ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মেঘনা নদীতে চলছে কারেন্ট জালে মাছ শিকার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২০
মেঘনা নদীতে চলছে কারেন্ট জালে মাছ শিকার

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে চলেছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জালে মাছ শিকার। এতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সঙ্গে ধরা পড়ছে জাটকাসহ পোনা। বেশি লাভের আশায় এ নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার করছেন জেলেরা। 

দীর্ঘদিন থেকে অব্যাহতভাবে অবৈধ কারন্টে জাল দিয়ে মাছ শিকার করা হলেও আইনের যথাযথ প্রয়োগ হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।  

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে ইলিশের উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জানা যায়, লক্ষ্মীপুরে প্রায় ৬০ হাজার জেলে মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা চালায়। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ জেলে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ মারে। জেলার রায়পুর, রামগতি, কমলনগর ও লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দীর্ঘ মেঘনা নদীতে বছরের পর বছর ধরে কারন্টে জালের ব্যবহার হয়ে আসছে। দিন-দিন এ জালের ব্যবহার আরও বাড়ছে। কিন্তু কারেন্ট জালের ব্যবহার রোধে যথাযথ প্রদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বেশি মাছ প্রাপ্তির আশায় স্থানীয় জেলেরা সুতার জালের পরির্বতে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরছে। সুতার জালে বেশি পুঁজি লাগে ইলিশ ধরা পড়ে কম এমন অভিজ্ঞাতা ও ধারণা থেকেই কারেন্ট জালে তাদের আগ্রহ। যে কারণে বছরের সব মৌসুমে জেলেরা নদীতে কারেন্টজাল দিয়ে মাছ শিকার করছেন।

এদিকে, কারেন্টজালের ব্যবহার রোধে, উপজেলা মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে মাঝে মাঝে অভিযান চালাতে দেখা যায়। তবে এর আগেই তা টের পেয়ে পালিয়ে যায় জেলেরা। যে কারণে কারেন্টজালের ব্যবহার রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

তারা বলছেন, রায়পুর ও কমলনগরে স্থায়ীভাবে কোস্টগার্ড ক্যাম্প স্থাপন ও হাট-ঘাটে জেলেদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করলে কারেন্ট জালের ব্যবহার রোধ হবে। কেননা এক্ষেত্রে জনসচেতনতা সৃষ্টি জরুরি।  
 
রামগতি উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বলেন, কারেন্টজাল, বাঁধা জাল, বেহুন্দি জাল ও মশারিজালসহ সকল অবৈধ জালের ব্যবহার রোধ করতে মৎস্য বিভাগ কাজ করছে। নদীতে নিয়মিত অভিযান করা হচ্ছে।

যোগাযোগ করলে কমলনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবদুল কুদ্দুস বলেন, মেঘনা নদীতে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অসাধু ব্যক্তিদের জেল জরিমানা করা হয়। জাটকা রক্ষায় কোস্টগার্ড, পুলিশ, মৎস্য বিভাগ কাজ করছে। অভিযান চালিয়ে কারেন্টজালসহ সব অবৈধ জালে অগ্নিসংযোগ করে ধ্বংস করা হচ্ছে।

এদিকে মেঘনাপাড়ের জেলেরা বলেন, নদীতে কারেন্ট জালের ব্যবহার বন্ধ করতে হলে এর উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। কিন্তু তা  না করে নদীতে এসে জেলেদের ধাওয়া করে, জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করে এবং জেল-জরিমানা করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলে বলেন, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। জীবিকার তাগিদে নদীতে যাই। কিন্তু কারেন্ট জালের উৎপাদন ও বাজারে বিক্রি বন্ধ না করে নদীতে এসে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে কারেন্ট জালের উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধের বিষয়ে কঠোর হওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১২০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২০
এসআর/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।