ঢাকা, বুধবার, ৯ আশ্বিন ১৪৩২, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিক্ষা

সাত কলেজের কাঠামো পরিবর্তন করা যাবে না

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:৪৫, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫
সাত কলেজের কাঠামো পরিবর্তন করা যাবে না মানববন্ধনে শিক্ষকরা। 

সাত কলেজের নাম (সাইনবোর্ড) বা কাঠামো পরিবর্তন করে কোনো অনুষদে বা স্কুলে রূপান্তর করা যাবে না বলে জানিয়েছে বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন।  

প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস পৃথক স্থানে প্রতিষ্ঠা করাসহ আট দফা দাবিতে সাতটি কলেজের সামনে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষকরা।

 

বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে পুরান ঢাকায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ ইউনিট কলেজের সামনে মানববন্ধন করেন। এতে শিক্ষক-কর্মচারীরা অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কবি নজরুল সরকারি কলেজের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন।

ঢাকার সাত কলেজকে কেন্দ্র করে প্রস্তাবিত সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির কাঠামো কেমন হবে, তা নিয়ে আমরা সাত কলেজে কর্মরত শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা করে আসছি। এ বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবকর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি প্রদান করেছি এবং আমাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে জানিয়েছি। অথচ দুঃখজনকভাবে দেখা গেল যে, আমাদের উদ্বেগ ও প্রস্তাবকে কোনো গুরুত্ব না দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া প্রস্তাব প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত খসড়ায় সাত কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, কলেজে কর্মরত শিক্ষক ও কর্মচারীদের স্বার্থ মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে আমরা আট দফা দাবি উত্থাপন করছি, 

সাত কলেজের নাম (সাইনবোর্ড) বা কাঠামো পরিবর্তন করে কোনো অনুষদে অথবা স্কুলে রূপান্তর করা যাবে না। অর্থাৎ কলেজ কাঠামোর মৌলিক রূপ ভেঙে অনুষদভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা যাবে না।

কলেজের লোগোসহ স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি স্ব-স্ব কলেজের নামে অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে। কোনোভাবেই জোর করে এসব সম্পদের মালিকানা প্রস্তাবিত কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে হস্তান্তর গ্রহণযোগ্য নয়। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস অবশ্যই পৃথক স্থানে প্রতিষ্ঠা করতে পারে।

সাত কলেজকে পরীক্ষাগার বা গিনিপিগ বানিয়ে কোনো পরীক্ষামূলক বিশ্ববিদ্যালয় মডেল চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। সাতটি সরকারি কলেজকে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রাখা হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে হবে এবং সব পদে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

বিদ্যমান কোনো বিষয় বিয়োজন করা যাবে না। বিশেষত আরবি ও ইসলাম শিক্ষা বাদ দেওয়ার চেষ্টা ইসলামবিদ্বেষের সামিল এবং তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।  

ঢাকা কলেজসহ পাঁচটি কলেজ দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করে আসছে। তাই উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম স্বার্থবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য হবে না।  

সাত কলেজে ইতোমধ্যেই উচ্চশিক্ষার ব্যাপক সংকোচন করা হয়েছে। বিশেষত ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা কলেজ বহু বছর ধরে নারীদের জন্য নিরাপদ ও সাশ্রয়ী উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিয়ে আসছে। প্রস্তাবিত কাঠামোয় নারী শিক্ষার ব্যাপক সংকোচনের পরিকল্পনা স্পষ্ট, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

সাত কলেজে কর্মরত কোনো কর্মচারীর চাকরি বা অন্য কোন স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করা যাবে না।

সাত কলেজ সরকারের বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এর সাংগঠনিক কাঠামো পরিবর্তনের আগে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের মতামত গ্রহণ ও যৌক্তিকতা যাচাই করা আবশ্যক। এজন্য প্রস্তাবিত খসড়া অধ্যাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্কা অধিদপ্তর, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, আইন পেশাজীবী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের এবং সবপর্যায়ের বুদ্ধিজীবী ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন রিভিউ কমিটির মাধ্যমে পর্যালোচনা করতে হবে।  

মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, যেহেতু প্রস্তাবিত কাঠামো অনুযায়ী বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যরা ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রশাসনিক কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত নন, সেহেতু যেসব শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রস্তাবিত কাঠামো অনুযায়ী ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তাদের একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করার আইনি ভিত্তি আমাদের নেই। খসড়া অধ্যাদেশের সর্বস্তরে কেবলমাত্র বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সদস্যদের অবস্থান নিশ্চিত না করলে তারা ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করবে না। যেসব শিক্ষাবর্ষ ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত নয়, তাদের কার্যক্রম যথারীতি চলবে।  

এমআইএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।