খুলনা: পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাবন্দি থাকা জঙ্গি সন্দেহে তুলে নেওয়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) দুই শিক্ষার্থী নুর মোহাম্মাদ অনিক এবং মোজাহিদুল ইসলাম অবশেষে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
সোমবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় খুলনা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান তারা।
১৭ দিন আয়নাঘরে বন্দি ছিলেন এই দুই শিক্ষার্থী। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পরও তারা মুক্তি না পাওয়ায় তাদের নিয়ে গত ২১ এপ্রিল ‘১৭ দিন আয়নাঘরে থাকা খুবির দুই শিক্ষার্থী আজও কারাবন্দি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে বাংলানিউজ।
ছাত্রদের আইনজীবী আকতার জাহান রুকু বলেন, তাদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা দেওয়া হয়। এর মধ্যে দুটি মামলায় খালাস, দুটি মামলায় জামিন এবং সোনাডাঙ্গা থানার দুটি মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। সাজা হওয়া দুটি মামলায় উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করা হয়। আদালত গত সপ্তাহে জামিন মঞ্জুর করেন। আশুরার ছুটি থাকায় তিন দিন পর আদেশ কারাগারে এসে পৌঁছায়। সোমবার সন্ধ্যায় তাদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যায়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, জঙ্গি নাটকে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচার হওয়া উচিত। দীর্ঘদিন জেলে থাকা দুই শিক্ষার্থী নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে। তাদেরকে বরণ করার জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল খুলনা কারাগারের ফটোকে অবস্থান করেছিল। এই দুই শিক্ষার্থীর ছাত্র জীবন ফিরে পাওয়ার জন্য আমার পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে।
সহপাঠীরা জানান, ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি ওই দুই শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ১৭ দিন অজানা স্থানে রেখে তাদের নির্যাতন করা হয়। পরে ২৫ জানুয়ারি তাদের বিস্ফোরক দ্রব্যসহ গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। ওই দিনই তাদের খুলনার কৃষক লীগ কার্যালয় ও আড়ংঘাটা থানার গাড়ির গ্যারেজে বোমা হামলা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর একে একে তাদের বিরুদ্ধে আরও চারটি মামলা করে পুলিশ। সেই থেকে পাঁচ বছর তারা কারাবন্দি ছিলেন। গ্রেপ্তারের সময় নূর মোহাম্মদ অনিক খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও মোজাহিদুল ইসলাম রাফি পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিনে লেখাপড়া করতেন।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর কারাগারে তারা অনশন শুরু করেন। তাদের মুক্তির দাবিতে খুবি ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করেন সহপাঠী, রুমমেট, শিক্ষক ও পরিবারের সদস্যরা। পরে ক্যাম্পাসে মানববন্ধনও করেন সহপাঠী, পরিবারের সদস্য, শিক্ষক ও আইনজীবীরা।
এমআরএম