ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

নন্দনপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২৩
নন্দনপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

চাঁদপুর: জেলার কচুয়া উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৫টি পদে কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সাইফুল ইসলাম রফিক।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে তিনি অনিয়মের বিষয় তুলে ধরে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান বরাবর একটি আবেদন করেন।

এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে আবেদনে।  

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সভাপতি পদে মো. ইসমাইল হোসেন সিরাজী দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে সভাপতি পদে রয়েছেন। তখন থেকে বিদ্যালয়ের সভাপতি নিজের স্বেচ্ছাচারিতায় বিভিন্ন পদে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে অর্থ বাণিজ্য করে নিয়োগ দিয়ে আসছেন। ফলে অদক্ষ ও অযোগ্যরা শিক্ষকতার সুযোগ পেয়েছেন। অদক্ষ ও অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে বিদ্যালয়ের সুনাম ও ফলাফল নিয়ে এলাকার সচেতন মহল চরম ক্ষুব্ধ। গত ২০ জুলাই তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি ৫টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরে সভাপতি নিজের পছন্দের লোক দিয়ে নিয়োগ বোর্ড গঠন করে। নিয়োগ বোর্ড গঠন করার পর এলাকার সচেতন মহল ও বিদ্যালয়ের শুভাকাঙ্ক্ষীরা সভাপতিকে বার বার নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য অনুরোধ করেন। তার পরেও তিনি ২৪ নভেম্বর (শুক্রবার) নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করেছেন।

অভিযোগকারী পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, সভাপতির এই নিয়োগ নিয়ে এলাকার সচেতন মহল চরম ক্ষুব্ধ ও হতাশা ব্যক্ত করেছেন এবং নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে সংঘর্ষের সম্ভাবনা রয়েছে। সভাপতি স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে ৫টি পদেই প্রার্থী ঠিক করে রেখেছেন।

তিনি আরও বলেন, অফিস সহকারী পদের প্রার্থী ফয়েজ আহমেদ, নৈশ প্রহরী পদে মো. মাইন উদ্দিন, আয়া পদে ঝর্না আক্তার। অফিস সহকারী পদের জন্য ৫ লাখ টাকা, নৈশ প্রহরী ও আয়া পদের জন্য ৪ লাখ টাকা লাগবে। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে অন্য পছন্দের প্রার্থী ঠিক করে রেখেছেন।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির আরেক সদস্য মো. রমিজ মুন্সি বলেন, সভাপতি বলেছেন কোনো পদের জন্য কমিটির কোনো সদস্য সুপারিশ করতে পারবেন না। সভাপতি নিজেই সর্বেসর্বা। আপনারা কষ্ট করছেন আপনাদের চাহিদা আমি পূরণ করবো। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও ডিজির প্রতিনিধিকে আমি ম্যানেজ করব।

এই বিষয়ে বক্তব্যের জন্য সভাপতি ইসমাইল হোসেন সিরাজীর ব্যক্তিগত মোবাইলফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হয়। তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

চাঁদপুর জেলা শিক্ষা অফিসার প্রাণ কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, নন্দনপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়োগ সম্পর্কিত একটি অভিযোগের কপি আমিও পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। যদি তদন্তে কোনো অনিয়ম পাওয়া যায়, তাহলে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হবে। এছাড়া একটি তদন্তকালীন সময়ে আরেকটি তদন্ত করা সম্ভব নয়। যে কারণে আমাদের দপ্তর এখন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে না।

কচুয়া উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মাসুদ হাসান বলেন, অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করার জন্য আমাকে ২১ নভেম্বর দায়িত্ব দেওয়া হয়। খুব দ্রুত সময়ে তদন্ত করতে বলায় বুধবার তদন্ত শেষে আমি আজ বৃহস্পতিবার তদন্ত প্রতিবেদন ইউএনও বরাবর জমা দিয়েছি। কারণ শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) নিয়োগ পরীক্ষা। এখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অভিযোগের সত্যতার বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।

কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইকবাল হাসান জানান, নন্দনপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হয়েছে। এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।