ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ফলাফল স্থগিত, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলছেন ‘দু:খিত’

এম আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০১৬
ফলাফল স্থগিত, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলছেন ‘দু:খিত’

ময়মনসিংহ: ‘বেশ ভালো পরীক্ষা দিয়েছিলাম। আমার জানামতে কোনো পরীক্ষায় খারাপ করার কথা নয়।

কিন্তু কেন ও কী কারণে আমার ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে, সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছে না কেউ। ’

‘‘ফোন করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শুধু বলছেন- ‘আমরা দু:খিত’। এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে কীভাবে পড়াশুনা করা সম্ভব?’’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান প্রথম বর্ষের (২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ) পরীক্ষার ফলাফল স্থগিত নিয়ে এভাবেই বলছিলেন আনন্দমোহন কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী পান্থ উকিল।

শুধু তিনি-ই নন, তার মতো গণিত, পদার্থ বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিভাগের আরও প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীর ফলাফল স্থগিত হওয়ায় চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

তাদের কলেজের শিক্ষকরাও এ সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন তারা।

জানা যায়, গত ৪ আগস্ট জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত ফলে আনন্দমোহন কলেজের প্রায় তিন শতাধিক পরীক্ষার্থীর ফলাফলের জায়গায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত হচ্ছে ‘উইথ হেল্ড। ’

এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে। নতুন করে ফেল ফলাফল প্রকাশ করে তারা।

কিন্তু ঝুলে থাকা শিক্ষার্থীদের ভাগ্যে আর শিকেয় ছিঁড়েনি। উল্টো যাদের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছিলো তাদের পয়েন্ট বেড়ে যায়।

এ কলেজের ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষার্থী লায়লা ফারজানা তন্বি বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা মানেই পদে পদে ভোগান্তিকে সঙ্গী করা। প্রতি বছরই ফলাফল নিয়ে একটার পর একটা ঝামেলা চলেই। ’

‘ভালো পরীক্ষা দেওয়া সত্ত্বেও আমাদের ফলাফল এখনও স্থগিত। প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে আছি। অথচ পরীক্ষা না দিয়েও আমার এক ফ্রেন্ডের ফলাফল এসেছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে চলছে এমন ভুতুড়ে কারবার। ’

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আগে জানলে অনার্সে ভর্তি না হয়ে ডিগ্রিতে ভর্তি হতাম।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের পরীক্ষার ফলাফল অপশনে গিয়ে ক্লিক করার পর প্রথম বর্ষ সিলেক্ট করতে হয়।

এরপর রোল নম্বর ও পরীক্ষার বর্ষ ঠিক দেওয়ার পরেও একেকজন শিক্ষার্থী দেখতে পাচ্ছেন তাদের রেজাল্টের ঘরে ‘উইথ হেল্ড’ শব্দটি।

শিক্ষার্থীরা বলেন, এখন দ্বিতীয় বর্ষে আছি। কিন্তু প্রথম বর্ষের ফলাফল পাইনি। কোন সাবজেক্টে আমাদের ইমপ্রোভ দিতে হবে তাও বুঝে উঠতে পারছি না।

কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে ইয়ার লসের শঙ্কাও দেখা দিয়েছে বলে জানান তারা।

তবে এ বিষয়ে আনন্দমোহন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত গতিতে রেজাল্ট প্রকাশের ক্রেডিট নেবার কারণেই এমনটি হয়েছে। আমি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলেছি। ’

‘তিনি বলেছেন- অনেকগুলোর মার্কস সময় মতো আসেনি। ক’দিনের মধ্যেই ‘উইথ হেল্ড’ রেজাল্টগুলো ঠিক করে দেবেন বলে জানিয়েছেন। ’

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০১৬
এমএএএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।