আলোচনার টেবিল ছেড়ে কারিগরি শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে দেশে নৈরাজ্য তৈরির উসকানি দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা। এমন কর্মকাণ্ডের পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র দেখছেন তারা।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা নাগাদ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা এসব কথা জানান।
বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, তাদের দাবিগুলোর যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক সুপারিশ প্রণয়নের জন্য কমিটি গঠনের পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা প্রকৌশলী এবং ডিপ্লোমাধারী উভয় পক্ষকেই আলোচনার টেবিলে ডাকেন এবং সবার যুক্তি-তর্ক সমানভাবে উপস্থাপনের সুযোগ করে দেন, যেন কারো প্রতি কোনোরূপ বৈষম্য তৈরি না হয়।
তারা বলেন, আলোচনার টেবিলে সমাধানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও গাজীপুরে রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে ডিপ্লোমাদের পক্ষ থেকে। সংস্কার কমিশনে ডিপ্লোমাদের পক্ষ থেকে যে প্রতিনিধিরা গিয়েছেন, তারাই সড়ক অবরোধ করে সহিংস আন্দোলনে যাওয়ার জন্য ক্রমাগত উসকানি দিয়ে যাচ্ছেন।
বুয়েট শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, এর মধ্যে একজন আইডিইবির সদস্য মো. নাজিম সরকার, যিনি কমিশনের ওয়ার্কিং গ্রুপে আছেন, তিনি নিজেই ডিপ্লোমাদের গ্রুপে পোস্ট করছেন যে, শুধুই আলোচনার টেবিলে সমাধান সম্ভব নয়। তারা আলোচনার টেবিলে গিয়ে এখন কেন জনদুর্ভোগ করে সড়ক অবরোধের উসকানি দিচ্ছেন? গায়ের জোরে দাবি আদায় করতে চাইলে আলোচনার টেবিলে কেন এলেন?
তারা বলেন, আলোচনার টেবিল ছেড়ে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ কোনো যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না। এগুলো শুধুই বিশৃঙ্খলা তৈরির পাঁয়তারা এবং আমরা এসব কর্মসূচিকে গভীর ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছি যা প্রথাগত আন্দোলনকে ভিন্ন পথে নিয়ে যাচ্ছে। কমিশনের ওয়ার্কিং গ্রুপে থাকা আইডিইবির সদস্য মো. ইউনুস চিহ্নিত আওয়ামী লীগের দোসর এবং ৫ আগস্টের আগে বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের সদস্য ছিলেন। আমরা জানি না ডিপ্লোমাধারীরা কীভাবে একজন স্বৈরাচারের দোসরকে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আলোচনার টেবিল ছেড়ে যারা সড়ক অবরোধ করে দেশে নৈরাজ্য তৈরির উসকানি দিচ্ছে, তাদের আসল উদ্দেশ্য ও এজেন্ডা কী, তা খতিয়ে দেখা দরকার এবং সবাইকে এই বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানানো হচ্ছে। অযথা সড়ক, রেলপথ অবরোধ করে সাধারণ জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি করলে আমরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারী হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
১০ম গ্রেড (টেকনিক্যাল) বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান পদে ডিপ্লোমাধারীদের জন্য বরাদ্দকৃত ১০০ শতাংশ কোটা বাতিল করতে হবে। ওই পদের জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং নির্ধারণ করতে হবে এবং উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীদের আবেদন করার সুযোগ দিতে হবে।
বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি ছাড়া কেউ নামের পাশে ইঞ্জিনিয়ার পদবি ব্যবহার করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
এফএইচ/আরএইচ