প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ মণ বড় আকারের ইলিশ আমদানি হচ্ছে। এছাড়াও স্থানীয় পদ্মা-মেঘনা নদীতে জেলেদের আহরণ করা ছোট আকারের ইলিশ নিয়মিত ঘাটে বিক্রি হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে শহরের বড় স্টেশন মাছঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে বড় দু’টি ট্রলারে করে দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা, দৌলতখান, চরফ্যাশন, শ্যামরাজ থেকে বড় সাইজের ইলিশ নিয়ে এসেছেন ১০-১২ জন ব্যবসায়ী। এসব ইলিশ টুকরিতে করে আড়তে উঠাচ্ছেন শ্রমিকরা। বিক্রির জন্য আড়তগুলোর সামনে বড় বড় স্তুপ করে সাজানো হচ্ছে। বাছাই করা বড় ছোট ইলিশের স্তুপ আবার মুহুর্তেই হাঁকডাক দিয়ে দাম হাকিয়ে বিক্রি করছেন আড়তদাররা।
ঘাটের ভাই ভাই মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ী আবদুল আজিজ বেপারী বাংলানিউজকে বলেন, গত দু’সপ্তাহে ইলিশ আমদানি হচ্ছে। ইলিশের অধিকাংশ সাইজ এক কেজির মতন। আজকের বাজারে এক কেজি ইলিশ প্রতিমণ ৩০-৩২ হাজার টাকা, এক কেজি ৪শ’ গ্রাম এবং দেড় কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিমণ ৩৬-৪০ হাজার টাকা, ৫শ’ ৬শ’ গ্রামের ইলিশ প্রতি মণ ২৪-২৫ হাজার টাকা, ২শ’ থেকে ৩শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতিমণ ১০-১২ হাজার টাকা। ছোট সাইজের ইলিশগুলো বেশিরভাগ চাঁদপুরের স্থানীয় জেলেরা পদ্মা-মেঘনা নদী থেকে আহরণ করে। এর মধ্যে জাটকা ইলিশ থাকে। মাছঘাটের শ্রমিক আমিনুর শেখ বাংলানিউজকে বলেন, দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা ইলিশের ট্রলার রাত ১১টা থেকে সকাল পর্যন্ত আসতে থাকে। রাতে আসা ইলিশ আড়তে নামালেও বিক্রি শুরু হয় সকাল ১০-১১টার পরে। গত ৩ মাস অবসর সময় কাটালেও এখন শ্রমিকরা মাছ উঠানো, প্যাকিং করা, বরফ দেওয়া এবং রপ্তানি করা গাড়িতে উঠানোর কাজে ব্যস্ত।
ভোলা জেলার চরফ্যাশন খাজুরগাইছ্যা এলাকার মাছব্যবসায়ী আব্বাস বাংলানিউজকে বলেন, বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় তাদের নিজস্ব মাছের আড়ৎ থেকে বেশি মূল্যে বিক্রির জন্য লঞ্চযোগে ১০ মণ ইলিশ নিয়ে এসেছেন। তার সঙ্গে এসেছে আরও ১০-১২জন ব্যবসায়ী। এই আড়তে বিক্রি করে আবার নিজ এলাকায় ফিরবেন। চাঁদপুর জেলা মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী সবে বরাত বাংলানিউজকে বলেন, গত দু’সপ্তাহ দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশের আমদানি বেড়েছে। তবে, অসময়ের এই ইলিশ মৌসুমে আহরণ করা মাছের স্বাদ তেমন নেই। সাধারণত এই সময় বড় সাইজের ইলিশ দেখা যায় না। গত প্রায় ১০ বছর আগে একবার এই সময়ে ইলিশের আমদানি হয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে বড় সাইজের ইলিশ এই সময়ে আমদানি হয় না। ধারণা করা হচ্ছে, সাগরের মধ্যে অনেক সময় ভূকম্পন হয়। যে কারণে ইলিশ উজানের দিকে উঠে আসে।
তিনি আরও বলেন, চাঁদপুরে বড় সাইজের ইলিশের আমদানি কম। এই ঘাটের ৬-৭জন ব্যবসায়ী দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ আমদানি করেন। এসব ইলিশ চাঁদপুরের স্থানীয় বাজারগুলোতে বিক্রি হয়। এছাড়াও কুমিল্লা, ঢাকা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, বগুড়া, দিনাজপুর, পাবনা, ময়মনসিংহ ও সিলেটে রপ্তানি করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২০
এএটি