ঢাকা, সোমবার, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

নির্বাচন ও ইসি

নিবন্ধন পেতে শেষ মুহূর্তে দলগুলোর দৌড়াদৌড়ি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:০৫, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫
নিবন্ধন পেতে শেষ মুহূর্তে দলগুলোর দৌড়াদৌড়ি নির্বাচন ভবন।

নিবন্ধন পেতে শেষ মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) ধরনা দিচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দলগুলো। নতুন করে প্রায় এক ডজন দল ইসির শুনানিতে অংশ নিয়েছে।

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ দলগুলোর শুনানি নেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ দলগুলোর (২২টি) সবগুলোকেই আমরা ডেকেছিলাম। অনেকেই আজ আসেনি। তবে কাল আসতে হবে।

শুনানিতে যেসব দল অংশ নিয়েছে, সেগুলো হলো- বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), আম জনতার দল, নতুন বাংলাদেশ পার্টি (এনবিপি), বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, জাতীয় জনতা পার্টি (ওসমানী), মৌলিক বাংলা, জনতার দল, বাংলাদেশ বেকার সমাজ, জাসদ (শাহজাহান সিরাজ), ফরওয়ার্ড পার্টি, বাংলাদেশের কমিনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি।

অন্যান্যবারের মতো এবারও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দল নিবন্ধনের আবেদন আহ্বান করে ইসি। এতে ১৪৩টি নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন চেয়ে আবেদন করেছিল। প্রথম দফায় কোনো দলই শর্ত পূরণ না করায় সবাইকেই সময় দিয়ে ঘাটতি পূরণ করতে বলেছিল ইসি। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ ৮৪টি দল সাড়া দিলেও অন্যরা সাড়া দেয়নি। ৮৪টি দলের মধ্যে আবার ৬২টি দল ঘাটতি পূরণ করতে তথ্য জমা দিয়েও শর্ত পূরণ করতে পারেনি। তাই বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ ২২টি দলের মাঠ পর্যায়ে তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা চলছে। পর্যালোচনায় দলগুলোর কিছু কিছু তথ্যে ঘাটতি থাকায় কমিশন শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দলগুলোকে ফোন করে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য ডাকে। যার অংশ হিসেবেই তারা এসেছিলেন বলে জানান দলগুলোর নেতারা।

তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে এমন দলগুলো হলো- ফরোয়ার্ড পার্টি, আম জনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), মৌলিক বাংলা, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভোলপমেন্ট পার্টি, জাতীয় জনতা পার্টি, জনতার দল, জনতা পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, ভাসানী জনশক্তি পাটি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-শাহজাহান সিরাজ), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ সলুশন পার্টি ও নতুন বাংলাদেশ পার্টি।

ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, মাঠ পর্যায় থেকে তদন্ত প্রতিবেদন এসেছে। এগুলোর পর্যালোচনার পর চলতি মাসেই নিবন্ধন চূড়ান্ত হতে পারে।

আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন পেতে ইচ্ছুক দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি, এক তৃতীয় জেলা ও ১০০টি উপজেলা কমিটি এবং প্রতিটি কমিটিতে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ থাকতে হয়। এ ছাড়া কোনো দলের কেউ আগে সংসদ সদস্য থাকলে বা আগের নির্বাচনের পাঁচ শতাংশ ভোট পেলেও নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে ধরে থাকে ইসি। এ প্রধান শর্তগুলো ছাড়াও বেশকিছু নিয়মকানুন মেনে আবেদন করতে হয়।

নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় দলগুলোর আবেদন পাওয়ার পর কমিশন প্রথমে এগুলো প্রাথমিক বাছাই করে। এরপর প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ দলগুলোর তথ্যাবলী সরেজমিন তদন্ত শেষে বাছাই সম্পন্ন করা হয়। পরে মনোনীত দলগুলোর বিরুদ্ধে কারো কোনো অভিযোগ থাকলে দাবি-আপত্তি চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সেখানে কোনো আপত্তি এলে শুনানি করে তা নিষ্পত্তি করে কমিশন। আর কোনো আপত্তি না থাকলে সংশ্লিষ্ট দলগুলোকে নিবন্ধন সনদ দেয় সংস্থাটি। নিবন্ধন ছাড়া কোনো দল নিজ প্রতীকে ভোটে প্রার্থী দিতে পারে না।
 
বর্তমানে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫১টি (আওয়ামী লীগসহ)। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। এ পর্যন্ত ৫৫টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও পরে শর্ত পূরণ, শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়। দলগুলো হলো- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা। সস্প্রতি আদালতের আদেশে জামায়াতে ইসলামী ও জাগপা নিবন্ধন ফিরে পেলেও ইসি কেবল জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দিয়েছে।

ইইউডি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।