ওই বিশেষ ধরনের দুধকে আর ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করতে হবে না। ৬ মাস ভালো থাকবে। কেননা দারিদ্র্যের ফ্রিজ নেই।
 
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হারুন উর রশীদ বলেন, দেহ ও মনের বিকাশে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত দুধের উপকারিতা অপরিসীম। আমাদের দেশে দেখা যায় যে, আমাদের ছেলে-মেয়েরা বড় হয়ে গেলে আর দুধ খেতে চায় না। কিন্তু পরীক্ষার আগে দেখা যায়, তাদের আমরা দুধ খাওয়াই। কেন? কারণ দুধের পুষ্টিগুণ আছে।  

‘আমরা জানি যে, দুধ খেলে মাথা ঠান্ডা থাকে, বেশি পরিশ্রম করতে হলে শক্তি জোগায় দুধ। দুধ পানের এই অভ্যাসকেই নিয়মিত করতে হবে। দুধে মানবদেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয় অনেক ধরনের অ্যামিনো এসিড আছে। ’
 
তিনি বলেন, শিশুদের সরাসরি দুধ না দিয়ে দুধের সঙ্গে চকলেট মিশিয়ে চকলেট মিল্ক আকারে দেওয়া যেতে পারে। এছাড়া অনেক শিশু দুধে এক ধরনের স্মেল (গন্ধ) পায় বলে জানায়। তাদের জন্য দুধে এলাচি বা দারুচিনি যোগ করে দেওয়া যেতে পারে। এতে দুধের স্বাদ ও ঘ্রাণ দুটোই বাড়বে। আবার দুগ্ধজাত বিভিন্ন খাবার তৈরি করেও দুধ গ্রহণ করানো যায়। মাঝে মাঝে শিশুদের আবদারের কাছে হার না মেনে একটু জোর দিয়ে হলেও শিশুদের দুধ খাওয়াতে হবে।  
 
বাংলানিউজের লাইফস্টাইল এডিটর শারমীনা ইসলামের মডারেশনে এবং মালিহা মেহরিন বুশরার সঞ্চালনায় আলোচনায় অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের ডেইরি অ্যান্ড ফুড বিভাগের পরিচালক ও জাতীয় ডেইরি ডেভেলপমেন্ট ফোরামের মহাসচিব আনিসুর রহমান, ব্র্যাক ডেইরি অ্যান্ড ফুড এন্টারপ্রাইজের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জয়দ্বীপ সান্ত্রা, ব্র্যাক ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রজেক্টের ডিজিএম ড. মুহাম্মদ হারুন উর রশীদ,  অ্যাপোলো হাসপাতালের পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী, বারডেম হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ মহুয়া, সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রকল্প পরিচালক তাহমিনা খান মজলিস প্রমুখ।   
 
বাংলাদেশ সময়: ২২০৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৯
এমএএম/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।