খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) সংঘর্ষ ও শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার প্রায় সাত মাস পর অবশেষে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে বিভিন্ন মেয়াদে।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক বি এম ইকরামুল হক বলেন, মোট পাঁচজন শিক্ষার্থী সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে। একজনকে এক বছর এবং চারজনকে ছয় মাস বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি ৩২ শিক্ষার্থীকে সতর্ক করা হয়েছে। বিভাগীয় কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এক বছরের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন এমএসসির শিক্ষার্থী সালিম সাদমান। আর ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ওমর বিন হোসাইন, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী শান্ত ইসলাম, একই ব্যাচের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মো. রিদয় ও ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাফওয়ান আহমেদ ইফাজ।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করার জন্য ১৯ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এম এম এ হাসেমকে প্রধান করে চার সদস্যের ওই কমিটি করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ১৪ এপ্রিল সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপন করা হয় এবং সিন্ডিকেট তা গ্রহণ করে। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সভায় ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটির কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে আন্দোলনের মুখে ২৩ এপ্রিল সেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
আন্দোলনের জের ধরে গত ২৬ এপ্রিল কুয়েটের উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে অপসারণ করে সরকার। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলেও শিক্ষকদের বিরোধিতার মুখে ২২ মে তিনি পদত্যাগ করেন। ২৪ জুলাই বুয়েট যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মো. মাকসুদ হেলালীকে কুয়েট উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। দীর্ঘ ১৬০ দিনের অচলাবস্থা কাটিয়ে ২৯ জুলাই কুয়েটে আবার একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়।
এমআরএম