নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রায় এক হাজার সরকারি ফলজ গাছের চারা বিতরণ না করে খালে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীনের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সরকারিভাবে বন্ধ থাকার সুযোগে অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীনের নির্দেশে এসব চারা খালের পানিতে ফেলে দেওয়া হয়।
চারা ফেলে দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় এলাকাবাসী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে প্রতিবাদ জানান। এতে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী, শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্থানীয়রা জানান, জেলা প্রশাসনের ‘গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন নারায়ণগঞ্জ’ কর্মসূচির আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের কৃষি প্রণোদনার অংশ হিসেবে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষক এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাঝে বিনামূল্যে এই চারা বিতরণ করা হয়।
রূপগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার গাছের চারা দিয়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিয়া।
‘নারায়ণগঞ্জ হবে সবুজে ঘেরা, প্রান্ডের ড্যান্ডি হবে বিশ্বসেরা’- এই স্লোগানকে সামনে রেখে উপজেলার ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে কৃষ্ণচূড়া, শিমুল, সুপারি, নারিকেল, তাল, সাজিনা, অর্জুন, নিম, কাঁঠাল, আম, বকুল ও সোনালু প্রজাতির গাছের চারা রোপণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম শুরু করেন।
বৃক্ষরোপণের অংশ হিসেবে রূপগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস থেকে গত ১৫ জুলাই ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীনের কাছে প্রায় এক হাজার ২০০টি গাছের চারা বুঝিয়ে দেওয়া হয়। পরদিন ১৬ জুলাই মাত্র ১২০টি চারা রোপণ করা হয়।
বাকি প্রায় এক হাজার গাছের চারা রোপণ বা বিতরণ না করে নষ্ট করে খালে ফেলে দেওয়া হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সরকারিভাবে বন্ধ থাকার সুযোগে অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীনের নির্দেশে প্রতিষ্ঠানটির দারোয়ান মোস্তফা মিয়া ও সুইপার জুবায়ের হোসেন চারাগুলো খালে ফেলে দেন। খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা গিয়ে বাধা দেন ও প্রতিবাদ জানান।
এ সময় দারোয়ান মোস্তফা মিয়া ও সুইপার জুবায়ের হোসেন বলেন, অধ্যক্ষ বলেছেন গাছের চারাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে, ফেলে দিতে-তাই আমরা ফেলে দিয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে সুরাইয়া পারভীনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি।
রূপগঞ্জ উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফারিয়া আক্তার রুবি বলেন, সরকারি গাছের চারা বিতরণ না করে নষ্ট করে ফেলার কোনো অধিকার কারও নেই। বিতরণ বা রোপণ করতে না পারলে সেগুলো আমাদের কৃষি অফিসে ফেরত দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগেও সুরাইয়া পারভীনের বিরুদ্ধে সরকারি বই গোপনে বিক্রির অভিযোগ উঠেছিল। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্থানীয়দের হাতে অধ্যক্ষ, একটি পিকআপ ভ্যান চালক ও বই ক্রেতা ধরা পড়েন। তবে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিক নূর-এ-আলম অজ্ঞাত কারণে তাদের ছেড়ে দেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
বই বিক্রির ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এমআরপি/এসআইএস