ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাংলাদেশি পণ্য নিতে আগ্রহী আমাজন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৯
বাংলাদেশি পণ্য নিতে আগ্রহী আমাজন আমাজন প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে বিক্রির জন্য বাংলাদেশ থেকে পণ্য সংগ্রহে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ই-কমার্স জায়ান্ট আমাজন। এর জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে নীতিগত সহায়তা চায় প্রতিষ্ঠানটি।

বুধবার (১৭ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে বসে আমাজনের প্রতিনিধি দল। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে আমাজনের ক্যাটাগরি ম্যানেজার গগন দ্বীপ সাগর, মার্চেন্ট সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান টেক রাজশাহীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাহফুজুর রহমান এ বৈঠকে অংশ নেন।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের একটি প্রতিনিধি দল।

বৈঠকে বাংলাদেশি উৎপাদনকারীদের থেকে পণ্য সংগ্রহ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে বিক্রি করায় নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানায় আমাজন। এর জন্য সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় নীতিগত সহায়তা চায় তারা।  

সার্বিক বিষয়ে আমাজনের মার্চেন্ট সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান টেক রাজশাহীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাহফুজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ থেকে সংগ্রহ করা পণ্য ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিক্রি করতে আগ্রহী আমাজন। তাদের গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম থেকে এসব পণ্য বিক্রি হবে। তবে, বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিতে হলে বিদেশি ক্রেতাকে কিছুটা জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়। সেগুলো দূর করতে সরকারের কাছে নীতিগত সহায়তা চেয়েছি আমরা।

গণমাধ্যমের সঙ্গে আমাজনের কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি না হলেও প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র হিসেবে মাহফুজুর রহমান বলেন, এসব জটিলতার মধ্যে আছে কাস্টমসের নীতি, ব্যাংকিং জটিলতা, স্থানীয়দের মধ্যে আমাজনের মতো মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে জ্ঞান ও দক্ষতার অভাব। একারণে, কাঙ্ক্ষিত লোকবল না পাওয়ার দুশ্চিন্তা থেকেই যায়। এ বিষয়গুলোতে আমরা পরিবর্তন চাই। এতে বাংলাদেশের কাছেও রপ্তানির বড় একটি বাজার উন্মোচিত হবে।  

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পণ্য বৈদেশিক বাজারে রপ্তানি করে। আমাজন আমাদের কাছে যে প্রস্তাব নিয়ে এসেছে, তা সফল হলে বিশ্ববাজারে আমাদের পণ্য রপ্তানি আরও সহজ হবে। এছাড়া, অনলাইনভিত্তিক যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বড় একটি বাজার আমাদের সামনে উন্মোচিত হবে। এ প্লাটফর্মটিতে যুক্ত হতে পারলে, আমাদের রপ্তানির পরিমাণ ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিগুণ করা সম্ভব। বিশেষ করে, ছোট ছোট পণ্য সরাসরি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে রপ্তানি করা সম্ভব হবে। অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কেনাকাটার জন্য যে বিষয়গুলো প্রতিবন্ধকতা হিসেবে রয়েছে, সেগুলো দূর করতে আমরা কাজ করছি। আমরাও চাচ্ছি নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাধ্যমে রপ্তানির পরিমাণ বাড়াতে।  

আমাজনের চাওয়া নীতিগত সহায়তা প্রস্তাব সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা আমাদের থেকে পণ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে তাদের ওয়্যারহাউজে নিতে চায়। এর জন্য বারবার এলসি ইস্যু করার থেকে তারা একবারেই করতে চাচ্ছে। একই সঙ্গে ডলারে লেনদেনের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। যেমন, ব্যক্তি হিসাবে বছরে ১০ হাজার ডলার, ব্যবসায়ী হিসাবে ২০ হাজার ডলার ও এক লেনদেনে সর্বোচ্চ ৩০০ ডলার খরচ করা যায়। এর সীমাও বাড়াতে চায় আমাজন। সর্বোপরি, স্থানীয়দের দক্ষতা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতেও কাজ করতে চায় তারা।

পলক বলেন, আমাজন বাংলাদেশে এখনই কোনো অফিস খুলছে না। তারা এখানেই রিটেইল ব্যবসায়িক কার্যক্রম করতে ইচ্ছুক কি-না, সে বিষয়ে এখনো আলোচনা হয়নি। আপাতত তারা আমাদের এখান থেকে পণ্য তাদের ওয়ারহাউজে নিতে আগ্রহী। তাদের বলেছি, আমাদের সরকার উদার নীতির। আশা করি, আমাদের স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা সরাসরি আমাজনে পণ্য দিতে পারলে তারা লাভবান হবে, সর্বোপরি দেশ লাভবান হবে। সে বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন নিয়ে ভাবছি আমরা। আমরা নিজেরাও বসব, এ বিষয়ে আলোচনা করব। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে একটি সভায় এসব বিষয়ে আলোচনা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৯
এসএইচএস/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।