সিলেট: মিনি কক্সবাজারখ্যাত দেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকি। এই হাওরের মিঠাপানিতে ধরা পড়ছে রুপালি ইলিশ।
বিগত কয়েক বছর ধরে জালে ইলিশ ধরা পড়ছে বলেও জানিয়েছেন জেলেরা। অবশ্য এবার অন্য বছরের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে। আর হাওরপাড়ের বিভিন্ন বাজারেও কমবেশি মিঠা পানির ইলিশের দেখা মিলছে।
সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ঘিলাছড়া ইউনিয়নের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন হাওরে জেলেদের ‘পানজাল’ জাল দিয়ে মাছ ধরতে দেখা যায়। নাইলন সুতোয় বোনা জালটির নিচের অংশে বড় আকারের রশিতে ইট লাগানো এবং উপরিভাগেও ছোট নাইলনের রশিতে সাদা প্লাস্টিকের বল বেঁধে দেওয়া, যাতে জালটি পানিতে ভেসে থাকে। নৌকাযোগে জেলেরা জাল ফেলে আসেন হাওরের মাঝে। জেলেদের ১০/১২ জন দুই প্রান্তের রশি ধরে টেনে সেই জাল টেনে তীরে ভেড়ান। এরপর রুই-কাতলা, ইলিশের দেখা মেলে। জালে এসব মাছ ছাড়াও গ্রাসকার্প, বোয়াল, সরপুঁটি, কালিবাউশসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ উঠছে।
জেলেরা জানান, বিশেষ করে বর্ষা ও শরৎকালে হাওরে বড় মাছ ধরতে পাঞ্জাল ফেলা হয়। সেই জালে ওঠে ঝাঁকে ঝাঁকে ছোট-বড় রুপালি ইলিশ।
হাকালুকিপাড়ের জেলে সেবুল মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছর এই মৌসুমে রুপালি ইলিশ ধরা পড়ে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন জাতের ছোট-বড় সুস্বাদু পানির মাছ মেলে।
মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, হাকালুকি হাওরে ছোট-বড় পাঁচটি পাহাড়ি নদী এসে মিলিত হয়েছে। আর হাকালুকির অভ্যন্তরে থাকা জুড়ি নদী মিলিত হয়েছে কুশিয়ারায়। ফলে কুশিয়ারা নদীতে অবস্থানরত ইলিশ হাকালুকিতে প্রবেশ করায় ইলিশের পরিমাণ বেড়েছে। তাছাড়া ইলিশ মাছ প্রজননের জন্য স্রোতের বিপরীতে আসতে থাকে। আর হাকালুকি হাওরের পানি কুশিয়ারা নদী হয়ে পদ্মায় গিয়ে মিলিত হওয়ায় ইলিশ মাছের শেষ আশ্রয়স্থল হয় হাকালুকিতে। তাই বর্ষা ও শরৎকালে হাকালুকি হাওরে ইলিশের দেখা মেলে।
জেলেদের মধ্যে পঞ্চাশোর্ধ্ব আব্দুল হক বলেন, জালে প্রতিদিনই কমবেশি ইলিশ ধরা পড়ছে। এসব ইলিশ ৩শ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের। জালে ইলিশ ধরা পড়ায় মহাখুশি আমরা।
খোঁজে নিয়ে জানা যায়, হাকালুকি হাওরে নানা প্রজাতির দেশি মাছের পোনা সরকারের মৎস্য বিভাগ অবমুক্ত করে। ফলে হাকালুকিতে ব্যাপক মাছ উৎপাদন হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
এনইউ/এএ