ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সঞ্চয়পত্র কিনতে আর কাগজপত্র লাগবে না

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২১
সঞ্চয়পত্র কিনতে আর কাগজপত্র লাগবে না

ঢাকা: গ্রাহকের সুবিধার্থে সঞ্চয়পত্র ক্রয়-বিক্রয় কার্যক্রম আরও সহজ হচ্ছে। কোনো গ্রাহক যে কোনো স্কিমের সঞ্চয়পত্র একবার কিনলে, পরে আরও সঞ্চয়পত্র কিনতে ওই গ্রাহককে আর কোনো ডকুমেন্ট (ক্রেতা ও নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, ছবি, টিআইএন) দিতে হবে না।

প্রথমবার দেওয়া ডকুমেন্ট ব্যবহার করেই পরে ইচ্ছেমত সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে।  

সঞ্চয়পত্র ক্রয়-বিক্রয় কার্যক্রমের সংশোধিত বিধিমালার মাধ্যমে অনলাইনে একটি প্লাটফর্মে এনে গ্রাহকদের এই সুবিধা প্রদানের কাজ চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর। এটি কার্যকর হলে বর্তমানে সঞ্চয়পত্রের প্রচলিত চারটি স্কিমের পৃথক নীতিমালা বিলুপ্ত হবে। ব্যাংক ও ডাকঘরের কার্যক্রম সহজ হওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে সেবা নিতে পারবেন গ্রাহকরা।

এ বিষয়ে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের পরিচালক মো. শাহ আলম বাংলানিউজকে বলেন, বিভিন্ন সময় বিচ্ছিন্নভাবে কিছু অর্ডার হয়েছে। আমাদের যে চারটি সঞ্চয় স্কিম আছে। অনলাইন সিস্টেম চালুর ফলে কিছু কিছু বিষয় নতুন করে যুক্ত হয়েছে। যেমন- জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) লাগবে। এগুলো পুরনো আইনে ছিল না। এগুলোকে যুক্ত করে সঞ্চয়পত্র সংশোধিত বিধিমালা নাম দেওয়া হয়েছে।

মো. শাহ আলম আরও বলেন, সঞ্চয়পত্র ক্রয়-বিক্রয় কার্যক্রম ডিজিটাইজেশনের অংশ হিসেবে সঞ্চয়পত্রের চারটি স্কিমের জন্য একটি বিধিমালা করা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত খসড়া অনুমোদনের জন্য অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদনের পর নতুন নীতিমালা কার্যকর হলে গ্রাহক একবার ডকুমেন্ট দিলে সবগুলো স্কিমের সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন। ব্যাংক ও ডাকঘরের কার্যক্রম সহজ হবে।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে পাঁচ বছর মেয়াদী পরিবার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিনমাস অন্তর অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পেনশনার সঞ্চয়পত্র সরকারের ব্যয় ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ কর্মসূচির অধীতে প্রনীত সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে।

তিনমাস অন্তর অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র বিক্রি হচ্ছে সঞ্চয়পত্র বিধিমালা ১৯৭৭ মোতাবেক। পাঁচ বছর মেয়াদী পরিবার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হচ্ছে পরিবার সঞ্চয়পত্র বিধিমালা ২০০৯ এবং পেনশনার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হচ্ছে পেনশনার সঞ্চয়পত্র বিধিমালা ২০০৯ মোতাবেক। পাঁচ বছর মেয়াদী পরিবার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারেন ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী নারী, প্রতিবন্ধী পুরুষ-মহিলা ও ৬৫ বছরের উর্ধ্বে নারী-পুরুষ। পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র ও তিনমাস অন্তর অন্তর মুনাফা স্কিম ক্রয় করতে পারে নারী-পুরুষ উভয়। পেনশনার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারে অবসর প্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং মারা যাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীর উত্তরাধিকারগণ। এগুলোর জন্য বিভিন্ন সময় অর্ডার জারি হয়েছে। এসব অর্ডারের সঙ্গে আরও কিছু বিষয়টি যুক্ত করে সঞ্চয়পত্র সংশোধিত বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এসব সঞ্চয়পত্র আলাদা আলাদা বিধিমালার মাধ্যমে বিক্রয় করা হলেও ক্রেতাকে প্রায় একই ধরনের ডকুমেন্ট দিতে হয়।

সঞ্চয়পত্রে কালো টাকার বিনিয়োগ বন্ধ, প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছানো নিশ্চিত করতে সরকার ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি অনলাইনে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কার্যক্রম চালু করে সরকার। আরোপ করা হয় নতুন কয়েকটি শর্ত। ৫০ হাজার টাকার বেশি অর্থের সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের জন্য টাকা দিতে হয় চেকের মাধ্যমে। দুই লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনলে দিতে টিআইএন সনদ।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২১
এসই/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।