ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

৫ বছরেও নির্মিত হয়নি জাবির রবীন্দ্রনাথ হল

ওয়ালিউল্লাহ ও নুর আলম হিমেল | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৬
৫ বছরেও নির্মিত হয়নি জাবির রবীন্দ্রনাথ হল ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের নির্মাণকাজ। অথচ নির্মাণকাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় ৩২ মাস আগে।

আর চার মাস আগে এই প্রকল্পেরও মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

নির্মাণকাজ শেষ করতে কার্যাদেশের সময়সীমা কয়েকদফা বাড়ানো হয়েছে। তারপরও হলটির নির্মাণকাজ ধীর গতিতে চলায় বর্ধিত সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আর এই বর্ধিত সময়ের মধ্যেও কাজ শেষ করতে না পারলে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা তীব্র আবাসন সংকটে পড়বে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিয়মিত তদারকির অভাবের কারণেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত কাজ করছে না। প্রতিষ্ঠানটি কিছু অংশের কাজ শেষ করে ওই অংশের অর্থ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত বাকি অংশের কাজ অসমাপ্ত রাখে। এ কারণেই নির্মাণকাজে ধীরগতির সৃষ্টি হচ্ছে।

প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে একনেকে অনুমোদিত একটি প্রকল্পের অধীনে এ হলের নির্মাণকাজ শুরু হয়। এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে ২০১৬ সালের জুন মাসেই।  
 
প্রকল্পের আওতায় হলটি নির্মাণের জন্য ২০১২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর কার্যাদেশ অনুযায়ী ১২ কোটি ৭২ লক্ষ ৬৯ হাজার ৯ শত ৯ টাকা ৬০ পয়সা ব্যয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের নির্মাণকাজ শুরু করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স মল্লিক এন্টারপ্রাইজ।
 
কার্যাদেশ অনুয়াযী ৪৫০ দিনের মধ্যে বা ২০১৪ সালের ২ জানুয়ারী কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় ২০১৫ সালের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনবার সময় বৃদ্ধি করা হয়। তারপরেও কাজ শেষ করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।
 
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলটির কাজ শেষ করতে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটিকে ৪র্থ মেয়াদে সময় বৃদ্ধি করেছে। নির্মাণকাজের এহেন ধীর গতির কারণে এখন এ-আশঙ্কা প্রকট যে,  এই সময়ের মধ্যেও হয়তো নির্মাণকাজ কাজ শেষ হবে না।
 
এদিকে যথাসময়ে হলের কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তি হতে যাওয়া শিক্ষার্থীরা চরম আসন সংকটে পড়বে। এই সময়ের মধ্যে দুইটি ছাত্রী হলের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ায় ছাত্রীদের আসন সংকট কিছুটা দূর হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের নির্মাণকাজ শেষ করতে পারলে ছাত্রদের আসন সংকট কিছুটা হলেও দূর হবে।
 
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত তদারক মো. ফরিদ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন। ‘
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মল্লিক এন্টারপ্রাইজের মালিক হাবিবুর রহমান মল্লিকের মোবাইল নম্বর চাইলে তিনি বলেন, ‘নাম্বার দিলে সমস্যা আছে, অপরিচিত নাম্বার ধরবেন না। আমি নাম্বার দিতে পারবো না। প্রকৌশল অফিস থেকে ম্যানেজ করেন। ‘  
 
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অফিসে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ‘আমরা সকল বিষয়ে মো. ফরিদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনিই সকল বিষয় দেখভাল করেন। মল্লিকের ফোন নাম্বার আমাদের কাছে নেই। ‘   
 
এ বিষয়ে হলটির সুপারভাইজার সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল-৩) আশিকুর রহমান বলেন, ‘আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে ভবন নির্মাণের কাজ ধীর গতিতে হচ্ছে। ‘   
 
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবুল হোসেন বলেন, ‘আমরা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছি। এর মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ করে দেওয়ার কথা। ‘
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘন্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৬
জেএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।