ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বন্যার পানি কমছে, দৃশ্যমান হচ্ছে সবজি ক্ষেতের ক্ষতি 

সাজিদুর রহমান রাসেল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১০ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২০
বন্যার পানি কমছে, দৃশ্যমান হচ্ছে সবজি ক্ষেতের ক্ষতি  মাচায় পচা সবজির গাছ শুকিয়ে আছে। ছবি: বাংলানিউজ

মানিকগঞ্জ: দেশজুড়ে সুনাম রয়েছে মানিকগঞ্জের সবজির। চলতি বছরের বন্যায় কয়েক কোটি টাকার সবজির ক্ষতি হয়েছে।

বন্যার পানি নামতে শুরু করায় চাষি তার জমির পচে যাওয়া সবজি ক্ষেতের ক্ষতির দেখতে পাচ্ছে।  

জেলায় ১ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছিল। বন্যার পানিতে ডুবে যায় সেই সবজি বাগান। এখনো পুরোপুরি ক্ষতি নিরূপণ করা যায়নি তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ২০ কোটি ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে সবজি চাষিদের।
 
কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলায় ১ হাজার ২৫০ হেক্টর, সিংগাইর উপজেলায় ১ হাজার ৮২৮ হেক্টর, সাটুরিয়া উপজেলায় ৪৪০ হেক্টর, ঘিওর উপজেলায় ২৪৫ হেক্টর, দৌলতপুর উপজেলায় ২৫০ হেক্টর, শিবালয় উপজেলায় ১৭৯ হেক্টর, হরিরামপুর উপজেলায় ২৫১ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করা হয়।  

এ বছরের চলতি বন্যায় সদর উপজেলায় ২১ হেক্টর জমির ২১০ মেট্রিক টন, সিংগাইর উপজেলায় ১ হাজার হেক্টর জমির ১ লাখ মেট্রিক টন, সাটুরিয়া উপজেলায় ৩শ হেক্টর জমির ৩ হাজার মেট্রিক টন, ঘিওর উপজেলায় ২ হেক্টর জমির ২০ মেট্রিক টন, শিবালয় উপজেলায় ১০ হেক্টর জমির ১শ মেট্রিক টন এবং হরিরামপুর উপজেলায় ২ হেক্টর জমির ২০ মেট্রিক টন সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পদ্মা, যমুনার পানি জুলাই মাসের মাঝামাঝিতে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় চলতি বছরের বন্যার পানি জেলার নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করে এবং সবজির ক্ষেত প্লাবিত হয়। সবজি ক্ষেত বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার পর পর হুর হুর করে বাজারে কাঁচা সবজির দাম সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে। আগস্টের শুরু থেকেই বন্যার পানি কমতে থাকে। পানি যত কমছে ততই চাষিদের কষ্টে ফলানো সবজি বাগানের ক্ষতির দৃশ্য জেগে উঠছে। ক্ষতির পরিমাণ বেশি হওয়ায় সবজি চাষিরা হতাশায় পড়েছেন কীভাবে এ ক্ষতি পুষিয়ে নেবেন। তাই সরকারের কাছে তারা সহযোগিতা চেয়েছেন।

সদর উপজেলার রাজিবপুর এলাকার লতিফ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমি বন্যার আগে ৮ বিঘা জমিতে বেগুন, ঢেঁড়শ, আনিজা কলার আবাদ করেছিলাম। বন্যার পানিতে ক্ষেত ডুবে যাওয়ার পর আর কোনো সবজি তুলতে পারি নাই। এখন পানি কমতে শুরু করলেও সবজি ক্ষেতে আর কিছু নাই সব সবজি মরে পচে শুকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এ বছরের বন্যায় আমার প্রায় পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।  

সাটুরিয়া উপজেলার কামতা এলাকার সবজি চাষি জামাল মিয়া বলেন, এ বারের বন্যায় আমার অনেক বেশি ক্ষতি হয়েছে। তিন বিঘা জমিতে ঢেড়শ, দুই বিঘা জমিতে বেগুন, এক বিঘা জমিতে কুমড়াসহ ধুন্দুল আবাদ করেছিলাম। বন্যার পানি আসায় ক্ষেতের সব সবজি ডুবে যায়। এখন পানি কমলেও সবজি পচে জাংলায় শুকিয়ে আটকে আছে। পানি পুরোপুরি কমে গেলে ফের নতুন করে সবজি আবাদ করবো এবং বন্যায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে চেষ্টা করবো।

মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহজাহান আলী বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, চলতি বছরের বন্যায় সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এমনিতেও মানিকগঞ্জ সবজি চাষে বিখ্যাত তবে এ বছরের বন্যায় প্রায় কয়েক কোটি টাকার সবজি পচে ক্ষেতেই নষ্ট হয়েছে। যে সব সবজি চাষিরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের প্রণোদনা দেওয়াসহ নতুনভাবে সবজি উৎপাদনের বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।
 
বাংলঅদেশ সময়: ১০০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।