ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

‘সময়কে কঠিনভাবে ব্যবহার করেছেন বঙ্গবন্ধু’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৬
‘সময়কে কঠিনভাবে ব্যবহার করেছেন বঙ্গবন্ধু’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহ: ৫৫ বছরের জীবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সময়কে কঠিনভাবে ব্যবহার করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

তিনি বলেন, সময়ের চেয়ে মূল্যবান সম্পদ মানুষের কাছে নেই।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসাধারণ অবদানের ফলে আমরা স্বাধীন দেশে বসবাস করতে পারছি। তিনি সময়কে কঠিনভাবে ব্যবহার করেছেন। তার একটিই স্বপ্ন ছিল, বাঙালিকে স্বাধীন দেশ দেওয়া।

ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম তার জীবনীগ্রন্থে লিখেছেন, মানুষকে স্বপ্ন দেখতে হবে। সে স্বপ্ন ঘুমিয়ে থেকে দেখার নয়। যে স্বপ্ন দেখার পরে আর ঘুমানো যায় না, ঘুম চলে যায় চোখ থেকে। বঙ্গবন্ধু সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার আছিম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় অ্যারাইজ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের মেধাভিত্তিক পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আলী আকবর, ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী, জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক, ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বনানী বিশ্বাস।

ঢাবি উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৫৫ বছরের জীবন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ছাত্রজীবন থেকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি সময়কে যথাযথভাবে ব্যবহার করেছেন। আর করেছেন বলেই আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক।

শিক্ষার্থীদেরও সেইভাবে সময়কে মূল্য দিতে হবে। দেশকে ভালোবাসতে হবে। দেশকে ভালোবাসতে না শিখলে যতোই লেখাপড়া ও ডিগ্রি অর্জন করুক না কেন, দেশের কোনো কাজ হবে না।

শিক্ষার সঙ্গে মিথ্যা ও অসততা একবারে বিপরীতমুখী অবস্থান মন্তব্য করে তিনি বলেন, শিক্ষিত মানুষ সব সময় সৎ। জিপিএ-৫ কেন্দ্রিক ও নিজের আত্মস্বার্থকে রক্ষা করার জন্য নয়, শিক্ষা নিতে হবে জীবনকেন্দ্রিক।

ফেব্রুয়ারি মাস ভাষার মাস উল্লেখ করে আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, দু’দিন পরে এ মাস শেষ হবে। এ মাস শেষ হয়ে গেলেই যেন ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষ না হয়ে যায়। দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে এগিয়ে যেতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ কোনো বিভক্ত বিষয় নয় মন্তব্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, এ চেতনা মানে একটি গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও অর্থনৈতিকভাবে উন্নত বাংলাদেশ। যে দেশের মানুষ সমান সুযোগ-সুবিধা পাবে। এ সুযোগ-সুবিধার জন্যই বঙ্গবন্ধু সারা জীবন কষ্ট করেছেন।

সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যেতে হবে। আর এজন্য তরুণ প্রজন্মকে অনেক বেশি প্রচেষ্টা চালাতে হবে। নিজেকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। একজন শিক্ষিত মানুষ পরিপূর্ণ মানুষ।

তবে এ শিক্ষা শুধু ক্লাসরুমের শিক্ষা নয়। দেশকে ভালোবাসা ও সততার শিক্ষা নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের অবশ্যই প্রজ্ঞাবান মানুষ হতে হবে।

নিজের বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আরেকটি উদাহরণ তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। একটি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ বিধ্বস্ত অর্থনীতি গড়ে তোলার কাজে আছেন। সেই সময় বিবিসি’র বড় সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্ট এসেছেন বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাতকার নেওয়ার জন্য।

কিন্তু বঙ্গবন্ধু অনেক ব্যস্ত। প্রতিটি সেকেন্ড কাজে ব্যয় করছেন। এক জায়গায় বসে সাক্ষাতকার দিতে পারছেন না। পরে ফ্রস্ট বঙ্গবন্ধুর অফিসে ২ থেকে ৪ মিনিট কথা বলছেন, গাড়িতে কথা বলছেন, এভাবে কয়েক ধাপে তিনি সাক্ষাতকার নিতে সমর্থ হলেন।

সেই সাক্ষাতাকারের এক পর্যায়ে ফ্রস্ট বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞাসা করছেন, আপনার বড় যোগ্যতা কী? বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘আমি মানুষকে ভালোবাসি’। ঠিক পরমুহূর্তে প্রশ্ন, আপনার বড় দুর্বলতা কী? সেই একই উত্তর, আমি আমার মানুষকে বেশি ভালোবাসি। বঙ্গবন্ধু ভালোবাসার বাইরে যেতে পারলেন না।

আরেফিন সিদ্দিক বলেন, প্রশ্ন দু’টি একেবারেই বিপরীতমুখী। কিন্তু দু’দিকে একই উত্তর। এ ভালোবাসার কারণেই বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির জনক। এ ভালোবাসা দিয়েই সব বাঁধা অতিক্রম করতে হবে।

বাংলাদেশ সময় ১৮৪০ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৬
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।