ঢাকা, বুধবার, ১১ ভাদ্র ১৪৩২, ২৭ আগস্ট ২০২৫, ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

নির্বাচন ও ইসি

দোহার ও নবাবগঞ্জে পৃথক দুটি আসনের দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:০৬, আগস্ট ২৬, ২০২৫
দোহার ও নবাবগঞ্জে পৃথক দুটি আসনের দাবি

ঢাকা: দোহার ও নবাবগঞ্জ নিয়ে গঠিত ঢাকা-১ আসনটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। অর্থাৎ দুই উপজেলায় দুটি আসন বিন্যাস করার দাবি উঠেছে।

 

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আয়োজিত শুনানিতে অংশ নিয়ে এমন দাবি করেন তারা।

শুনানি শেষে দোহা ও নবাবগঞ্জ সংসদীয় আসন পুনরুদ্ধার কমিটির আহ্বায়ক মো. হুমায়ুন কবীর শুনানি শেষে সাংবাদিকদের বলেন, বিগত সরকারের স্বৈরাচারী ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার অন্যতম হাতিয়ার ছিল ঢাকার আসন ১৩টি থেকে বাড়িয়ে ২০টি করা। ওই সরকারের সব কর্মকাণ্ড ছিল ঢাকা কেন্দ্রিক। বিগত সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক আন্দোলন সংগ্রামে স্বৈরাচার সরকার শুধু ঢাকাকে নিয়ন্ত্রণ করে পুরো দেশ পরিচালনা করতো। তাই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা আবারো কোনো স্বৈরাচারী সরকার চাই কিনা। আগামী দিনে স্বৈরাচার নাকি জনবান্ধব সরকার আসবে তা অনেকাংশেই নির্ভর করছে আপনাদের (কমিশনের) ওপর।

কমিশনের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা যদি আগামীতে স্বৈরাচার সরকার না চান, তাহলে ২০০৮ সালে কমবেশি ১৫০ আসন কাটা ছেঁড়া করা নির্বাচনী সীমানার পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। ঢাকা সিটিতে সোয়াশো কাউন্সিলর, ৮০ জনের মত নারী কাউন্সিলর এবং দুজন মেয়র থাকার পরও এতগুলো আসন কেন প্রয়োজন, তা আমাদের বুঝে আসে না। আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম জুলাই অভ্যুত্থানের পর সব রাজনৈতিক দল মিলে সবার আগে এ দাবিটি তুলবে। ঢাকা সিটি থেকে আসন কেটে আগের মতো মফস্বল এলাকায় আসন বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে আপনাদের অনুরোধ করবেন।  

তিনি বলেন, ২০০৮ সালের আগে বিগত সব নির্বাচনে দোহার উপজেলা নিয়ে ঢাকা-১ ও নবাবগঞ্জ উপজেলা নিয়ে ঢাকা-২ আসন গঠিত ছিল। এ দুই আসনের সিংহভাগ মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী হওয়ার অপরাধে ২০০৮ সালে দুইটি আসনকে একটিতে রূপান্তর করা হয়েছে।  আপনারা জানেন দোহার এবং নবাবগঞ্জ প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। পরিবারের অন্তত একজন সদস্য প্রবাসে থাকেন না, এমন পরিবার পাওয়া দুষ্কর। তাই এই দুই উপজেলার মানুষ পারিবারিকভাবে অভিভাবক শূন্য। বিগত ১৭ বছর আমরা রাজনৈতিকভাবেও অভিভাবক শূন্য রয়েছি। অভিভাবক শূন্য হওয়ার সুযোগে আমাদের এলাকা এখন মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। এছাড়া মারামারি হানাহানি লেগেই থাকে, দেখার কেউ নেই। আপনারা জানেন কিছুদিন আগে হারুন মাস্টার নামে একজন স্কুল শিক্ষক ভোরে যখন হাঁটতে বেরিয়েছেন, কীভাবে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।  

তিনি আরও বলেন, আমাদের এলাকায় উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। আমাদের এলাকা থেকে ঢাকায় আসতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লেগে যায়। আর বাবুবাজার ব্রিজে যদি যানজট হয়, তাহলে ঘণ্টা পাঁচেকের আগে ঢাকা সিটিতে প্রবেশ করার উপায় নেই। দোহারের এক পাশ দিয়ে পুরোটাই পদ্মা নদী। তাই শিল্প কারখানা গড়ে ওঠার উপযুক্ত স্থান হওয়া সত্ত্বেও তা হয়নি। কারণ আমাদের এলাকায় এখনো গ্যাসের লাইন যায়নি, আর শিল্প কারখানা না থাকায় একটু বাতাস এলে, বৃষ্টিতে, গরমকালে বিদ্যুতের দেখা পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়।

দোহা ও নবাবগঞ্জ সংসদীয় আসন পুনরুদ্ধার কমিটির এ আহ্বায়ক বলেন, আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে দোহার এবং ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে নবাবগঞ্জ আলাদা আলাদা স্বতন্ত্র প্রশাসনিক এলাকা। দুই উপজেলা মিলে আয়তন ৪০০ বর্গ কিলোমিটারে উপরে। তাই একজন সংসদ সদস্যের এত বড় এলাকা দেখভাল করা দুষ্কর। তাই দুটি উপজেলায় পূর্বের ন্যায় দুটি আসন বিন্যাস করা প্রয়োজন।  

ইইউডি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।