ঢাকা: প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিএসসি) পরীক্ষা বাচ্চাদের সর্বনাশ করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় শিক্ষা নীতি-২০১০ প্রণয়ন কমিটির কো চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ।
একই সঙ্গে পিএসসি পরীক্ষা বন্ধের দাবি জানান তিনি।
রোববার (০৭ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ইনিশিয়েটিভ ফর হিউম্যান ডেভলপমেন্ট ও জাতীয় শিক্ষক কর্মচারী ফ্রন্টের যৌথভাবে আয়োজিত ‘২০১৫-১৬ প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ: প্রত্যাশা ও শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন’ শীর্ষক এক মতবিনিময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, শিক্ষানীতিতে পিএসসি পরীক্ষার কথা কোথাও উল্লেখ নেই। বিশ্বের কোনো দেশে এমন কোনো ধরনের পরীক্ষাও নেওয়া হয় না।
তিনি বলেন, কোনো নীতি সংসদে আজ পর্যন্ত পাশ হয়নি। শুধুমাত্র শিক্ষানীতি সংসদে পাশ হয়েছে। তারপরও এটি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন হয়নি।
কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, পিএসসি পরীক্ষা বাচ্চাদের সর্বনাশ করছে। এখানে দুর্নীতি বাসা বেধেছে। এই পরীক্ষা এখন বাচ্চাদের নেই, মা-বাবাদের হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের বাজেটে শিক্ষাখাতে বাড়িয়েছে মাত্র ১০ দশমিক ৭ভাগ। যা গত বছরের তুলনায় কম।
‘শিক্ষায় মুল সমস্যা অর্থে নয়, প্রশাসনে। শিক্ষানীতিতে প্রশাসনের কার্জপদ্ধতি পরিবর্তনের বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। তবুও শিক্ষা প্রশাসন পরিবর্তন হচ্ছে না। যে কারণে বৈষম্য থেকে গেছে’ বলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. খলীকুজ্জমান।
তিনি বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পয়নিষ্কাশন নিয়ে বার বার অর্থমন্ত্রী কথা বলেছেন। কিন্তু তার এই কথা নীতিতে আছে বাস্তবায়নে নেই। ‘বিশ্ব দরবারে আলোচনার জন্য লোক দরকার। দেশের উন্নয়ন নীতি তৈরি ও পরিকল্পনা তৈরিতে লোক দরকার। তার জন্য শিক্ষার উন্নয়ন ও মান বাড়ানোর প্রয়োজন’ যোগ করেন এই অর্থনীতিবিদ।
সভায় গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, শিক্ষানীতির বয়স ৫ বছর হয়ে গেলেও তা বাস্তবায়নে নেই। জিডিপির হিসেব অনুযায়ী এ বছরে শিক্ষায় বরাদ্দ ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিতে বরাদ্দ কমে গেছে তাহলে কার জন্য এই বাজেট’ প্রশ্ন তুলেন তিনি। এসময় তিনি সামরিক খাতের বাজেট কত কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে তা পরিষ্কার করে বলার জন্য অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান রাশেদা কে চৌধুরী।
রাশেদা চৌধুরী বলেন, ২০০০ সালে বর্তমান সরকার ১৪ শতাংশ বরাদ্দ দিয়েছিলেন শিক্ষাখাতে। আর এ বছর ১১ শতাংশও দেননি, দিয়েছেন ১০ দশমিক ৭ শতাংশ। তাহলে সরকার ২০২১ সালের মধ্যে কিভাবে মধ্যম আয়ে দেশে পরিণত করবে।
ইনিশিয়েটিভ ফর হিউম্যান ডেভেলপমেন্টের প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আধ্যাপক আসাদুল হক, আইএইচডির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, কলেজ শিক্ষক সমিতির ঢাকা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ ফয়েজ হোসেন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১৫/আপটেড ১৯১৯ ঘণ্টা
এফবি/বিএস