ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দিনে ২০ কেজি খাবার খায় ‘কালা বাদশা’, সঙ্গে ডাবের পানি-সেমাই! 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২২
দিনে ২০ কেজি খাবার খায় ‘কালা বাদশা’, সঙ্গে ডাবের পানি-সেমাই! 

নরসিংদী: দিনে ২০ কেজি দানাদার খাবার খায় ‘কালা বাদশা’, সঙ্গে থাকে অন্তত তিনটি ডাবের পানি, কলা, সেমাই। গোসল করানো হয় প্রতিদিন।

এভাবেই আদরে যত্নে বড় করা হয়েছে কালো বিশালদেহী গরুটিকে। এখন ‘কালা বাদশা’র ওজন ২৬ মণ। এবারের কোরবানির ঈদে নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার মানুষের নজড় কেড়েছে গরুটি। কোনো মোটাতাজাকরণ ওষুধ না খাইয়ে শুধুমাত্র দেশীয় পদ্ধতিতে লালন পালন করে ‘কালা বাদশা’কে বড় করেছেন শৌখিন খামারি গৃহবধূ শাহানারা বেগম।
 
যেমন নাম তার তেমনি আচরণ, রোদে যেতে পারে না। সারাক্ষণ ফ্যানের নিচে রাখতে হয়। খাওয়া-দাওয়ায়ও রুচির পরিচয় মেলে। স্বাভাবিক খাবারের সঙ্গে দিতে হয় সরবি কলা, ডাবের পানি ও সেমাই। এটিই মনোহরদীর সবচেয়ে বড় কোরবানির পশু। দৃষ্টিনন্দন কালা বাদশার দাম হাঁকা হচ্ছে আট লাখ টাকা। কালা বাদশাকে দেখতে প্রতিদিন বাড়িতে ভিড় করছেন ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা।

মনোহরদী পৌরসভার আকন্দ বাড়ির সৌদি প্রবাসী বকুল আকন্দের স্ত্রী শাহানারা বেগম শখের বসে গরু লালন পালন করেন। এবার তার খামারে তিনটি গরু রয়েছে। এর মধ্যে ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টির নাম রেখেছেন কালা বাদশা। কালা বাদশার উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্জি, বয়স চার বছর।  

এক হাজার ৪০ কেজি ওজনের কালা বাদশাকে চার বছর আগে প্রতিবেশীর কাছ থেকে কিনেছিলেন শাহানারা।
 
কালা বাদশাহকে প্রতিদিন খড়, ভুসি, বুট, ছোলা, খেসারির ডাল, মসুর ছোলা ও গুড় খাওয়ানো হয়। আর গরমে ঠাণ্ডা রাখার জন্য প্রতিদিন তিন থেকে চারটি ডাবের পানি খাওয়ানো হয়। গোসল করানো হয় প্রতিদিন। দিনে বাদশার ২০ কেজি দানাদার খাবার লাগে। তাতে প্রতিদিন প্রায় হাজার টাকা খরচ হয়।  

গত বুধবার (৬ জুলাই) মনোহরদী বাসস্ট্যান্ডে কোরবানির পশুর হাটে কালা বাদশাকে বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন শাহানারা বেগম। হাটে কালা বাদশাকে দেখার জন্য মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। কেনার আগ্রহ দেখিয়ে করছেন দরদাম। হাকিম উদ্দিন নামে একজন কালা বাদশা কেনার আগ্রহ নিয়ে দরদাম করছিলেন।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এবার একটি দৃষ্টিনন্দন পশু কোরবানি দিতে চাই। হাটে কালা বাদশাকে দেখে পছন্দ হয়েছে। দামদর করছি। সাধ্যের মধ্যে চলে এলে কিনে ফেলব।

শাহানারা বেগমের ভাগ্নে রেদোয়ান হোসেন রোমান বলেন, আমরা চার বছর ধরে খুব যত্ন করে কালা বাদশাকে লালন পালন করেছি। বর্তমানে গরুর খাবারের দাম খুব বেশি। যার কারণে কালা বাদশার পেছনে আমাদের অনেক টাকা খরচ হয়েছে। যদি আট লাখ টাকায় আমরা কালা বাদশাকে বিক্রি করতে পারি, তাহলে আমাদের লাভ হবে।

শাহানারা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে খুব যত্ন করে গরুটি পুষেছি। কোনো ওষুধ ব্যবহার করা হয়নি। কালা বাদশা উপজেলার প্রাণিসম্পদ মেলায় সেরা নির্বাচিত হয়েছে। আমরা কালা বাদশাকে বাড়িতেই বিক্রি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ভালো দাম না পাওয়ায় হাটে নিয়ে এসেছি। এখন পর্যন্ত কারো সঙ্গে আমাদের দামের বনিবনা হয়নি। কালা বাদশার দাম পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। আমরা আরও বেশি আশা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪১ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২২
এসআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।