ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে প্যানেলগুলো প্রচার কার্যক্রম সূচনা করেছেন।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রার্থীদের কাছে আচরণবিধি ব্যাখ্যা করেন নির্বাচন কমিশনার।
সেখানে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ সমর্থিত প্যানেল এবং অন্যান্য স্বতন্ত্র প্যানেল ও প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
দুপুর সাড়ে তিনটায় ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে মহান একাত্তরের শহীদদের স্মৃতি ফলক ‘স্মৃতি চিরন্তনে’ শ্রদ্ধা জানিয়ে কার্যক্রম শুরু করবে।
এদিকে সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে প্রচার কার্যক্রম সূচনা করে বাম সমর্থিত প্রতিরোধ পর্ষদ। এই প্যানেল থেকে ভিপি প্রার্থী শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি, জিএস প্রার্থী মেঘমল্লার বসু এবং এজিএস প্রার্থী মো. জাবির আহমেদ জুবেলের নেতৃত্বে প্যানেলটি শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এই প্যানেল থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন মোজাম্মেল হক বলেন, ফুলবাড়ি ‘অভ্যুত্থান দিবস’ ছিল, তাই আমরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানালাম। এরপর আমরা সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের সামনে গিয়েছি। বিকেলে ভিসি চত্বর এবং রোকেয়া হলের সামনে থাকব। শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে আমরা বেশ ভালো রেসপন্স পাচ্ছি।
এদিকে দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’। সেখানে এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা, জিএস প্রার্থী আল সাদী ভূঁইয়াসহ প্যানেলের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় উমামা ফাতেমা বলেন, ডাকসু যেন নিয়মিত এবং অনাড়ম্বরভাবে আয়োজিত হতে পারে, সেটি প্রশাসনকে দেখতে হবে। প্রচার-প্রচারণা এমনভাবে করব, যেন শিক্ষার্থীদের নিয়মিত কার্যক্রমে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে। অনেক প্রার্থী ১০-১৫ দিন আগ থেকেই অলিখিতভাবে প্রচারণা করেছে। আমরা বারবার বললেও প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা আশা করব, যে বিধিমালা তারা দিয়েছে, সেখানে যেন প্রশাসন থাকে।
নির্বাচন বানচাল হওয়ার কোনো শঙ্কা দেখছেন কিনা, জানতে চাইলে এই প্যানেলের জিএস প্রার্থী আল সাদি ভূইয়া বলেন, আমরা শঙ্কা দেখছি। কারণ শিক্ষার্থীরা যেন তাদের প্রতিনিধি না পায়, তাই এক গোষ্ঠীর লোকজন কাজ করছে।
দুপুর থেকে কার্যক্রম শুরু করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থীজোট। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি এলাকায় তারা কার্যক্রম শুরু করেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম। তিনি বলেন, আমরা কেমন বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করতে চাই, সে রূপরেখা শিক্ষার্থীদের দেওয়া উচিত। কিন্তু আমরা যদি প্রোপাগান্ডা করি, ট্যাগিং এবং ফ্রেমিংয়ের রাজনীতি করি, তাহলে শিক্ষার্থীরা তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান থেকে একাডেমিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাই আমরা। এখানে রাজনীতির নামে অপরাজনীতির কারণে শিক্ষার্থীদের রাজনীতির প্রতি অনিহা তৈরি হয়।
এসব প্যানেলের বাইরেও স্বতন্ত্রভাবে অনেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মোদ্দাসসীর চৌধুরী কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে প্রচারের কাজ করেছেন।
তবে এখনো গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের প্রচার কার্যক্রম সম্পর্কে জানা যায়নি।
এফএইচ/এমজে