ঢাকা, সোমবার, ৭ আশ্বিন ১৪৩২, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিক্ষা

রাকসু নির্বাচন পেছানোর পক্ষে ছাত্রদল, অনঢ় শিবির

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:২৫, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৫
রাকসু নির্বাচন পেছানোর পক্ষে ছাত্রদল, অনঢ় শিবির রাকসু ভবন

দুর্গাপূজার পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন চায় ছাত্রদল। তবে তফসিল অনুযায়ী, ২৫ সেপ্টেম্বরেই নির্বাচন চায় ইসলামী ছাত্রশিবির।

এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশন বলছে, বিকেলে তাদের সভা হবে। তারপরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রদলের সহসভাপতি ও ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবীর।  

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনটা আমি চাই দুর্গাপূজার পরেই হোক। ’

এজন্য শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ছাড়ার বিষয়টি তুলে ধরেন আবীর। বলেন, ‘আমরা সবসময় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। আমরা দেখছি গত ৪৮ ঘণ্টা আগে যে উৎসবমুখর পরিবেশ এবং ভোটার ও প্রার্থীদের যে আনাগোনা ছিল সেটা এখন অনেকটাই স্থবির হয়ে গেছে। ভোটার নেই বললেই চলে। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বাসায় চলে গেছেন। আমরা চাই সর্বোচ্চ ভোটার উপস্থিতিতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। ’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যদি ভোটারদের উপস্থিতির কথা বিবেচনা করেন, সেক্ষেত্রে আমি বলব আপনারা শিক্ষার্থীদের পালস বোঝার চেষ্টা করেন। নির্বাচনটা আমি চাই দুর্গাপূজার পরেই হোক। ’

রাবিতে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের ভর্তিতে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বা পোষ্য কোটা বাতিলের প্রতিবাদে তারা রোববার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন। সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য শুরু হয়েছে কমপ্লিট শাটডাউন। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে ক্লাস-পরীক্ষা।

আর রাকসু নির্বাচন উপলক্ষে ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখার ঘোষণা আছে। ২৬ ও ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্র ও শনিবার ক্যাম্পাস বন্ধ। ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত আছে দুর্গাপূজার ছুটি। এরমধ্যে শুধু ২৮ সেপ্টেম্বরই ক্লাস-পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে সেটিও অনিশ্চিত। ফলে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেছেন।

এই অবস্থায় অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না জানিয়ে সোমবার সংবাদ সম্মেলন করেছে সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ, রাকসু ফর র‍্যাডিকাল চেঞ্জ, সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ ও ইউনাইটেড ফর রাইটস প্যানেলের প্রার্থীরা। মোট ১১ প্যানেলের মধ্যে এই চার প্যানেলের প্রার্থীরা দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এফ নজরুল ইসলামকে স্মারকলিপিও দিয়েছে।

তারা বলেছে, ‘আমরা চাই শান্তিপূর্ণ, আনন্দমুখর পরিবেশে রাকসু নির্বাচন যা শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের নিয়েই সম্ভব যে পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় এখন নেই। বিশ্ববিদ্যালয়কে কমপ্লিট শাটডাউনে রেখে কোনোভাবে রাকসু নির্বাচন হতে পারে না। এটা সুস্পষ্ট নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র। ’

এরই মধ্যে বিকেল ৩টার দিকে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করে ২৫ সেপ্টেম্বরেই ভোট গ্রহণের জন্য লিখিতভাবে দাবি জানানো হয়। পরে এ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘শুধু একটি সংগঠন নির্বাচন পেছাতে চায়। রাকসু নির্বাচন ২৫ সেপ্টেম্বরেই হতে হবে। নির্বাচন পেছালে শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী হবে না। তাদের মধ্যে হতাশা আরও তৈরি হবে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন হচ্ছে। উৎসবমুখর পরিবেশ আছে। এটা নষ্ট করার জন্য প্রশাসন দায়ী। প্রশাসন যদি বলে নির্বাচন সঠিক সময়েই হবে, তাহলে শিক্ষার্থীরা থাকবে। ’

ভোট পেছালে ছাত্রশিবির কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলেও জানান তিনি। তবে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডাকা শাটডাউনের কারণে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হবে কি না সে সিদ্ধান্ত বিকেলে নেবে নির্বাচন কমিশন। বিকেল ৫টায় নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে সভা ডেকেছে।

দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এফ নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘বিকেলে নির্বাচন কমিশনের সভা ডাকা হয়েছে। শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শাটডাউন কর্মসূচির কারণে যদি নির্বাচনের পরিবেশ না থাকে, তাহলে সে বিষয়ে কমিশনে আলোচনা হবে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরই ভোট গ্রহণ হবে কি না সে সিদ্ধান্তই সভায় নেওয়া হবে।

এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।