ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জাবির ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীর অবস্থান দারিদ্র্যসীমার নিচে 

জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৭
জাবির ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীর অবস্থান দারিদ্র্যসীমার নিচে 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী দারিদ্র্যের ঊর্ধ্বসীমার নিচে অবস্থান করছে। আর ৯ শতাংশের অবস্থান দারিদ্র্যের নিম্নসীমার নিচে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২৫ জন আবাসিক শিক্ষার্থীর উপর দু’মাসব্যাপী জরিপ চালিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন অর্থনীতি বিভাগের ৪১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক রায়হান।

রোববার (২৬ নভেম্বর) অর্থনীতি বিভাগে অর্থশাস্ত্রের পাঠচক্রে এ সমীক্ষা তুলে ধরেন তিনি।

তিনি জানান, দারিদ্র্যরেখা নিরূপণের বেশ কিছু পদ্ধতি রয়েছে।

এর মধ্যে ‘মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যয়’ পদ্ধতিটি দারিদ্র্যরেখা নিরূপণের জন্য বহুল প্রচলিত পদ্ধতি। এটি ন্যূনতম পুষ্টি (প্রতি দিনে ২১২২ কিলোক্যালরি) গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় খরচের পরিমাণ অনুসারে হিসাব করা হয়। সমীক্ষাটি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর করা হয়েছে।  

চলতি বছরের এপ্রিল ও মে মাসে মোট ২২৫ জন শিক্ষার্থীর (১২৫ জন ছেলে ও ১০০ জন মেয়ে) উপর এ সমীক্ষা চালানো হয়।

সমীক্ষা অনুযায়ী, যে সব ছাত্র হলের ডাইনিংয়ে (সকাল, দুপুর ও রাতের) খাবার খায় তারা জনপ্রতি দিনে মাত্র ১৮৮৯ কিলোক্যালরি, হলের ক্যান্টিনে ২০০১ কিলোক্যালরি এবং হলের বাইরে (বটতলা বা অন্য জায়গায়) ২১৪৪ কিলোক্যালরি গ্রহণ করে।

অন্যদিকে ছাত্রীরা হলের ক্যান্টিনে দুপুর ও রাতের খাবারে গ্রহণ করে জনপ্রতি দিনে মাত্র ১৫৮৫ কিলোক্যালরি এবং হলের বাইরে ১৬৭৫ কিলোক্যালরি।

এ হিসাব অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত পুষ্টির পরিমাণ গড়ে ১৮২১ কিলোক্যালরি/প্রতিদিন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মতে, একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর দিনে ২৮শ-৩ হাজার কিলোক্যালরি গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু জাবিতে ২৮০০ কিলোক্যালরি খাবারের জন্য দৈনিক ১৯৩ টাকা অর্থ্যাৎ মাসে ৫৭৯০ টাকার প্রয়োজন। এছাড়া ন্যূনতম পুষ্টির চাহিদা ২১২২ কিলোক্যালরি পূরণের জন্য একজন শিক্ষার্থীর দৈনিক ১৩৬ টাকা করে মাসিক ৪০৮০ টাকার প্রয়োজন।

কিন্তু এই হিসাব অনুযায়ী ক্যাম্পাসে ৪০৮০ টাকা খাবারের পিছনে ব্যয় করে মাত্র ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী। আর বাকি ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী মাসিক খাবারের পিছনে খরচ করে গড়ে মাত্র ৩৩২০ টাকা। সে অনুযায়ী ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে দারিদ্র্যের ঊর্ধ্বসীমার নিচে অবস্থান করছে বলে জরিপে দেখানো হয়েছে।

অন্যদিকে ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী খাবার ও অন্য খরচ মিলেও ৪০৮০ টাকা খরচ করে না। এ জরিপে এই ৯ শতাংশ শিক্ষার্থীকে দারিদ্র্যের নিম্নসীমার নিচে অবস্থা করছে বলে উল্লেখ করেছে।

এ বিষয়ে ইশতিয়াক রায়হান বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে মেধা তালিকার উপর ভিত্তি করে মাসে ১২৫ টাকা দেওয়া হয়। যা একদিনের খাবার খরচের থেকেও কম।

এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনায় এনে অর্থের পরিমাণ বাড়াতে পারে। একই সঙ্গে হলের ডাইনিংয়ে ভর্তুকির বাড়িয়ে খাবারের গুণগত মান বাড়ানোর ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে পারে।

পাঠচক্রে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় তেল-গ্যাস ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, বিশ বছরের কৌশলপত্র অবলম্বনে ভর্তুকি কমিয়ে দিন দিন নানা খাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আরো টাকা আদায় করা হচ্ছে। যার কারণে শিক্ষার্থীদের ব্যয় বাড়ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৭
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।