বরিশাল: শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভাইস চ্যান্সেলর (উপ উপাচার্য) অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানি ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মামুন অর রশিদকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব এ এস এম কাসেম স্বাক্ষরিত রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জারি করা পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এছাড়া অপর এক প্রজ্ঞাপনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলমকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণকালীন ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) নিয়োগের পূর্ব পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।
ওই প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালনকালে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতনভাতা প্রাপ্য হবেন, এছাড়া বিধি অনুযায়ী পদ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন, পাশাপাশি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন এবং রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজন মনে করলে যে কোনো সময় এ নিয়োগ বাতিলও করতে পারবেন।
অপরদিকে পৃথক তিন প্রজ্ঞাপনে অব্যাহতি পাওয়া ভাইস চ্যান্সেলর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন, প্রো ভাইস চ্যান্সেলর (উপ উপাচার্য) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানি এবং ট্রেজারার পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিজ্ঞান এবং ভেটেরিনারি অনুষদের মৌলিক বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মামুন অর রশিদকে মূলপদে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ দিন ধরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রথমে ২২ দফা পরে চার দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। দাবি পূরণ না হওয়ায় তারা উপাচার্য অপসারণের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম শাটডাউন, উপাচার্যের বাসভবনে তালা ও একাডেমিক শাটডাউন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সোমবার থেকে অনশন ও মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে দক্ষিণবঙ্গ ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও একাত্মতা প্রকাশ করেন। এমনকি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে চারজন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাঁচটি পদ থেকে পদত্যাগও করেন। সবশেষ মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় উপাচার্যর অব্যাহতির খবরে শিক্ষার্থীরা ব্লকেড কর্মসূচি থেকে সরে ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল করেন। এছাড়া শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান।
এমএস/আরআইএস