ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

নাম পরিবর্তনেও সচল হয়নি বিএম কলেজের ক্যান্টিন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩
নাম পরিবর্তনেও সচল হয়নি বিএম কলেজের ক্যান্টিন

বরিশাল: প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর বিদ্যাপিঠ সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ক্যান্টিনের নাম পরিবর্তন করেও সচল রাখা যায়নি। আর দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্টিনটি বন্ধ ছিল।

এজন্য এটি এখন সংস্কার না করে চালু করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। যদিও ভোগান্তি লাঘবে ক্যান্টিনটি দ্রুত সময়ের মধ্যে চালুর দাবি জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

তারা বলছেন, বিএম কলেজের বিশাল ক্যাম্পাসের মাঝামাঝি স্থানে ক্যান্টিনটির অবস্থান। তবে এটি বন্ধ থাকায় এখন তাদের ক্লাসের ফাঁকে অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে নাস্তা করে আসতে হয়। আর ক্যাম্পাসের বাইরে ভালো মানের খাবারের দোকান নেই। এজন্য অনেক সময় বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে খাবার।  

সূত্র বলছে, শতবর্ষের পুরোনো সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ক্যান্টিনটি শিক্ষার্থীদের পদচারণায় সব সময় মুখর থাকতো। পরিচালনাকারীরা পাল্টে যাওয়ায় কয়েকবছর আগে ক্যাফে জীবনানন্দ নামে ক্যান্টিনটি যাত্রা শুরু করে, এরপর মাত্র দুই বছরের মতো সচল ছিল ক্যান্টিনটি। মহামারির করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ক্যান্টিনটি বন্ধ রয়েছে। আর দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় মরিচা ধরেছে ক্যান্টিনের সদর দরজার তালাতেও। ধূলোর আস্তরে ঢাকা পড়েছে কলেজ ক্যান্টিনের ভেতরে থাকা আসবাবপত্রেও। এক কথায় চটকদার সাইনবোর্ড ছাড়া ক্যান্টিনের কিছুতেই নেই নতুনত্বের ছোঁয়ায়।



সজীব নামে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী বলেন, ব্রজমোহন কলেজের ২২টি বিভাগে অনার্স, মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছাড়াও এইচএসসি, ডিগ্রি মিলিয়ে ৩০ হাজার ওপরে শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছেন। বর্তমানে বন্ধ থাকা ক্যান্টিনের সামনের বারান্দা ও মাঠে শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত আড্ডা দিচ্ছেন। তবে ভেতরে প্রবেশের সুযোগ আর হচ্ছে না। জানালা দিয়ে ক্যান্টিনের ভেতরের অবক্ষয় দেখা ছাড়া এখন আর উপায় নেই।

এদিকে ক্যান্টিনটি ইতোমধ্যে পরিচালনা করে খুব একটা বাকি-বাট্টা বাজতো না জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক একজন ম্যানেজার বলেন, বরিশাল বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী বিএম কলেজে।  তাই এখানে বাকি খাওয়ার প্রচলন তেমন একটা ছিল না, তবে কিছু নেতারা তাদের নামে খাওয়া-দাওয়া করালেও টাকা দিয়ে দিতেন ঠিকভাবে। যারা দিতেন না তাদের সংখ্যা একেবারেই কম, ফলে ক্যান্টিন চালিয়ে লোকসানও হতো না ইজারাদারের।

বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সরকারি ব্রজমোহন কলেজ শাখার সভাপতি আরাফাত হোসেন শাওন বলেন, ক্যান্টিনটি ভালোভাবেই চলছিল। করোনার আগে ছাত্রলীগের নেতারা এটিকে পরিচালনার দায়িত্ব নেন।  তবে যতদূর শুনেছি অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ক্যান্টিনটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। কলেজ প্রশাসন ক্যান্টিন চালুর জন্য উদ্যোগী না হলে আসবাবপত্রগুলো নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ভবনটিও জরাজীর্ণ হয়ে পড়বে।



এদিকে কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আলামিন সরোয়ার বলেন, ক্যান্টিনটি কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি, তবে এটি বন্ধ থাকায় এখন সংস্কারের প্রয়োজন। সংস্কার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কলেজ ক্যান্টিন চালু করার কথাও বলেন তিনি।

২০১৭ সালের শেষের দিকে ব্রজমোহন কলেজ ক‌্যান্টিনের পরিচালনার দায়িত্ব নেয় বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ও কলেজের ছাত্রলীগ নেতা আতিকুল্লাহ মুনিম এবং তার কয়েকজন সহযোগী। তখন কলেজ ক্যান্টিনের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ক্যাফে জীবনানন্দ। ক্লাস কার্যক্রম শুরু হলেও সেই করোনার শুরুর দিক থেকে টানা বন্ধ কলেজ ক‌্যান্টিন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৩
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।