ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ভর্তি পরীক্ষায় বিভাগীয় কেন্দ্রে কড়া নিরাপত্তা

সাজ্জাদুল কবির, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২১
ভর্তি পরীক্ষায় বিভাগীয় কেন্দ্রে কড়া নিরাপত্তা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ‘ক’ ইউনিটের পরীক্ষা দিয়ে শুক্রবার (১ অক্টোবর) শুরু হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ২০২০-২১ স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। পাঁচ অনুষদ ও পাঁচ ইনস্টিটিউটভুক্ত এ ইউনিটে এবার সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন।

এদিকে করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় এবারই প্রথম ৭ বিভাগীয় শহরের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীর বাইরে কেন্দ্র হওয়ায় কর্তৃপক্ষের সামনে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এ কারণে ডিজিটাল জালিয়াতি ঠেকাতে বিভাগীয় কেন্দ্রগুলোতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকায় আমরা যে প্রক্রিয়া অবলম্বন করে পরীক্ষা গ্রহণ করি, বিভাগীয় কেন্দ্রগুলোতেও তা যেন নিশ্চিত থাকে সে বিষয়ে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি। ভর্তি জালিয়াতি ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক-ইউনিটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান অনুষদ, জীববিজ্ঞান অনুষদ, ফার্মেসি অনুষদ, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদ, আর্থ অ্যান্ড এনভায়রণমেন্টাল সায়েন্স অনুষদভুক্ত বিভাগসমূহ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট, পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউ, ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের মোট ১ হাজার ৮১৫ আসনে ভর্তি হবে।

এবার ক-ইউনিটে ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন মোট ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৫৭ শিক্ষার্থী। যা গতবার ছিল ৮৮ হাজার ৯৭০ জন। এবার প্রতি আসনের বিপরীতে প্রতিযোগী ৬৪ জন। যা গতবার ছিল ৪৯ জন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকার বাইরের কেন্দ্রগুলোতে একজন সহকারী প্রক্টর, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সমন্বয়ে একটি করে টিম ইতোমধ্যে পৌঁছে গেছে। কড়া নিরাপত্তা (পুলিশ প্রহরা) দিয়ে প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়েছে। যাত্রাপথে সংশ্লিষ্ট থানা, পুলিশ ফাঁড়িগুলোকে অবহিত করা হয়। বিভাগীয় শহরগুলোতে কমিশনার, ডিআইজি, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্টরা টিমের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। সামাজিক যোগামাধ্যমে কোনো অসাধুচক্র যেন ভুয়া প্রশ্ন না ছাড়াতে পারে সে জন্য আলাদা টিম মনিটরিং করছে। তারা একটি চক্রকে গ্রেপ্তারের চেস্টা করছে।

ক-ইউনিটের জন্য ঢাকার বাইরের কেন্দ্রগুলো হচ্ছে- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (১৪ হাজার ৩২৮ জন), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (১১ হাজার ২১৭ জন), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (৭ হাজার ৮০৬ জন), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (৮ হাজার ৯২২ জন), সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (৩ হাজার ৩০৫ জন), বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (৩ হাজার ৪২৫ জন) এবং রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (১০ হাজার ৩৫১ জন)।

আসন বিন্যাস প্রকাশের বিষয়ে অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে ভর্তিচ্ছু ও শুধুমাত্র পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা দেখতে পারবেন। এছাড়া ঢাকায় ইউনিট ভিত্তিক সিটপ্ল্যান কেন্দ্রগুলো প্রকাশ করবে। বিভাগীয় কেন্দ্রগুলো তাদের মতো করে সেটি প্রকাশ করবে। আমরা পরীক্ষার যেন মান বজায় থাকে এবং কোনো ধরনের জালিয়াতির আশ্রয় কেউ নিতে না পারে সে বিষয়ে জোর দিচ্ছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি অফিস থেকে জানা গেছে, শুক্রবার (১ অক্টোবর ) বেলা ১১টায় ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার মোট সময় ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। এমসিকিউ এবং লিখিত উভয় পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মোট নম্বর ১০০, এরমধ্যে ৬০ নম্বরের এমসিকিউ (MCQ)। প্রতিটি বিষয়ে মোট নম্বর ১৫। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১। ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা হবে এবং তা বিষয়ভিত্তিক সমন্বয় করা হবে।

এছাড়া ৪০ নম্বরের লিখিত অংশ থাকবে তা ৪৫ মিনিটের হবে। প্রতিটি বিষয়ে মোট নম্বর ১০। প্রতিটি প্রশ্নের মান ২ থেকে ৫ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। অংশগ্রহণকারীদের পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নসহ মোট ৪টি বিষয়ের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।

ভর্তি পরীক্ষার এমসিকিউ অংশের পাস নম্বর ২৪। কমপক্ষে এই নম্বর পেলেই কেবল লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য বিবেচিত হবে। তবে এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্য থেকে 'ক' ইউনিটের মোট আসনের কমপক্ষে ৫গুণ লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হবে। লিখিত অংশের পরীক্ষায় পাস নম্বর ১২। তবে ১০০ নম্বরের মধ্যে এমসিকিউ এবং লিখিত পরীক্ষায় মোট পাস নম্বর ৪০। যারা ৪০ এর কম পাবেন তাদেরকে ভর্তির জন্য বিবেচনা করা হবে না।

মোট ১২০ নম্বরের ভিত্তিতে প্রার্থীদের অর্জিত মেধাস্কোরের ক্রমানুসারে ভর্তি তালিকা তৈরি করা হবে। এজন্য মাধ্যমিক/ ও লেভেল বা সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত/হিসাবকৃত জিপিএকে ২ দিয়ে গুণ: উচ্চ মাধ্যমিক/এ লেভেল বা সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত/হিসাবকৃত জিপিএকে ২ দিয়ে গুণ করে এই দুইয়ের যোগফল ভর্তি পরীক্ষায় ১০০-তে প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে যোগ দিয়ে ১২০ নম্বরের মধ্যে মেধাস্কোর নির্ণয় করে তার ক্রমানুসারে মেধা তালিকা তৈরি করা হবে।

শিক্ষার্থীরা কোনো প্রকার ক্যালকুলেটর বা তদ্রূপ কিছু ব্যবহার করতে পারবেন না।   যেসব প্রার্থী উচ্চ মাধ্যমিক অথবা সমমানের পর্যায়ে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, গণিত ও জীববিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন করেছে তারা এসব বিষয়ে পরীক্ষা দেবেন। তবে কোনো পরীক্ষার্থী ইচ্ছা করলে শুধুমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ৪র্থ বিষয়ের পরিবর্তে বাংলা অথবা ইংরেজি যে কোনো একটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে পারবেন। পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয়ে পরীক্ষা দেয়া আবশ্যিক।  

এ-লেভেল পর্যায়ে অধ্যয়নকৃত পরীক্ষার্থীরা পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়নসহ অন্য (গণিত/জীববিজ্ঞান/বাংলা/ইংরেজি বিষয়ের মধ্যে) যে কোনো দুইটি বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে মোট চারটি বিষয় পূর্ণ করবেন।   একজন প্রার্থী যে ৪টি বিষয়ের প্রশ্নের উত্তর দেবেন তার ওপর নির্ভর করবে তিনি কোন বিভাগ/ইনস্টিটিউটে ভর্তি হতে পারবেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২১
এসকেবি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।