ঢাকা, সোমবার, ৯ ভাদ্র ১৪৩২, ২৫ আগস্ট ২০২৫, ০১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

নির্বাচন ও ইসি

এনসিপির সঙ্গে বিএনপির বিমাতাসুলভ আচরণ, প্রতিরোধের হুঁশিয়ারি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:১৪, আগস্ট ২৪, ২০২৫
এনসিপির সঙ্গে বিএনপির বিমাতাসুলভ আচরণ, প্রতিরোধের হুঁশিয়ারি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করছে বিএনপি। এই মনোভাব সংস্কার না হলে গণপ্রতিরোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে দলটি।

রোববার (২৪ আগস্ট) নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ এ হুঁশিয়ারি দেন। এর আগে নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের শুনানিতে রুমিন ফারহানার গ্রুপের সঙ্গে মারামারি হয় অপর পক্ষের। এতে এনসিপি নেতা আতাউল্লাহ আহত হন।

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বাংলাদেশের এনসিপি নেতাকর্মীরা প্রত্যন্ত এলাকায়, প্রান্তিক জনপদে যারা রয়েছেন সারাদেশে, তাদের প্রতি বিএনপির যে বিমাতাসুলভ আচরণ সেটির আজকে একটি সিগন্যাল আপনারা পেয়ে গেলেন। আপনাদেরকে সংগঠিত হতে হবে এবং বিএনপির এই যে আগ্রাসী মনোভাব, গুণ্ডাতন্ত্রের যে মনোভাব রয়েছে, গুণ্ডাদের তোষণ এবং পোষণের যে মনোভাব রয়েছে, সেটি থেকে যদি তারা সেটি যদি সংস্কার না করে, তাহলে তাদের গণপ্রতিরোধের মুখোমুখি হতে হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের যেই বস্তুনিষ্ঠ ভূমিকাকে আমরা সবসময় প্রশ্ন করেছি, আমরা বারবার বলে এসেছি অতীত কাঠামোয় বর্তমান যে নির্বাচন কমিশন, পিক অ্যান্ড চুজ ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়েছে। এখানে কমিশনার যারা রয়েছেন, তারা পিক অ্যান্ড চুজ ভিত্তিতে নিয়োজিত হয়েছেন, নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন। আমরা তাদের বস্তুনিষ্ঠ ভূমিকাকে প্রশ্ন করেছি। আজকের যে ন্যক্কারজনক ঘটনাটি পুরো বাংলাদেশ যেটি সাক্ষী হয়েছে, এটি মূলত হচ্ছে আগামী নির্বাচন কেমন হতে পারে এবং সেই নির্বাচনে এই নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা কী হবে এবং আগামী নির্বাচনে বিএনপি কী ভূমিকা রাখবে এবং পুলিশ কী দর্শকের ভূমিকা রাখবে, সেটির আজকে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। আপনারা দেখেছেন কীভাবে বিএনপির একজন নেত্রী বলছেন, আমরা চাইলে এখানে গুণ্ডা নিয়ে আসতে পারতাম অর্থাৎ গুণ্ডার পৃষ্ঠপোষকতা উনারা দিয়ে আসছেন।

হাসনাত বলেন, আমরা দেখছি নির্বাচন কমিশনের বাইরে লাঠিসোটা নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। নির্বাচন কমিশন, প্রধান নির্বাচন কমিশনের অফিসের যদি এই অবস্থা হয় সারা বাংলাদেশে এই বিএনপির যারা রয়েছে, এই গুণ্ডা, গুণ্ডাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে তারা, কীভাবে ভোট কেন্দ্র দখল করবে সেটির আজকে টেস্ট ম্যাচ হয়ে গিয়েছে।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ হাসিনার সময় আমরা বলতে শুনেছি ১০টা হুন্ডা ২০টা গুণ্ডা, নির্বাচন ঠাণ্ডা আর আজকে রুমিন ফারহানা যিনি হাসিনার কাছে ফ্ল্যাটের জন্য আবেদন করেছেন। যিনি হাসিনার পতনে সবচেয়ে বেশি আমার মনে হয় খুব কষ্ট পেয়েছেন। তিনি হচ্ছেন রুমিন ফারহানা। আওয়ামী লীগ থেকেও বেশি আওয়ামী লীগ পণ্য যাদেরকে মনে হয় তাদের মধ্যে রুমিন ফারহানা অন্যতম। উনি সবসময় বলে থাকেন বিগত ১৫ বছর নাকি উনি অনেক ভালো ছিলেন। উনি অবশ্যই ভালো থাকবেন। কারণ, যত ধরনের সুবিধা রয়েছে, সব ধরনের সুবিধা উনি নিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আজকের নির্বাচন কমিশন যে ভূমিকা রেখেছে আমরা সেই ভূমিকাকে সবসময় প্রশ্ন করে এসেছি। আমরা পুলিশকে দেখেছি এখানে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। আমরা দেখলাম পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদেরকে কীভাবে নির্বাচন কমিশনের ঢুকতে বাধা দিয়েছে। আর বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে কীভাবে ফ্রি এক্সিট দিয়েছে। পুলিশ ভাইরা যারা রয়েছেন আপনাদের প্রতি আবেদন জানাবো, দয়া করে ক্ষমতামুখী হওয়ার কোনো প্রয়োজন নাই। আপনারা দেখেছেন নির্বাচনের আগের রাতে যে ওসিরা, যে এসপিরা, যে পুলিশরা টাকা খেয়ে নির্বাচন করে দিয়েছে, তাদের আজকে পরিণতি কি হয়েছে? জনগণের পক্ষে থাকেন জনগণ আপনাদেরকে বাঁচাবে। কোনো রাজনৈতিক দল আপনাদেরকে পারবে না। যদি জনগণ আপনাদের পাশে থাকে তাহলে এই গুণ্ডা, গুণ্ডার রাজনীতি বাংলাদেশে আর থাকতে না। আমরা এই গুণ্ডা, এই গুণ্ডার রাজনীতি আমরা ভারতে পাঠিয়ে দিয়েছি। রুমিন ফারহানা যদি সেটি আবার বাংলাদেশে পুনর্বাসন করতে চায় তাহলে হাসিনা যেখানে আছে তাদেরকেও সেখানে চলে যেতে হবে।

আতাউল্লাহ আহতের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এনসিপি নির্বাচন কমিশনের অভিযোগ দেবে জানিয়ে হাসনাত বলেন, আমরা সেটি পর্যবেক্ষণও করব।

সাংবাদিকদের করা ‘মন্ত্রণালয়ের তো ছাত্র প্রতিনিধিও আছে, তাহলে তারা কী কাজ করছে না?’ এমন প্রশ্নের জবাবে হাসনাত বলেন, এখানে একটা মিস ইনফরমেশন রয়েছে আমি খোঁজ নিয়েছি। ছাত্র প্রতিনিধিদের যে বিষয়টি সেটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ছিল এবং সংস্কার কমিশনে ছিল; আর কোনো মন্ত্রণালয়ে ছাত্র প্রতিনিধি ছিল না এবং এটা একটা কালেক্টিভ প্রোপাগান্ডা।

তিনি অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, উপদেষ্টারা অবশ্যই দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। অবশ্যই না। আমরা স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে নিয়ে কথা বলেছি। আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে নিয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন সময় আমরা কথা বলেছি। আইন উপদেষ্টাকে নিয়ে আমরা কথা বলেছি। উপদেষ্টাদের নামে যেসব অভিযোগ আসছে সে অভিযোগগুলো সেগুলো আমরা বিশ্বাস করতে চাই না। কিন্তু সেগুলো আমাদেরকে আশাহত করে।

ইইউডি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।