ঢাকা: বিদায়ী সপ্তাহে (২০-২৪ সেপ্টেম্বর) দরপতনে শেষ হয়েছে পুঁজিবাজারের লেনদেন। একই সঙ্গে দেশের প্রধান শেয়ারবাজারে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন কমেছে।
সপ্তাহ ব্যাবধানে উভয় শেয়ারবাজারে লেনদেন কমেছে ১১০৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ডিএসইতে ১০৬১ কোটি এবং সিএসইতে ৪৩ কোটি টাকা কমেছে।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে, সপ্তাহ ব্যাবধানে সূচক ও লেনদেন কমাকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তাদের মতে, বেশ কয়েক সপ্তাহ টানা উত্থানের পর গত সপ্তাহের পতন স্বাভাবিক। তবে বাজারে নতুন আইপিও আনার ক্ষেত্রে বিএসইসিকে আরও কঠোর হওয়ারও প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
এ ব্যাপারে বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রশীদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, গত সপ্তাহে সূচক ও লেনদেন কমাটা আমরা বাজার সংশোধনী হিসেবে দেখছি। গত কয়েক সপ্তাহে পুঁজিবাজারে সূচকের টানা উত্থান ও লেনদেন বেড়েছে। গত সপ্তাহে সূচক কমা স্বাভাবিক, বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরছে।
তিনি আরো বলেন, এই মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণ সংস্থার উচিত হবে যে সমস্ত কোম্পানির পেইড অব ক্যাপিটাল দুইশো কোটি টাকার উপরে রয়েছে তাদেরই পুঁজিবাজারের নিয়ে আসা। এতে করে বাজার আরো সমৃদ্ধ হবে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিদায়ী সপ্তাহে ৫ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৪ হাজার ৫৭৩ কোটি ৭২ লাখ ৭০ হাজার ৩৯৩ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের সপ্তাহ থেকে ১ হাজার ৬১ কোটি ৬০ লাখ ৫১ হাজার ২৪৩ টাকা বা ১৮.৮৩ শতাংশ কম হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৫ হাজার ৬৩৫ কোটি ৩৩ লাখ ২১ হাজার ৬৩৬ টাকার।
ডিএসইতে বিদায়ী সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে ৯১৪ কোটি ৭৪ লাখ ৫৪ হাজার ৭৮ টাকার। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১২৭ কোটি ৬ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৭ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে গড় লেনদেন ২১২ কোটি ৩২ লাখ ১০ লাখ ১০ হাজার ২৪৮ টাকা কম হয়েছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১২৫.৮৮ পয়েন্ট বা ২.৪৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯৭৮.৭৭ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৩৬.৭৬ পয়েন্ট বা ৩.১৬ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৬০.৪১ পয়েন্ট বা ৩.৪২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১১২৬.৩০ পয়েন্টে এবং ১৭০১.১৯ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৫৯টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১২৫টির, কমেছে ২২৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দর।
সপ্তাহ ব্যাবধানে ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ প্রতিষ্ঠান হলো— বিবিএস ক্যাবল, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড, জেএমআই সিরিঞ্জ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, অ্যাকটিভ ফাইন, সিঙ্গার বাংলাদেশ, খুলনা পাওয়ার ও ড্রাগন সোয়েটার লিমিটেড।
গত সপ্তাহে ডিএসইর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ৩.০৭ শতাংশ কমেছে। সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই ছিল ১৩.৭২ পয়েন্টে। যা সপ্তাহ শেষে ১৩.৩০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে পিই রেশিও ০.৪২ পয়েন্ট বা ৩.০৭ শতাংশ কমেছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ১৩১ কোটি ৯৮ লাখ ৮৮ হাজার ৬৪ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১৭৫ কোটি ৪১ লাখ ২৩ হাজার ৮৩৮ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ৪৩ কোটি ৪২ লাখ ৩৫ হাজার ৭৭৪ টাকা বা ২৪.৭৫ শতাংশ কমেছে।
সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩৫৪.৪৭ পয়েন্ট বা ২.৪৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ২১৯.২৩ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩২৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১১৩টির বেড়েছে, ১৯২টির কমেছে এবং ২০টির প্রতিষ্ঠানের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০
এসএমএকে/এমজেএফ