ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশি হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষায়তনে অচলাবস্থা নিরসনে আশু পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদকে খোলা চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭ শিক্ষক এ খোলা চিঠি পাঠান।
চিঠিতে শিক্ষকরা বলেন, আমরা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের সদস্যরা বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে থাকি। পেশাগত কর্তব্যবোধে আমাদের সাধ্যানুযায়ী বিভিন্ন ক্যাম্পাসে চলমান ঘটনাগুলোর দিকে আমরা মনোযোগ দিয়ে থাকি। আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করছি যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি নিয়ে মধ্য জানুয়ারি থেকে চলমান অহিংস আন্দোলনকে সরকারি ছাত্র সংগঠন ও পুলিশ বাহিনীর সহিংসতা দিয়ে দমনে ব্যর্থ হয়ে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একের পর এক নিপীড়নমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে যা বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার ইতিহাসে এক কদর্য অধ্যায়ে পরিণত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে শুরু হওয়া একটি ন্যায্য আন্দোলন এই সমস্ত পদক্ষেপের কারণে আজ শাবিপ্রবির নিপীড়িত শিক্ষার্থীদের মরণপণ এক দফা দাবির আন্দোলনে পরিণতে হয়েছে যে উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হবে। নিজের কৃতকর্মে ন্যূনতম শিক্ষকসুলভ মনোভাবের পরিচয় দিতে ব্যর্থ হওয়া এই উপাচার্য শাবিপ্রবির দায়িত্বে থাকবার সমস্ত নৈতিক ও আইনি অধিকার হারিয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক মনে করে এবং তার আশু পদত্যাগ দাবি করছে।
অবিলম্বে গ্রেফতারদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, বিগত দুইদিনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ও খাবারের যোগান নানা কদর্য কৌশলে বন্ধ করে প্রায় ১৫০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অনশনরত ২৮ জন শিক্ষার্থীর জীবনকে এই মহামারির সময়ে এক প্রাণঘাতী পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নৈতিক সমর্থন ও আর্থিক সহায়তা দেয়ার অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শাবিপ্রবির পাঁচজন সাবেক শিক্ষার্থীকে আটক করে এখন আইনি হয়রানি ও নিপীড়নের আওতায় আনা হয়েছে যা বাংলাদেশের সংবিধানে নিশ্চিত মৌলিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং একটি অতীব কদর্য ও সহিংস রাজনৈতিক কৌশল। একইভাবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক তাঁদের স্বজনদের হুমকি ও হয়রানির মত কদর্য কৌশলও আমরা এই শিক্ষার্থীদের উপর প্রয়োগ হতে দেখছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২২
এসকেবি/কেএআর