বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী ৪৬ দশমিক ৬১ শতাংশ খানা (পরিবার) কৃষি নির্ভর। এ থেকে বোঝা যায় কৃষি দেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখছে।
প্রধান খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় দেশের তালিকায় উঠে এসেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে বর্তমানে নানা ধরনের ফসল উৎপাদিত হয়। তার মধ্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রধান ছয়টি ফসল হিসাব করে। এগুলো হলো আউশ, আমন, বোরো, আলু, গম ও পাট।
এছাড়া আরো ১২০টি অপ্রধান ফসলের হিসাব করা হয়েছে। সবকিছু ছাপিয়ে চাল ও আলু উৎপাদনে বিশাল সাফল্য অর্জিত হয়েছে। বর্তমানে দেশে চাল উৎপাদনের পরিমাণ ৩৬৪ লাখ মেট্রিক টন একই সময়ে আলু উৎপাদন করা হয়েছে ৯৬ দশমিক ৫৫ লাখ মেট্রিক টন।
বিবিএস সূত্র জানায়, স্বাধীনতার আগে ও পরে দেশে খাদ্য ঘাটতি থাকলে বর্তমানে দেশ খাদে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ১৯৬৯-৭০ অর্থবছরে চাল উৎপাদন ছিল মাত্র ১১৮ দশমিক ১৪ লাখ মেট্রিক টন, বর্তমানে (২০১৮-১৯) বেড়ে হয়েছে ৩৬৪ লাখ মেট্রিক টন। চার বছর আগে চাল উৎপাদন হয়েছিল ৩৪৭ মেট্রিক টন। দেশে ১১ দশমিক ০৫ লাখ হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদন করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৭৫ লাখ মেট্রিক টন আউশ, ১৪০ দশমিক ৫৫ লাখ মেট্রিক টন আমন এবং ১৯৫ দশমিক ৬১ লাখ মেট্রিক টন বোরো উৎপাদন করা হয়েছে। সরকারের যুগোপযোগী পরিকল্পনা, কৃষকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং বৈজ্ঞানিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলেই কৃষিতে এই সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে।
বিবিএস সূত্রে আরো জানা গেছে, দিন দিন আলু উৎপাদন বাড়ছে। খাদ্য হিসেবে আলু চাহিদা ব্যাপক। একইসঙ্গে দেশের চাহিদা মিটিয়ে আলু রপ্তানিও হচ্ছে। অধিক জনসংখ্যার জন্য খাবারের যে চাপ তা অনেকটা মেটাচ্ছে আলু। ১৯৬৯-৭০ সালে আলু উৎপাদন ছিল ৮ দশমিক ৯১ লাখ মেট্রিক টন। যা বর্তমানে (২০১৮-১৯) বেড়ে হয়েছে ৯৬ দশমিক ৫৫ লাখ মেট্রিক টন। স্বাধীনতার পরে আলু উৎপাদন ১১ গুণের বেশি উৎপাদিত হয়েছে। বর্তমানে ৪ দশমিক ৭১ লাখ হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদন করা হচ্ছে। তবে আলু উৎপাদনের জমি কমলেও উৎপাদন বাড়ছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৪ লাখ ৭১ হেক্টর জমিতে ৯২ দশমিক ৫৪ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন করা হয়েছিল।
দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন চিত্র নিয়ে জাতির পিতার জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে 'বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক অগ্রগতির তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বই বের করেছে। বইটি সম্পাদনা করেছেন বিবিএস এর যুগ্ম-পরিচালক (সেন্সাস উইং) রফিকুল ইসলাম।
এই প্রসঙ্গে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘জাতির পিতার জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে দেশের উন্নয়ন দলিল তৈরি করা হয়েছে। দেশের কৃষিসহ নানা সাফল্য চিত্র ফুটে উঠেছে। চাল ও আলুর উৎপাদন অনেক বেড়েছে। আমরা বইটা ছাপাতে দিয়েছি। বইটা হাতে পেলেই সব সংসদ সদস্যদের হাতে কপি তুলে দেবো। সবাই দেশের সব উন্নয়ন প্রসঙ্গে একটা সম্মুখ ধারণা পাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৫১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০২০
এমআইএস/এএটি