ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বই নাও, টাকা দাও!

টিটু দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০১৬
বই নাও, টাকা দাও! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কিশোরগঞ্জ: স্কুলে বই আনতে গেলে স্যারেরা ট্যাহা চায়, ট্যাহা না দিলে বই দেয় না-এমনই অভিযোগ কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ২৩ নম্বর পানান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ইমরানের।

শুধু ইমরান নয়, এ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীসহ অভিভাবকদেরও একই অভিযোগ।



স্কুলের বাউন্ডারির ভেতরে ইমরানের সঙ্গে কথা বলার সময় তার সহপাঠী রাহাতুল আবাই এগিয়ে এসে বলে, সরহারের দেওয়া বই স্যারেরা ট্যাহা ছাড়া দেয় না। ট্যাহা না দিলে উল্ডা স্যারেরা গাড়ে (ঘাড়ে) ধাক্কা দেইয়্যা ইস্কুল তে বাইর কইরা দেয়। আমারেও বাইর কইরা দিছে।
এ স্কুল কমিটির সদস্য ও তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর বাবা মারুফ আহমেদের অভিযোগ, টাকা দিতে না পারায় তার মেয়েকে শিক্ষকরা বই দেননি। বই না পেয়ে তার মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে চলে এসেছে।

২৩ নম্বর পানান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত। গত বছর থেকে এ প্রাইমারি স্কুলটি পাইলট বিদ্যালয়ের আওতায় এনে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে এ স্কুলে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৪০৩ জন ও ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত রয়েছে ২৫০ জন ছাত্রছাত্রী। মোট শিক্ষক রয়েছেন আটজন।

১ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে বিনামূল্যে বই বিতরণ শুরু হয়েছে। অথচ এই স্কুলে টাকা ছাড়া বই মিলছে ছাত্র-ছাত্রীদের। এ স্কুলে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩০ টাকা করে ও ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।

স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষক মো. আফাজ উদ্দিনকে না পেয়ে কথা হয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককের দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষিকা মাসুমা আক্তারের সঙ্গে।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা টাকা নিচ্ছি না, শুধু অন্ধ কল্যাণের পাঁচ টাকার টিকেটের বিনিময়ে পাঁচ টাকা করে নিচ্ছি।

পাঁচ টাকার টিকিটের পাশাপাশি ক্রীড়া অনুষ্ঠানের জন্য কিছু টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান আরেক সহকারী শিক্ষক খাইরুল আলম।

স্কুল কমিটির সভাপতি নুরুল হুদা বলেন, শিক্ষকরা বইয়ের জন্য নয়, তবে ক্রীড়া অনুষ্ঠানের জন্য কিছু টাকা নিয়েছেন।
 
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মাওলা বাংলানিউজকে বলেন, টাকা নিয়ে বই দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। ঘটনা সত্য হলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৬
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।