ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

নতুন বইয়ের গন্ধে প্রাণের উচ্ছ্বাসে মেতেছে শিশুরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২০
নতুন বইয়ের গন্ধে প্রাণের উচ্ছ্বাসে মেতেছে শিশুরা

রাজশাহী: কনকনে শীত। তাতে কী নতুন বই পেতে বুধবার (১ জানুয়ারি) সকাল সকালই স্কুলে হাজির হয়েছিল শিক্ষার্থীরা। বই উৎসব অনুষ্ঠান শেষে বই তুলে দেওয়া হয় প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে।

নতুন বইয়ের গন্ধ মুহূর্তেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। রঙিন মলাটের মধ্যে যেন আবারও বন্দি হয় নতুন বছরের স্বপ্নও।

অজানা কবিতা, গল্প আর জ্ঞান-বিজ্ঞানে নিজেদের শানিত করার অদম্য ইচ্ছায় উচ্ছ্বাসিত হয়ে ওঠে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। হাসি-আনন্দে একাকার হয়ে বুকের সঙ্গে দুই হাত দিয়ে মায়ার বাঁধনে নতুন বইগুলো জড়িয়ে স্কুল ছাড়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

বই বিতরণ উৎসবকে ঘিরে বেলা ১১টায় বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে রাজশাহীতে ‘বই উৎসব’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। রাজশাহী কলিজিয়েট স্কুলে প্রধান অতিথি হিসেবে বই উৎসবের উদ্বোধন করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার হুমায়ুন কবীর খোন্দকার। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপপরিচালক শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন, কলিজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ড. নুরজাহান বেগম।

এর আগে সকালে রাজশাহী মিশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বই বিতরণের উদ্বোধন করেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া বর্তমান সরকারের অঙ্গিকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ উদ্যোগটি নিয়েছিলেন। সে জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। এ উদ্যোগের ফলে আমাদের শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে পাঠ্যবই পাচ্ছে। আমার ইচ্ছে ছিলো-রাজশাহীর প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করা। বছরের শেষদিন সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। এখন মহানগরীর কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য আর প্রকল্প গ্রহণ করতে বাকি নেই। চলমান কাজগুলো ২০২০ সালেই শেষ হবে। আমরা এখন শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করবো।  

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কামরু ও রাজশাহী ডিনারীর ডীন বিলিয়ম সরদার। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মিশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মারিয়া অলক মণ্ডল।

এদিকে, রাজশাহী অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বই উৎসবের উদ্বোধন করেন রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের বিভাগীয় উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ ও স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোশাররফ হোসেন বাচ্চু। সভাপতিত্ব করেন অধ্যক্ষ সাইফুল হক।  

রাজশাহী জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন জানান, এবার মাধ্যমিকে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮৩ শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের মাধ্যে ৪৫ লাখ ৮৪ হাজার নতুন বই বিতরণ করা হচ্ছে।

এর মধ্যে রাজশাহীতে সরকারি স্কুল রয়েছে ৬টি। বেসরকারি স্কুল রয়েছে ৫৮৪টি এবং মাদ্রাসা রয়েছে ২০৩টি। এছাড়া ৩টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল রয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী প্রত্যেক স্কুলে গেল ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন বইয়ের সেট পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পয়লা জানুয়ারি বই উৎসবের মাধ্যমে এখন কেবল শিক্ষার্থীদের সেসব বই বিতরণের অপেক্ষা। যোগ করেন জেলা শিক্ষা অফিসার।

এছাড়া বই উৎসব প্রশ্নে রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুস সালাম জানান, রাজশাহী জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১ হাজার ৪৯৬টি। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ লাখ ১১১ জন। তাদের মাঝে ১৪ লাখ ১১ হাজার ২৯৫টি নতুন বই বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে একই সংখক শিক্ষার্থীর মাঝে ৪৭ হাজার ৩০টি নতুন বই বিতরণ হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুস সালাম।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২০
এসএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।