ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কাঁচাপাট রপ্তানিতে শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২০
কাঁচাপাট রপ্তানিতে শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি

খুলনা: প্রতি টন কাঁচা পাট রপ্তানির জন্য ৮০০ টাকার ওপরে শুল্ক ধার্য করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে দেশের বেসরকারি পাটকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএসএ) এবং বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ)। তাদের এ প্রস্তাবকে পাটশিল্পের জন্য আত্মঘাতী হিসেবে অভিহিত করেছে বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএ)।

তাদের দাবি, সরকার ওই প্রস্তাব বাস্তবায়ন করলে তা পাটশিল্পের জন্য বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে এবং এতে কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে দেশের পাটের বাজার চলে যাবে অন্য দেশে এবং পাটশিল্পের সঙ্গে জড়িত বৃহৎ জনগোষ্ঠী কর্মহীন হয়ে পড়বে।

রোববার (৩০ আগস্ট) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএ) সভাপতি সৈয়দ আলী।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে পাট অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী এবছর দেশে ৯২ দশমিক ৩৮ লাখ বেল পাট উৎপাদিত হতে পারে বলে প্রথমে প্রকাশ করা হয়। পরবর্তীতে বন্যার কারণে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৮৪ দশমিক ১৪ লাখ বেল। দেশের অভ্যন্তরীন কাঁচা পাটের চাহিদা প্রায় ৫৫ লাখ বেল (সরকারি জুট মিলগুলোর চাহিদা প্রায় ১৩ লাখ বেল এবং বেসরকারি জুট ও স্পিনিং মিলসগুলোর চাহিদা প্রায় ৪২ লাখ বেল)। কিন্তু সরকারি জুট মিলগুলো বন্ধের কারণে তাদের প্রায় ১৩ লাখ বেল পাটের চাহিদা থাকছে না। ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ কাঁচা পাটের চাহিদা এখন সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ বেল। বন্ধ হয়ে যাওয়া সরকারি জুটমিলগুলো তাদের মজুদ করা বিপুল পরিমাণ পুরাতন কাঁচাপাট তাদের নিজস্ব সরবরাহকারীদের পাওনা টাকার পরিবর্তে ফেরত দেওয়ায় সেই পাটও বাজারে চলে আসবে। এরফলে এবছর প্রায় ৪০ লাখ বেল কাঁচাপাট উদ্বৃত্ত থেকে যাবে। উদ্বৃত্ত পাট থেকে আমরা প্রতি বছর মাত্র ৮ থেকে ৯ লাখ বেল কাঁচাপাট বিদেশে রপ্তারি করে থাকি।

১৯৮৪ সাল হতে ভ্রান্ত ধারণার ভিত্তিতে বিভিন্ন সময়ে কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধ করার কারণে পাটের অভাবে বিদেশের অনেক জুট মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের বৈদেশিক বাজার ২৮ থেকে ৩০ লাখ বেল হতে ৮ থেকে ৯ লাখ বেলে সংকুচিত হয়েছে। ইচ্ছা করলেও বৈদেশিক ক্রেতার অভাবে আমরা এখন অতিরিক্ত পাট রপ্তানি করতে পারবো না। প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে পাটের উৎপাদনও এখন অনেক বাড়েছে। তাই উদ্বৃত্ত পাট ব্যবহারের জায়গা বের করতে না পারলে অধিক পাট উৎপাদনের সুফল আমরা পাবো না। তাই কাঁচাপাট রপ্তানি সচল রাখার মাধ্যমে কাঁচাপাটের আন্তর্জাতিক বাজার ধরে রাখা এবং আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।  

কিন্তু দুঃখের বিষয় বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন ভুল তথ্যের মাধ্যমে দেশে পাটের সংকট দেখিয়ে কাঁচাপাট রপ্তানির ওপর ২৫০ মার্কিন ডলার অথাৎ প্রতি মণ পাটে ৮০০ টাকার ওপরে রপ্তানি শুল্কারোপের জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব করছে এবং কাঁচাপাট রপ্তানি বন্ধের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজেএ।

সৈয়দ আলী আরও বলেন, তাদের উদ্দেশ্য সফল হলে পাটের বাজারে ধস নামবে এবং কোটি কোটি কৃষক পাটের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে আগামীতে পাট চাষে উৎসাহ হারাবে। এছাড়া কাঁচা পাট রপ্তানি কার্যক্রমের সঙ্গে খুলনা, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, উত্তরবঙ্গসহ সারাদেশে সম্পৃক্ত লক্ষাধিক শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়ে পড়বে। আর ব্যবসার ধারাবাহিকতা নষ্ট হওয়ায় বর্তমানে যেটুকু কাঁচা পাটের আন্তর্জাতিক বাজার আছে, তাও আর থাকবে না।

এসময়ে খুলনা মহানগর আ’লীগের সভাপতি সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বিজেএর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২০
এমআরএম/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।