ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বিনাপ্রশ্নে আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ দাবি 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২২
বিনাপ্রশ্নে আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ দাবি 

ঢাকা: বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখলে আগামী ২/৩ বছরে আবাসন খাতে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে বলে জানিয়েছেন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) প্রেসিডেন্ট আলমগীর শামসুল আলামিন। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাবে বলেও জানান তিনি।

শনিবার (১৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট।

বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখাসহ জমি ও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন ব্যয় হ্রাস এবং সেকেন্ডারি বাজার ব্যবসা সৃষ্টির সুযোগ তৈরি করা; বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে হাউসিং লোন হিসেবে ২০ হাজার কোটি টাকার ফিনান্সিং তহবিল গঠন করা এবং নির্মাণসামগ্রী মূল্য হ্রাস করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা তৈরির দাবি জানা তিনি।

আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, আমাদের দাবি সমূহ সম্পৃক্ত করা হলে এই খাত সরকারের রাজস্ব আয়ে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে এবং সাড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন ঝুঁকিমুক্ত হবে। কারণ নতুন সম্পদ সৃষ্টি প্রবৃদ্ধিকে সরাসরি ধনাত্মক করে। অন্যথায় এ খাতের সাথে যুক্ত সকল ব্যবসায়ীরা মারাত্মক সমস্যার মুখোমুখি হবেন, সর্বোপরি দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইতিপূর্বে আবাসন শিল্পের সকল সমস্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাশে থেকেছেন, নির্দেশনা ও পরামর্শ দিয়েছেন। এই শিল্পের বর্তমান সংকটেও আমাদের সাথে থাকবেন এমনটাই প্রত্যাশা এই খাতের বিনিয়োগকারীদের। আমরা আশা করি, সরকার বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনা করবে। বাজেট পাসের আগে আমাদের দাবিগুলো বিবেচনার অনুরোধ জানাই সরকারের কাছে।

রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, রিহ্যাবের বাজেট প্রস্তাবনায় আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলাম স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনাপ্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখা। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিনাপ্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় ২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অর্থনীতির মূল ধারায় এসেছে। সরকার ২ হাজার কোটি টাকার ওপরে রাজস্ব পেয়েছে। এই টাকা দেশে বিনিয়োগ না হলে তার গন্তব্য কোথায় তা আপনারা নিশ্চয়ই জানেন। বর্তমানে ডলারের সংকট কেন তৈরি হয়েছে সেটাও আপনারা জানেন। গত বাজেট অনুমোদনের পর অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগ সম্পর্কে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যার অভাবে বিনিয়োগ কম হয়েছে। স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনাপ্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত থাকলে অর্থনীতিতে একটা ভালো সুফল আসবে।

তিনি বলেন, নানাবিধ কারণে বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনীতি টালমাটাল। আগামীতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে আরও বড় ধাক্কা লাগতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। সেটির প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মানি ট্রাফিকিং রোধ করার চেষ্টা করছে। স্ব স্ব দেশ বৈদেশিক মুদ্রা কীভাবে দেশের ভেতরে রাখা যায় তার ব্যবস্থা করছে। কাজেই আমরা এই অবস্থায় যদি অপ্রদর্শিত অর্থ পাচারের সুযোগ না রেখে মূলধারার অর্থনীতিতে নিয়ে আসতে পারি তবে সরকারের রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং আসন্ন সংকট মোকাবিলা করা সহজ হবে।

রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট বলেন, বিজ্ঞ অর্থমন্ত্রী গত ১৫ জুন সরকারি অর্থনৈতিক ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে বলেছেন, ‘অপ্রদর্শিত অর্থ উৎপাদনের জন্য বিদ্যমান ব্যবস্থাটাই দায়ী’। হঠাৎ করে বা রাতারাতি সিস্টেম পরিবর্তন করা সম্ভব না। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, নিবন্ধন ব্যয় ১২.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২-৩ শতাংশে নিয়ে এসে ধীরে ধীরে সিস্টেম পরিবর্তন করলে তবেই সঠিক মূল্যে রেজিস্ট্রেশন হবে এবং সার্বিক অর্থনীতিতে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ বলে গণ্য করা যাবে। ঘোষিত বাজেটে পাচারকৃত টাকা দেশে আনার বিষয়ে আইন করা হয়েছে, এটি সাহসী পদক্ষেপ কিন্তু দেশ থেকে যাতে টাকা পাচার না হয়, সেদিকেই আমাদের বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। বিনা প্রশ্নে উত্তম বিনিয়োগের সুযোগ ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে নির্দেশিত নির্দেশনার আদলে এখন বাস্তবসম্মত ও সময় উপযোগী।

সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্তেখাবুল হামিদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট কামাল মাহমুদ, নজরুল ইসলাম দুলাল ও লায়ন শরীফ আলী খানসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০১ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২২
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।