ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

রাবি শিক্ষক হত্যা

রাতেই মরদেহ নেওয়া হবে গোবিন্দগঞ্জে

রাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৪
রাতেই মরদেহ নেওয়া হবে গোবিন্দগঞ্জে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রাবি (রাজশাহী):দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর একেএম শফিউল ইসলামের মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে রাখা হয়েছে। একমাত্র ছেলে ঢাকা  থেকে রাজশাহী এসে রাতেই তার মৃতদেহ নিয়ে যাবেন গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শালমারা ইউনিয়নের হিয়াতপুর গ্রামে।

সেখানে গোসল শেষে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এন্তাজুলক বাংলানিউজকে জানান, নিহত শিক্ষকের একমাত্র ছেলে জেবিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের পড়েন। তিনি রাজশাহীর উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছেন।

গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম জাহিদুল ইসলাম জানান, নিহত শিক্ষকের মৃতদেহ গ্রামের বাড়ি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শালমারা ইউনিয়নের হিয়াতপুর গ্রামে রাতেই আসবে।

তিনি জানান, নিহত শিক্ষকের ছেলে জেবিন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে তিনি এসে বাবার লাশ বগুড়ায় নিয়ে যাবেন। পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে গ্রামের বাড়িতে তার বাবার কবরের পাশে দাফন করা হবে।

শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটায় রাবি সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত হন প্রফেসর শফিউল ইসলাম। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মারা যান তিনি। সন্ধ্যায় মরহুমের ময়না তদন্ত শেষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়।

রামেক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. মমতাজ বাংলানিউজকে বলেন, শফিউল ইসলামের মাথা, ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গভীর জখম ছিল। তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়েছে।

তার বিভাগীয় সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রফেসর শফিউল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের একজন সদস্য।

আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের প্যানেল থেকে তিনি একাধিকবার প্রার্থী হয়ে শিক্ষক সমিতির বিভিন্ন পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য, বিভাগীয় সভাপতিসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তারিকুল হাসান বাংলনিউজকে বলেন, শফিউল ইসলামের ডাকনাম লেলিন, তিনি আর আমি ছাত্রজীবনের একই হলে থাকতাম। কর্মজীবনের সহকর্মী হিসেবে তিনি অনেক কাছের মানুষ। তার শত্রু থাকতে পারে বলে কখনো মনে হয় নি। কি কারণে তাকে এভাবে হত্যা করা হলো তা কারো কাছে পরিস্কার না।

এদিকে, শফিউল ইসলামের মর্মান্তিক মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। শনিবার রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর প্রেরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি তারা এ শোক প্রকাশ করেন।

তারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তথা দেশে সমাজবিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণায় মরহুমের অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তাঁরা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন। তাঁরা তদন্তের মাধ্যমে এই ঘটনার জন্য দোষী দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

** মোটরসাইকেল ও রক্তমাখা চাপাতি উদ্ধার
** নিহত শিক্ষকের মরদেহ রাবি ক্যাম্পাসে, অবরোধ প্রত্যাহার
** রাবি শিক্ষক হত্যার জেরে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ
** রাবি শিক্ষকের মরদেহ মর্গে, দাফন সোনাতলায়
** রাবি শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা
** রোববার রাবিতে শিক্ষকদের ক্লাস-পরীক্ষ‍া বর্জন

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।