মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) সরেজমিনে রাজধানীর জয় কালী মন্দির মোড়ের হোটেল সুপার আবাসিকে গেলে দেখা যায়, পুরো হোটেলই এখন অতিথিশূন্য। ৭৯টি কক্ষের কোনোটিতেই অতিথি নেই।
২৫ মার্চ রাতেই সব অতিথিকে হোটেল ত্যাগ করানো হয়েছে বলে জানান হোটেলটির বৈদ্যুতিক কর্মী আবুল কাশেম। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এই হোটেলটি দু’টি ভবনে অবস্থিত। সব মিলিয়ে এখানে ৭৯টি কক্ষ রয়েছে। যার কোনোটিতেই এখন কোনো বোর্ডার নেই। মালিক বলেছেন, বন্ধ শেষ হলে খুলবে। এখন বন্ধ আরও বাড়ছে। জানি না কবে খুলবে।
একই দৃশ্য দেখা গেলো, রাজধানীর তোপখানা রোডের নিউ ইয়র্ক হোটেল, হোটেল এএস শামস ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল রহমানিয়া, হোটেল সেভেন স্টারেও।
করোনোর কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের তারকা হোটেলগুলো। অতিথিশূন্যতা রয়েছে প্রতিটি হোটেলেই। ৪৫টি বিভিন্ন তারকা হোটেলের মধ্যে বেশিরভাগেরই কোনো অতিথি নেই। যেগুলোর অতিথি রয়েছে, সেগুলোতেও ১০ থেকে ১২ জনের বেশি নেই।
ঢাকার বিভিন্ন তারকা হোটেলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই করোনার কারণে অতিথি খরা শুরু হয়। তবে ১৭ মার্চ মুজিববর্ষের আয়োজন ঘিরে বিদেশি প্রচুর নাগরিকের বুকিং ছিল হোটেলগুলোতে। তবে সেটি বাতিল হয়ে যাওয়ার কারণে সেখানেও বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।
দেশের তারকা হোটেল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিহা) সচিব মোহসিন হক হিমেল বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সংগঠনের ৪৫টি হোটেল রয়েছে। যার মধ্যে বেশিরভাগেই আসলে কোনো অতিথি নেই। যাদের রয়েছে, সেখানের সংখ্যাটা ১০ থেকে ১২ জনের বেশি হবে না।
তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারি থেকেই করোনা প্রভাবের কারণে হোটেল ব্যবসায় ক্ষতি শুরু হয়। এই দুই মাসে আমাদের প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিহা কি পদক্ষেপ নিচ্ছে- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই আমারা ট্যুরিজম বোর্ডের মাধ্যমে সরকারের কাছে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছি। যার মধ্যে রয়েছে- কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার জন্য একটি আর্থিক প্রণোদনা, ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ বিল মওকুফ এবং স্যালারি অন ট্যাক্সও বাতিলের প্রস্তাব করেছি আমরা।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০২০
ডিএন/এএ