ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘ব্ল্যাক বেবি’তে আশার আলো

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৯
‘ব্ল্যাক বেবি’তে আশার আলো

মেহেরপুর: গতানুগতিক ফসলে লাভ না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন মেহেরপুরের কৃষকরা। তাই, ভাগ্য বদলাতে বাধ্য হয়েই নতুন ফসলের দিকে ঝুঁকেছেন তারা। উন্নত কৃষি-প্রযুক্তি ব্যবহার করে যেমন ফলন ভালো হচ্ছে, তেমনি দামও পাচ্ছেন সন্তোষজনক। এর মধ্যে ব্ল্যাক বেবি জাতের তরমুজ চাষে ফের আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন জেলার কৃষকরা। 

লাভ ও ফলন ভালো হওয়ায় ব্ল্যাক বেবির চাষ দিন দিন বাড়ছে। আগামীতে নতুন জাতের এ তরমুজের চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করছে মেহেরপুর কৃষি বিভাগ।

 

সদর উপজেলার আমদহ গ্রামের বিদেশ-ফেরত যুবক সাইদুর রহমান লিজন। প্রবাসে থেকেও লাভ হচ্ছিল না খুব একটা। তাই দেশে ফিরে আসেন গত বছর। এসেই মন দেন কৃষিকাজে। ব্ল্যাক বেবি জাতের তরমুজ চাষি লিজন বাংলানিউজকে বলেন, বিদেশে থাকাকালে এ জাতের তরমুজ চাষ দেখে আগ্রহ জন্মেছিল তখনই। তা থেকেই গত বছর পাঁচ বিঘা জমিতে ব্ল্যাক বেবির চাষ করি। লাভও হয় ভালোই।  তরমুজ ক্ষেতে কাজ করছেন এক চাষি।  ছবি: বাংলানিউজতার সফলতা দেখে এবছর অনেকেই ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চাষ করেছেন বলে জানান এ চাষি। লিজন বলেন, ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ করে এবছর বিঘাপ্রতি প্রায় দেড় লাখ টাকা লাভ হয়েছে।  

তিনি বলেন, এ জাতের তরমুজ সুস্বাদু ও মিষ্টি। তাই ক্রেতাদের কাছে চাহিদাও বেশি।

চলতি মৌসুমে গাংনী উপজেলায় চার জন কৃষক ব্ল্যাক বেবি জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। এর মধ্যে, গাঁড়াডোব পোড়াপাড়া এলাকার আজাদ হোসেন পাঁচ বিঘা, জুগিন্দা গ্রামের নজরুল ইসলাম ও লিজন আট বিঘা জমিতে  ব্ল্যাক বেবি চাষ করেছেন। সরেজমিনে এসব জমিতে সারি সারি তরমুজ ঝুলতে দেখা যায়। জমি পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

আজাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, গতানুগতিক ফসল চাষে কৃষকদের শুধু ‘লস’ গুণতে হচ্ছে। তাই, এবছর পাঁচ বিঘা জমিতে ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। পাঁচ বিঘা জমি থেকে প্রায় সাত লাখ টাকা লাভ হয়েছে। আমার দেখাদেখি এলাকার অনেক কৃষকই সামনের বছর এ জাতের তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

গাঁড়াডোব পোড়াপাড়া এলাকার কৃষক শাহিন আলী, ইজ্জত আলী ও সাহান আলী বাংলানিউজকে বলেন, আজাদ ও নজরুল ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। আগামীতে আমরাও অন্য ফসলের পাশাপাশি এর চাষ করবো। এজন্য তাদের কাছে এ বিষয়ে ভালো করে জানার পাশাপাশি আমাদের জমি প্রস্তুত করছি।  তরমুজের বাম্পার ফলন দেখে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকেই।  ছবি: বাংলানিউজমেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ডিডি) কৃষিবিদ ড. আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে ধান, গম, পাটসহ অন্য ফসল চাষে ফলন ভালো হলেও, কৃষকরা দাম পাচ্ছেন না। দাম নির্ধারণের বিষয়টি সরকারের ওপর নির্ভর করে। তাই, কৃষি বিভাগ থেকে লাভজনক চাষের জন্য সবসময় উদ্বুদ্ধ করা হয়। বর্তমানে মেহেরপুরের কৃষকরা এসব ফসলের পাশাপাশি উন্নত কৃষি-প্রযুক্তি ব্যবহার করে লাভজনক ফসল চাষে ঝুঁকছেন। ব্ল্যাক বেবি তরমুজে সফল হওয়ায় এর চাষ বাড়াতে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।